অস্ট্রেলিয়ার মিশেল পেইন প্রথম মেলবোর্ন কাপ জয়ী মহিলা ঘোড়সাওয়ার

Michelle Payne Wins 2015 Melbourne Cup

মিশেল পেইন ২০১৫ মেলবোর্ন কাপ জয় করেছে (ছবি লেখকের ছবির স্ক্রিনশট)।

মিশেল পেইন সম্মানজনক মেলবোর্ন কাপ বিজেতা প্রথম মহিলা । তার ঘোড়া প্রিন্স অফ পেনজানস, যার প্রতি বাজীর দর ছিল ১০০ অনুপাতে ১ ।

যখন একজন নারী প্রথম মেলবোর্ন কাপ জয় করে তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? দারুন দেখিয়েছেন মিশেল পেইন। সময়ের সেরা একজন।

মেলবোর্ন কাপ অস্ট্রেলিয়ার সেরা এক ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতা, যার বিজয়ীরা ৬ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৪.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) সমমূল্যের পুরস্কার লাভ করে। স্থানীয় প্রতিদিনের গতানুগতিক জীবনে এমনই এক প্রতিযোগিতা জাতিকে স্তব্ধ করে দেয়। এমনকি স্বয়ং মেলবোর্নে এই ঘটনায় সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার বাস করা টুইটার ব্যবহারকারী রেড আন্ডার দি বেডস ছিলেন উচ্ছ্বসিত :

মিশেল পেইনকে অভিনন্দন!!! প্রথম নারী যে মেলবোর্ন কাপ জয় করেছে!!

এই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার পরে, পেইন দ্রুত আবিস্কার করেন তার এই জয় এসেছে পুরুষ উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে, যিনি বলেন, “আমার যত শক্তি ছিল আমি তাই ঢেলে দিয়েছি। কেবল নির্বোধ ওই সমস্ত ব্যক্তিবর্গ বাদে আমি সকলকে বলতে চাই, অনেকে মনে করে মেয়েরা দূর্বল, কিন্তু আমরা এই মাত্র বিশ্বজয় করেছি”,তার কথা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছেঃ

পুরুষ পরাক্রমে যারা বিশ্বাস করে,অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন কাপ জয়ী প্রথম প্রমীলা ঘোড়সওয়ার তাদের বলল গোল্লায় যাও।

মূহূর্তের মধ্যে, পেইন-এর টুইটার অনুসারী এক লাফে বেড়ে ২,০০০ থেকে বেড়ে ১২,০০০-জনে পরিণত হয়, তার এই টুইটার অনুসারীদের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত ছিল ভিক্টোরিয়া প্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিল হেনেসি, যিনি টুইট করেছেন:

আপনার প্রতি এবং আপনাকে সমর্থনের জন্য আমরা এর আগে কখনো এর চেয়ে বেশী গর্ব আর আনন্দ অনুভব করেছি বলে মনে পড়ে না।

এটি ছিল একই সাথে খুব ব্যক্তিগত এক বিষয়, পেইন-এর জন্য এক পারিবারিক মুহূর্ত। তার ভাই স্টিভি, যে কিনা ডাউন সিনড্রোম নামক রোগে আক্রান্ত, সে এই ঘোড়দৌড়ের ঘোড়ার তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত রয়েছে। পেইন ঘোড়দৌড়ের পূর্ব মূহূর্তে ব্যারিয়ার নির্ধারণী (কোন নাম্বার থেকে ঘোড়া দৌড়াবে সে স্থান নির্ধারণী) অনুষ্ঠানে তোলা তার ভাইয়ের ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে:

ব্যারিয়ার ১

বাজ ফিড, ট্রফি হাতে দুজনের ছবি প্রকাশ করেছে:

মিশেল পেইন এবং তার ভাই স্টিভি ,অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতাকে নিজেদের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে।

এই জয় প্রাণী অধিকারকে ছাপিয়ে গেছে, যেমন প্রতিযোগিতায় চাবুকের ব্যবহার এবং তিন বার দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী রেড ক্যাদু নামক ঘোড়ার প্রাণঘাতি আঘাতের মত বিষয়, সর্বশেষ প্রাপ্ত সংবাদ অনুসারে যে পায়ে অস্ত্রোপচারের পর “বেঁচে আছে এবং ভাল আছে” :

যদিও ঘোড় দৌড় বিষয়ে মতামত হচ্ছে এটি একটি ক্রীড়া ‘প্রতিযোগিতা’, আমি মিশেল পেইন এবং তার পরিবারের জন্য জন্য দারুন আনন্দিত। তাকে অপ্রয়োজনে চাবুক চালাতে হয়নি।

জয়ো নর্টন লজেস এই সকল পরস্পর বিরোধী অনুভূতির এক সার সংক্ষেপ তৈরী করেছে :

সেই সমস্ত নারীবাদের জন্য বেশ বিভ্রান্তিকর এক সময় যারা, পশুর প্রতি নিষ্ঠুরতার বিষয়টিকে ঘৃণা করে।

কেউ কেউ আরো একধাপ এগিয়ে গিয়েছে:

কারণ আপনার মাতাল হওয়ার জন্য এবং মাথায় একটি টুপি পড়ার জন্য সত্যি কি ঘোড়ার মৃত্যু বরণ করার প্রয়োজন রয়েছে? এটা একটা কলঙ্ক।

রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলা ঘোড় দৌড় নিয়ে ধারাভাষ্য প্রদান করা জর্জ মাইলসকে অভিনন্দন জানিয়ে ঘোড় দৌড় শুরু হওয়ার আগে পেইন সর্বশেষ টুইটটি করে। সে এমন এক হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে মনে হচ্ছে যা তার জন্য যথাযথ:

ঘোড় দৌড় প্রতিযোগিতার অসাধারণ কাহিনী! কি দারুণ এক ভদ্রলোক এবং এক অসাধারণ ঘোষক!

পেইন-এর এই অসাধারণ অর্জন এলো দু বছর আগে গাই ওয়াটারহাউজের অর্জনের পর, যে গাই ছিল প্রথম প্রমিলা প্রশিক্ষক, যার প্রশিক্ষণে একজন জকি ২০১৩ সালে মেলবোর্ন কাপ বিজয় করেছিল।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .