
বাহরাইনি সক্রিয় কর্মী মরিয়ম আল-খাজাকে দেশে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে – এবং তিনি বিমানবন্দরে অনশন কর্মসূচিতে রয়েছেন। ছবিঃ জুলিয়া রেইনহার্ট। কপিরাইটঃ ডেমোটিক্স।
নেতৃস্থানীয় মানবাধিকার কর্মী মরিয়ম আল-খাজা একজন বাহরাইনি নাগরিক এবং উপসাগরীয় মানবাধিকার কেন্দ্রের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তাকে আজ [৩০ আগস্ট, ২০১৪] তাঁর দেশে প্রবেশ করতে দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।
সংস্থাটির দেয়া তথ্য মতে, তিনি তাঁর বাবা প্রসিদ্ধ মানবাধিকার সক্রিয় কর্মী আব্দুলহাদি আল-খাজার সাথে দেখা করতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন এবং অনশন পালনের ষষ্ঠ দিন অতিবাহিত করছেন। সরকার পতনের কঠোর আন্দোলনের সময়ে তাঁর বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ আন্দোলনের পরেই গণতন্ত্রের পক্ষে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১১ তারিখে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়। এ প্রতিবাদ বাহরাইনে ঝড় বইয়ে দিয়েছে। তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। এটি তাঁর দ্বিতীয় অনশন। তাঁর প্রথম অনশন কার্যক্রম ১১০ দিন স্থায়ী হয়েছিল। সে সময় কর্তৃপক্ষ তাকে জোর করে খাইয়ে তাঁর অনশন ভঙ্গ করে।
অজ্ঞাত অভিযোগে মরিয়ম আল-খাজাকে কর্তৃপক্ষ শাস্তি প্রদান এবং তাঁর ড্যানিশ পাসপোর্ট (তাঁর ডেনমার্ক এবং বাহরাইন উভয় দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে) বাজেয়াপ্ত করে নেয়ার পর তিনি টুইটারে ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি আমরণ অনশন শুরু করতে যাচ্ছেনঃ
I'm being detained in airport. Telling me I don't have Bahraini citizenship. I'm asking for proof.
— Maryam Alkhawaja (@MARYAMALKHAWAJA) August 29, 2014
আমাকে বিমানবন্দরে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। আমাকে বলা হয়েছে, আমার বাহরাইনি নাগরিকত্ব নেই। আমি এর প্রমাণ চাই।
I'm denied entry. I'm starting a water-only hunger strike. I won't voluntarily leave. My only demand is to be let into my country. #Bahrain
— Maryam Alkhawaja (@MARYAMALKHAWAJA) August 29, 2014
আমাকে দেশে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র পানি পান করে আমি আমার আমরণ অনশন শুরু করেছি। আমি স্বেচ্ছায় অনশন ভাঙবো না। আমার একমাত্র দাবি আমাকে আমার দেশে ঢুকতে দেয়া হোক। #বাহরাইন
Tomorrow, I will be taken to court in #Bahrain on unknown charges. I'm being held at the airport until then.
— Maryam Alkhawaja (@MARYAMALKHAWAJA) August 30, 2014
আমার বিরুদ্ধে আনা অজ্ঞাত অভিযোগে আগামীকাল আমাকে #বাহরাইনের আদালতে নেয়া হবে। তাঁর আগ পর্যন্ত আমাকে বিমানবন্দরেই রাখা হবে।
৩১ আগস্ট তারিখে তাঁর বিচার কাজ শুরু করা হবে। আল-খাজা পরিবারের খুব ঘনিষ্ঠ কেউ তাঁর টুইটার একাউন্টটি এখন থেকে আপডেট করবেনঃ
To clarify: this account is temporarily being run by someone close to the Al-Khawaja family.
— Maryam Alkhawaja (@MARYAMALKHAWAJA) August 30, 2014
পরিস্কার করা হচ্ছেঃ আল-খাজা পরিবারের খুব ঘনিষ্ঠ কেউ একজন সাময়িকভাবে তাঁর একাউন্টটি পরিচালনা করবেন।
এই পোস্টটি লেখার সময়ে তাঁর একাউন্টে সর্বশেষ যে কথাগুলো লেখা হয়েছে তা অনেকটা এরকমঃ
Maryam called her family. She is being taken to the public prosecution now.
— Maryam Alkhawaja (@MARYAMALKHAWAJA) August 30, 2014
মরিয়ম তাঁর পরিবারকে ডেকেছেন। তাকে এখন পাবলিক প্রসিকিউশনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এটা স্পষ্ট নয় যে মরিয়ম আল-খাজা কখন কারাগারে টুইট করা বন্ধ করেছেন। তবে উপসাগরীয় মানবাধিকার কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে তাঁর আমরণ অনশনের খবর নিশ্চিত করা হয়েছেঃ
মরিয়ম আল-খাজা লক্ষ করেছেন, দেশের বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর থেকেই বাহরাইনের কর্তৃপক্ষ তাঁর অধিকার লঙ্ঘন করছেন। তাই তিনি ঘোষণা দিয়েছেনঃ
“আমি শুধু পানি পান করে আমরণ অনশন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর বাহরাইনি বিমানবন্দর ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছি। আমি ততক্ষন পর্যন্ত আমার অনশন চালিয়ে যাবো যতক্ষণ না আমাকে বাহরাইনে প্রবেশ করে আমার বাবার সাথে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে। আমি একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই যে অনশন চলাকালীন সময়ে আমি কোন ধরনের খাবার বা চিকিৎসা গ্রহণ করব না।”
জিসিএইচআরের প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মরিয়ম আল-খাজা স্বেচ্ছায় বাহরাইন ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ জোর দিয়ে বলছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন পরিষ্কারভাবে লঙ্ঘনের দায়ে তারা তাকে নির্বাসিত করবেন। মরিয়ম আল-খাজাকে তাঁর দেশ বাহরাইনে ঢুকতে না দেয়া এবং বাহরাইন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আটক রাখা উভয় বিষয়েই জিসিএইচআর নিন্দা প্রকাশ করেছে। জিসিএইচআর বিশ্বাস করে যে বাহরাইন সরকার মানবাধিকার রক্ষকদের লক্ষ্য করে যে দমন পীড়নের ধারা কার্যকর করছে, এ ঘটনাটি তারই একটি অংশ।
আল-খাজাকে আগামী কাল [৩১ আগস্ট] আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রসিদ্ধ বাহরাইনি মানবাধিকার সক্রিয় কর্মী নাবিল রজব এ বিষয়ে ড্যানিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্টিন লিডেগার্ডকে সজাগ করেছেনঃ
.@martinlidegaard Fears for HRD Maryam Al Khawaja who landed in #Bahrain last night, was immediately detained & faces court tmrw. #Denmark
— Nabeel Rajab (@NABEELRAJAB) August 30, 2014
.@মার্টিনলিডেগার্ড গতরাতে #বাহরাইনে পৌঁছানো এইচআরডি মরিয়ম আল-খাজার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাকে তাৎক্ষনিকভাবে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে এবং আগামীকাল আদালতে হাজির করা হবে। #ডেনমার্ক।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এডভোকেসি পরিচালক এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পরিচালক লোটে লেইচ আল-খাজার জন্য ডেনমার্কের কাছে সহযোগীতা চেয়েছেনঃ
Is #Denmark@martinlidegaard assisting @MARYAMALKHAWAJA who is detained in #Bahrain airport & reportedly will be taken to court tomorrow?
— Lotte Leicht (@LotteLeicht1) August 30, 2014
#ডেনমার্কের @মার্টিনলিডেগার্ড কি #বাহরাইন বিমানবন্দরে শাস্তি প্রাপ্ত এবং আগামীকাল এ কারণে আদালতে যাকে হাজির করা হবে, সেই @মরিয়মআলখাজাকে সহযোগীতা করছেন?
আল-খাজাকে বাহরাইনে প্রবেশে বাঁধা দেয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত বছর কোপেনহেগেন থেকে মানামা গামী একটি ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে তাকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ চড়তে দেয়নি। বৃহত্তর পরিসরে নাগরিক এবং রাজনৈতিক অধিকারের দাবিতে ২০১১ সালের জনপ্রিয় গনজাগরণের সময় থেকে সরকার সহিংসভাবে রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এসব দমন পীড়নের মধ্যে আছে অনলাইন বিভিন্ন কার্যক্রমের মনিটরিং করা, বিনা বিচারে শাস্তি প্রদান, অত্যাচার এবং বিভিন্ন বাহরাইনি ব্যক্তির কাছ থেকে তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া।