
কেভিন রথরক কর্তৃক ছবিটি সম্পাদিত।
আজকে (১লা জুন) সকালে ক্রেমলিনের মাধ্যম নজরদারী সংস্থা রসকমনেদজর দাবী করেছে যে তারা টুইটারকে চাপ প্রদান করে ‘৩২টি লিঙ্ক মুছে ফেলতে’ সফল হয়েছে যেগুলো রাশিয়ার আইন লঙ্ঘন করেছে। রসকমনেদজর আরও বলেছে যে আরও দীর্ঘ একটি ‘দায় তালিকা'র বিষয়ে টুইটারের সাথে তাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
রুশীয় সেন্সরের পক্ষ থেকে টুইটারকে হিসেব মোচনের অনুরোধ বাস্তবায়নে প্ররোচিত করতে পারার দাবী এই প্রথমবার নয়। বিগত দিনের মতোই ‘৩২টি লিঙ্ক মুছে ফেলা’ বিষয়ক মস্কোর আজকের দাবী অশুদ্ধ এবং কিছুটা বিভ্রান্তিকর।
গুগল, ভিমিও, এবং রেডিটসহ টুইটার হলো শুধুমাত্র ৪টি ইন্টারনেট কোম্পনী যারা কার্যকরী করা হিসেব মোচন নির্দেশগুলো স্বচ্ছতা বজায় রাখার লক্ষ্যে ইলেক্ট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশন ও বেশ কয়েকটি আইন বিদ্যালয়ের সৃষ্ট একটি প্রকল্প চিলিং এফেক্ট ক্লিয়ারিংহাউস-এ প্রকাশ করে থাকে। সেই তথ্যভাণ্ডার অনুসারে টুইটার ২০১৫ সালের ২৭শে মে তারিখে রসকমনেদজর-এর কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছে যার মাধ্যমে তাদেরকে কয়েকটি ব্যক্তিগত টুইট এবং পুরো টুইটার হিসেবসহ ৫৩টি ভিন্ন ভিন্ন হাইপারলিঙ্ক বন্ধ করে দেবার অনুরোধ জানানো হয়।
রসকমনেদজর অনুরোধে ৩২টি টুইট-এর উপর তাদের সুপরিচিত দেশভিত্তিক-বিষয়বস্তু-রুদ্ধকরণ হাতিয়ারটি প্রয়োগ করার মাধ্যমে হিসেব বিন্যাসের কারণে যাদেরকে রাশিয়ার মধ্যে অবস্থিত দেখা যায় তাদের কাছে এগুলোকে অদৃশ্য করে দিয়ে টুইটার ঠিকই সাড়া দিয়েছে। (এই বিন্যাস পরিবর্তন করা খুবই সাধারণ একটি প্রক্রিয়া।)
এই টুইটটি রাশিয়া-নিবন্ধিত টুইটার ব্যবহারকারীদের কাছে রুদ্ধ হয়ে আছে:
https://t.co/JSDtBisPJj pic.twitter.com/ZIfimn9yUx
— Россия, вставай! (@WakeUpR) December 20, 2014
১৫ই জানুয়ারী ২০১৫। মানেত্জ চত্বর। আমরা [নাভালনি-এর] রায় আলোচনা করবো।
এই টুইটটি নয়:
Мероприятие собирались посетить уже 12 000, а приглашены 58 000. pic.twitter.com/95Vz9O0Jk7
— Рустем Адагамов (@adagamov) December 20, 2014
এই অনুষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই ১২,০০০ সাড়া প্রদানকারীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এবং আরও ৫৮,০০০ আমন্ত্রিত হয়েছে।
রসকমনেদজর-এর ২১টি অনুরোধের উপর টুইটার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, যেগুলোর মধ্যে আছে সম্পূর্ণ টুইটার হিসেব লক্ষ্য করে ১১টি মুছে ফেলার অনুরোধ। এই লিঙ্কগুলোর কয়েকটি রুশীয় সেন্সর আটকে দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যার মধ্যে আছে পরিববেশবাদী কর্মী ইয়েভগেনিয়া চিরিকোভার হিসেব, জনপ্রিয় ইউরোময়দান (ইউরো চত্বর) হিসেব, এবং অন্যান্য। এছাড়াও আলোকচিত্রকর রুস্তেম আদাগামভ ও উদার গণমাধ্যম মোঘল আলেক্সান্ডার ভিনোকুরভ-এর মতো বিশিষ্ট বিরোধী ব্যক্তিত্বের কয়েকটি টুইটে রুশীয়দের প্রবেশাধিকার রুদ্ধ করে দিতে অপারগতা জানিয়েছে।
টুইটারের সাথে রসকমনেদজর সর্বশেষ সমস্যাটি গত বছরের শেষের দিকে ফেসবুকের সাথে একটি বিরোধের উপর ভিত্তি করে তৈরী হয়।
২০১৪ সালের ২০শে ডিসেম্বরে ফেসবুক লজ্জাকরভাবে ২০১৫ সালের ১৫ই জানুয়ারীতে ক্রেমলিনের বাইরে রাজনৈতিক বন্দী এ্যালেক্সি নাভালনি উপর নিবেদিত একটি সমাবেশের অনুষ্ঠান পাতায় রুশীয়দের প্রবেশাধিকার রুদ্ধ করতে সম্মত হয়। ফেসবুক কখনওই এই পদক্ষেপ সম্পর্কে কোন স্বীকারোক্তি করেনি, কিন্তু তারা পরবর্তীতে ঐ অনুষ্ঠান পাতার প্রতিস্থাপিত পাতাগুলো রুদ্ধ করতে অপারগতা প্রকাশ করে, যে পাতাগুলো খুব শীঘ্রই মূল অনুষ্ঠানটি যত সাড়া পেয়েছিল তার থেকে বেশী সাড়া পেতে শুরু করলো। অবশেষে, দু'সপ্তাহ আগেই নাভালনির রায় প্রদান করা হলো এবং তাকে (কিন্তু তার ভাইকে না) কারাভোগ করা থেকে অব্যহতি দেয়া হলো, যার ফলে ১৫ই জানুয়ারীর বিক্ষোভ প্রদর্শন করার আর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলো না।
রসকমনেদজর-এর করা ব্যক্তিগত পোষ্ট আটকের অনুরোধের দু'টো বাদে সবগুলোই ১৫ই জানুয়ারী বিক্ষোভের বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত টুইট ছিল–যে সমাবেশটি কখনো আয়োজিতই হয় নি। তাদের দেশভিত্তিক-বিষয়বস্তু-রুদ্ধকরণ হাতিয়ারটি ব্যবহার করে টুইটার এগুলোর মধ্যে থেকে ৩০টি টুইট আটকে দিয়েছে, যদিও এরা–কোন পরিস্কার প্রতিমান ছাড়াই–প্রায় একই জাতীয় অন্য আরও কয়েকটি আটক করার অপারগতা প্রকাশ করে। (ওকসানা ভিওলভা নামের এক নারীর করা দু'টো টুইট ‘রুদ্ধ’ করতে টুইটার সম্মত হয়েছিল, যে ২০১৪ সালে একদল উত্তর ককেশীয়দের হাতে একজন জাতিগত রুশীয় ব্যক্তির হত্যার বিরুদ্ধে জানুয়ারী মাসের শেষের দিকে একটি জাতিয়তাবাদী প্রতিবাদ পালন করতে মিনেরালনিয়ে ভোডি শহরের বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল।)
উল্লেখিত অনুষ্ঠানগুলো হয়ে যাবার প্রায় ৫মাস পর রুশীয় সেন্সর থেকে এই সব হিসেব মুছে ফেলার অনুরোধ করা হয়েছে।