চলতি মাসের শুরুতে দক্ষিণ সুলাওয়েসি’র হাজার হাজার মানুষ বার্ষিক তোরাজা সাংস্কৃতিক উৎসবে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে তারা ইন্দোনেশিয়ার সব ঐতিহ্যবাহী নাচের মাধ্যমে উৎসবটি উদযাপন করেন।
তোরাজা ইন্দোনেশিয়ার একটি আদিবাসী সম্প্রদায়। এদের বাস পার্বত্যময় দক্ষিণ সুলাওয়েসিতে। এরা প্রতিবছর একটি সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করে। এই উৎসবটিকে তারা আদর করে ডাকে “ভালবাসার তোরাজা” নামে। উৎসবে আদিবাসীদের নাচ-গান পরিবেশন করা হয়। এবছর উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয় রানতেপাও শহরে। নভেম্বরের ৯ তারিখে।
উৎসব শুরু হয় ৫০০ শিক্ষার্থীর একটি সম্মিলিত পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে। তারা মল্লযুদ্ধের নাচ সিসেম্বা এবং পাজেলু পরিবেশন করে। এরপরেই যুদ্ধের নাচ মাটেনটেন পরিবেশন করা হয়। আদিবাসীরা সাধারণত মহিষ বলি দেয়ার ঐতিহ্যবাহী উৎসবে মাটেনটেন নাচ নেচে থাকে। এরপরে মানগারু নাচ পরিবেশন করা হয়। আদিবাসী গোষ্ঠীগুলো তাদের নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই নাচ নেচে থাকে। যোদ্ধাদের নাচ হলো মারানডিং। এই নাচের মাধ্যমে আমন্ত্রিত অতিথিদের স্বাগত জানানো হয়। এই নাচের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো নাচিয়েরা যোদ্ধাদের পোশাক পরেন এবং বৃহৎ আকারের ঢাল-তলোয়ার বহন করেন। এই নাচও উৎসবে পরিবেশিত হয়।
তোরাজা উৎসবের সবচে’ পুরোনো নাচ হলো পাতিরা। এই নাচের মূল বিষয় হলো ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন। নাচের সময়ে বাঁশের তৈরি এক ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এই অস্ত্র দিয়ে শয়তানদের দূরে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
এছাড়াও আরো অনেক নাচ ও গানের পর্ব ছিল। তবে ছয়টি আলবিনো মহিষ নিয়ে শোভাযাত্রা এই উৎসবের আরেকটি অন্যতম দিক ছিল। তোরাজায় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে পশু বলি হিসেবে মহিষকে উৎসর্গ করা হয়ে থাকে। পশু বলি দেয়া হয়ে যাওয়ার পর মহিষের শিং দিয়ে ঘরবাড়ি সাজানো হয়ে থাকে।
এবারের উৎসবে জিম্বাবুয়ে, চিলি, ক্রোয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, মঙ্গোলিয়া এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছাড়াও আরো ১০টি দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া উৎসবে যোগ দিতে তোরাজা অঞ্চলে এসেছিলেন ১১০,০০-এর মতো পর্যটক।
তোরাজা উৎসবের কিছু ছবি রইলো নিচে: