ভোজনরসিক এক জাপানি তরুণীর গল্প, খাবার খেয়েই দুনিয়াব্যাপী পরিচিতি

তার নাম ইয়োকা কিনোশিতা। জাতে জাপানি। ভোজনরসিক হিসেবে ইতোমধ্যে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। একবার খেতে বসলে এক হাঁড়ি খাবার শেষ করা ছাড়া যেন তৃপ্তিই মেটে না! ভাবছেন, এত বেশি খায় যখন, শরীরে না জানি কত রোগ বাসা বেঁধেছে! না, তাও নয়। কিনোশিতা দিব্যি সুস্থ, সবল আছেন।

কিনোশিতা নিজেকে পেশাদার খাদক হিসেবেই পরিচয় দিতে ভালোবাসেন। নিজের খাদকগিরির পরিচয় সবার কাছে তুলে ধরতে ইউটিউবে একটি চ্যানেলও খুলেছেন। সেখানে তার জীবনবৃত্তান্ত থেকে জানা যাচ্ছে, তিনি বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের খাবার প্রতিযোগিতার প্রচারণা কাজে অংশ নেন। আর এ থেকে জীবিকা নির্বাহের অর্থের একটি অংশ আসে।

ইউটিউব এবং টুইটারে তার ভক্তের সংখ্যা কম নয়। আর তাদের জন্য তিনি প্রতিদিনই খাওয়া-দাওয়ার ভিডিও আপলোড করে থাকেন। ভিডিওগুলোতে কত কম সময়ে অধিক পরিমাণ খাবার খেতে পারেন, সেটাই তুলে ধরেন তিনি।

উদাহরণ হিসেবে কিনোশিতা’র বিফস্টেক বোলের ভিডিওটির কথা বলা যায়। এতে খাবারের পরিমাণ ছিল ৭ পাউন্ড। আর খাদ্যশক্তির বিবেচনায় ৬,৬২৫ ক্যালরি। ভিডিওতে খাওয়ার দৃশ্যের পাশাপাশি রান্নার করার টিউটোরিয়ালও দিয়েছেন তিনি।

অন্য একটি ভিডিওতে কিনোশিতাকে ম্যাকডোনাল্ডের বিগ ম্যাক স্যান্ডুউইচ খেতে দেখা যায়। যার ওজন ছিল সাত পাউন্ড। সেটি রাইস কুকারে ভাতের সাথে দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।

তবে কিনোশিতা’র সবচে’ বেশি খাওয়ার রেকর্ড অবশ্য অন্যটি। একবার তিনি বাচ্চাদের জন্য তৈরি করা হয় এমন একটি ঐতিহ্যবাহী খাবারের পদ খেয়েছিলেন। খাদ্য শক্তির দিকে দিয়ে সেটি ছিল ২৩ হাজার ক্যালরির।  

কিনোশিতা আরো অনেক খাবারে ছবি শেয়ার করেছেন। এর বেশিরভাগ ভিডিও-ই অতিথিদের সম্মানে, তাদের খুশি করার জন্য।

কিন্তু কথা হলো কিনোশিতা এই যে এত এত খাবার খান, তা কীভাবে সম্ভব?

গত বছরের শেষের দিকে কিনোশিতা ইউটিউবে একটি প্রশ্ন-উত্তরের ভিডিও আপলোড করেছেন। সেখানে এত বেশি পরিমাণ খাবার খেতে পারার পিছনে তার শারীরিক কাঠামোকে (অ্যানাটমি) কর্তৃত্ব দিয়েছেন:

একবার আমি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ডাক্তারের কাছে গেলাম। সবকিছু দেখে ডাক্তার বলবেন, আমার পাকস্থলী তুলনাহীন… আমি আমার পেট বড় করতে পারি। তাছাড়া আমার শরীরের ভিতরের সব শূন্য স্থানও ভরে ফেলতে পারি। এ কারণেই আমি এত বেশি খেতে পারি।

কিনোশিতা পাকস্থলীর পাশাপাশি তার শরীরকেও সাধুবাদ দিয়েছেন। কারণ, এত খেলেও তার শরীরের ওজন বাড়ে না। “আমার শরীর একই হারে হজম করতে পারে না… এদেরকে শুধু পার করে দেয়।“

হাসপাতালে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করছেন এমন একটি ভিডিও রয়েছে তার ইউটিউব চ্যানেলে। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি সব ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করছেন। তার স্বাস্থ্য ভালো আছে বলে তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন।

খাদক হিসেবে পেশাগত দক্ষতা আর খ্যাতি থাকা সত্ত্বেও, তিনি একে খুব সিরিয়াসভাবে নেননি:

ছবি শিরোনাম: আকাইম্যা তরুণী।

খাওয়ার ছবি দেখিয়ে কিনোশিতা বিপুল পরিমাণ ভক্ত জুটিয়ে নিয়েছেন। ইউটিউবে তার চ্যানেল সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ৪ লাখ ৬০ হাজারের উপরে। আর টুইটারে তার অনুসরণকারীর সংখ্যা ৬৯ হাজারের কাছাকাছি। অ্যাফেক্স নামে একজন ইউটিউব ব্যবহারকারী কিনোশিতা’র সাম্প্রতিক ভিডিওগুলো ইংরেজিতে অনুবাদ করে দিয়েছেন। এতে করে সারাবিশ্বের নেট ব্যবহারকারীরা তার ভক্ত হতে পারছেন।

ভক্তরা কাজের পাশাপাশি টুইটারে মজাদার সুন্দর ছবি পোস্ট করার জন্য তার তুমুল প্রশংসা করেছেন।

ইয়োকা! আমার খুব খিদে পেয়েছে! সুন্দর সুন্দর খাবারের ছবি আরো চাই। m(。≧Д≦。)m

ケージェイ – প্রশ্ন: এখানে কি তোমার প্রেমিক আছে? উত্তর: না, তাহলে মোচিকো এখানে আছে। ইয়োকা: আমার কাপড়চোপড় দেখতে তরমুজের মতো। খুব সুন্দর, তাই না! (* ¨̮*)/(*¨̮ *)/ ♡

অ্যাফেক্স, যার কথা না বললেই নয়। সে আমার ভিডিওগুলোর ইংরেজি সাবটাইটেল করে দিয়েছে। আর এখন টুইটার ব্যবহারকারী কে-জয় আমার জন্য এই ছবি এঁকে পাঠিয়েছে!

আমার চারপাশে এত চমৎকার সব বন্ধু আর দর্শক আছেন যে, আমার খুশি না থেকে কোনো উপায় থাকে না।

ওগুই নামে জাপানের একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে কিনোশিতা অংশ নিয়েছেন। অনুষ্ঠানে তিনি জাপানের বিভিন্ন শহরের খাবারের দোকানগুলোতে গিয়ে সেখানকার জনপ্রিয় ডিশগুলো খেয়ে সে বিষয়ে নিজের মতামত দেন।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .