
কারারুদ্ধ সাংবাদিক ইদোম কাসায়ের সঙ্গে মাহলেট ফান্তাহুন (ডান থেকে দ্বিতীয়) দাঁড়িয়ে আছেন।
গ্রেফতার হবার পূর্বে ইথিওপিয়ান ব্লগার মাহলেট ফান্তাহুন ইথিওপিয়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একজন তথ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছিলেন। মাহলেট জোননাইন নামে পরিচিত সমষ্টিগত ব্লগিং দলের একজন সদস্য। আদ্দিস আবাবায় অবস্থিত কালিটি নামের একটি ইথিওপিয়ান রাষ্ট্রীয় কারাগারের আট অঞ্চলের অনুকরণে দলটি তাদের নিজেদের নামকরণ করেছে। সেই “প্রবাদতুল্য কারাগার, যেখানে সব ইথিওপিয়ানর বাস করে” অনুযায়ী ব্লগাররা তাদের প্রকল্পের নামকরণ করেছেন “জোননাইন”।
মাহলেট ফান্তাহুন এবং তার গ্রুপ জোননাইন এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ আমি এই ব্লগ পোস্ট লিখেছি।

মাহলেট ফান্তাহুনের একটি ছবি এঁকেছেন মেলোডি সান্ডবারগ
আমি কখনও ইথিওপিয়ায় যাইনি। তবে আমি পূর্ব আফ্রিকায় কয়েক বছর কাটিয়েছি। তাই মাহলেটের দৈনন্দিন জীবন এবং তিনি যেসব ঝুঁকি নিয়েছেন যেগুলো যে সেখানে আমার বাস করা জীবন থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, সে সব ব্যাপারে আমি খুব সচেতন। যেকোন ধরণের ফলাফল সত্ত্বেও, মাহলেটের মত মানুষ, যারা এই এই ঝুঁকি নিয়েছেন, তাঁদের প্রতি জানাই আমার গভীর শ্রদ্ধা।
আমি জানি না, ইথিওপিয়ান কারাগারে অনেক দিন কাটাতে কেমন লাগবে? শুধু আমি কল্পনা করতে পারি, কিছু দিন অন্যদের চেয়ে খারাপ হবে। তবে আমি এটাও কল্পনা করতে পারি যে সবচেয়ে কঠিন অংশ হল আপনি সেখানে ঠিক কতদিন কাটাতে যাচ্ছেন তা স্পষ্ট না হওয়া। আরেকটি জঘন্য বিষয় আমি কল্পনা করতে পারি, আর তা হচ্ছে, যখন আপনি আপনার পরিবার এবং বন্ধুদের কথা ভাববেন, যারা আপনার স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যতের জন্য চিন্তিত। আইনি ব্যবস্থা নিয়ে হতাশার ব্যাপারটাও আমি ধারণা করতে পারি। একটি সম্প্রদায়ের জন্য সম্পদ হতে পারে এমন কিছু করার জন্য কারারুদ্ধ হওয়ার হতাশা: সামাজিক প্রবৃত্তি এবং আপনার দেশের ভবিষ্যতের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করা।
গত এপ্রিলের শেষ দিকে, আমি কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল মিডিয়া ফ্রিডম সম্মেলনে অংশ নিই। সেখানে সারা বিশ্ব থেকে ১০০ জনেরও বেশি সাংবাদিক ও মিডিয়া কর্মী যোগ দেন। সেখানে একটি প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি ঘটছিল:
Solidarity is word that keeps recurring at #mediafreedom2015 as vital to sustaining independent media. What does that look like in practice?
— Jodie Ginsberg (@jodieginsberg) April 30, 2015
স্বাধীন মিডিয়াকে টেকসই করার আবশ্যক হিসাবে #মিডিয়াফ্রিডম২০১৫ সম্মেলনে ‘সংহতি’ শব্দটি বারবার ঘুরেফিরে আলোচনায় এসেছে। কিন্তু এটি বাস্তবায়নের প্রকৃত চিত্র কেমন?
প্রশ্নটির উত্তর ছিল না, অন্তত বিশদভাবে তো নয়ই। কিন্তু কোপেনহেগেনের সম্মেলন চলাকালীন গ্লোবাল ভয়েসেসের একজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ইথিওপিয়ায় বর্তমানে কি ঘটছে সে সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশে তাঁরা কিভাবে কাজ করছেন। কিভাবে সংহতি বজায় রেখে কাজ করতে হয়। আপনি সব সময়ই কিছু না কিছু করতে পারেনই।
শুধুমাত্র একটি ব্লগ পোস্ট লিখে মাহলেট ও অন্যান্য কারারুদ্ধ ব্লগারদের আমরা কারাগার থেকে বের করে আনতে পারব না। এর মাধ্যমে বরং আমরা গল্পটিকে আলোচনায় রাখতে পারব। সেগুলো নীরব থাকবে না।
জোননাইন ব্লগারদের কাজ হচ্ছে মূলত কোন কিছুর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং দায়িত্ব গ্রহণ করা। কোন ব্যক্তি স্বার্থের জন্য নয়, বরং ইথিওপিয়ার সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য এই কার্যক্রম। এটা হচ্ছে গঠনমূলক সামাজিক পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাওয়া।
এই মুহূর্তে আমি মাহলেট ও জোননাইন দলের অন্যান্যদের শুধু জানাতে চাই, আপনারা একা নন।