ক্লডিও গুয়ারনিয়েরি এই পোস্টটিতে অবদান রেখেছেন।
হিশাম আলমিরাত পেশায় একজন ডাক্তার এবং গ্লোবাল ভয়েসেসের দীর্ঘ সময়কার কমিউনিটি নেতা। তিনি এই সপ্তাহে মরক্কোতে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন “রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলার” অভিযোগে।
আলমিরাতের সাথে সাথে অভিযুক্ত হচ্ছেন মরক্কোর সুশীল সমাজের আরও চার সক্রিয় কর্মী- ইতিহাসবিদ মাতি মঞ্জিব, সাংবাদিক সামাদ আয়াচ ও মোহাম্মদ এলসাবর, এবং মুক্ত মত প্রকাশে সক্রিয় হিসাম মানসুরি। মুক্ত মত প্রকাশের সমর্থনকারীরা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের অধিকার নিয়ে কাজ করা কর্মীরা মোটামুটি একমত যে মরক্কোর সরকারের নীতি ও কার্যকলাপের যারা সমালোচনা করে তাদের থামানোর এটি একটি প্রচেষ্টা।
আলমিরাতের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে রয়েছে “আমার উপরে তাদের নজর” নামে মরক্কোতে প্রযুক্তিগত নজরদারির উপর একটি গবেষণা প্রতিবেদনের জন্যে কাজ করা। তিনি ২০০৯ সাল থেকে গ্লোবাল ভয়েসেস এর জন্য লিখছেন এবং ২০১২-২০১৪ পর্যন্ত এই কমিউনিটির এডভোকেসি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। উক্ত প্রতিবেদন লন্ডন ভিত্তিক এনজিও প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনাল এবং আলমিরাতের সহায়তায় গঠিত মরক্কোর শুধী সমাজের একটি সংগঠন এসোসিয়েশন দো দ্রোয়া নুমেরিক (এসোসিয়েশন ফর ডিজিটাল রাইটস) এর সহযোগিতায় প্রকাশিত হয়।
এ বছর সেপ্টেম্বরে আলমিরাত ও তার সহকর্মী কারিমা নাদিরকে মরোক্কোর জুডিশিয়াল পুলিশ (বিএনপিজি) কাসাব্লাংকা শহরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ এবং প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনালের সাথে তাদের সম্পর্ক নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তারপর মরক্কো অনলাইন নজরদারির উপর করা উপরোক্ত প্রতিবেদন বিষয়ে একটি বিচার বিভাগীয় অভিযোগ দায়ের করেন।
আলমিরাত মরক্কোর সুশীল সমাজের একজন হিসাবে এবং একজন পেশাজীবী চিকিৎসক হিসেবে মরক্কোবাসির দেখভাল এবং জীবন উন্নত করার জন্য কাজে তার প্রাপ্তবয়স্ক জীবনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছেন। রাতে চিকিৎসাবিজ্ঞান অধ্যয়ন ও দিনে একটি আপৎকালীন কক্ষ চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার ফাঁকে আলমিরাত তার নিজের ব্লগে এবং গ্লোবাল ভয়েসেস এর জন্য লিখেছেন। এ ছাড়াও তিনি নাগরিক মিডিয়া প্রকল্প টক মরক্কো ও মামকাফিঞ্চ গঠন ও পরিচালনায় সহায়তা করেছেন। বিশেষ করে মামকাফিঞ্চ প্রকল্পটি আলমিরাত কতিপয় মানবাধিকার কর্মীর একটি গ্রুপ এর সাহায্যে গঠন করেন যা ২০১১-১২ সালে সামাজিক বিপ্লবের সময় মিডিয়া কাভারেজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং এই প্রতিবাদ আন্দোলনের জন্যে জনমত গঠনে সাহায্য করে।
সেই সময় আলমিরাত এবং তার মামকাফিঞ্চ এর সহকর্মীরা তাদের কম্পিউটার সিস্টেমে সারভেইলেন্স সফটওয়ার এর উপস্থিতি টের পায় এবং সন্দেহ করে যে তাদের গতিবিধি ও অনলাইন যোগাযোগ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিটিজেন ল্যাবে এ বিষয়ে গবেষণা করে তা নিশ্চিত করা গেছে। গত জুলাইতে ইতালি ভিত্তিক নজরদারি সফটওয়্যার কোম্পানি হ্যাকিং টিম এর ফাইল থেকে তথ্য ফাঁসের পর দেখা যায় যে মরক্কোর সরকারী সংস্থা কন্সেই সুপিরিওর দো লা ডিফেন্স ন্যাশনাল ২০১২ সালে হ্যাকিং টিম সফটওয়্যার ক্রয় করেছেন।
আলমিরাত তার দেশের একটি শক্তসমর্থ মিডিয়া পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছিলেন এবং মুক্ত মত প্রকাশের এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান সমুন্নত রাখার জন্যে তার সরকারের ওয়াদার জবাবদিহিতার ব্যপারে কথা বলেছেন।
গ্লোবাল ভয়েসেস সম্প্রদায় হিশামের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অবস্থান নিয়েছে এবং সারা বিশ্বের পাঠকদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সমর্থনে মত প্রকাশের জন্যে এবং এখানে ওখানে পাওয়া যাওয়া তার গল্প/রিপোর্ট পড়া ও শেয়ার করার জন্যে। খুব শীঘ্রই আমরা এই মামলা সম্পর্কে আরো তথ্য প্রকাশ করব এবং তার সমর্থনে একটি উন্মুক্ত বিবৃতি প্রকাশ করব।