মিশরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে উৎখাতের এক বছর পার হয়েছে। নতুন শাসক গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই ক্রমহ্রাসমান মানবাধিকার পরিস্থির কারণে বেশ সমালোচনার শিকার হয়েছে, যার মধ্যে একটি বড় অংশ হচ্ছে নির্বিচারে গ্রেপ্তার।
বিশেষকরে, মিশরের নতুন সমাবেশ আইন জনগণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। আলা আবেদ এল ফাত্তাহ এর মতো কিছু জনপ্রিয় সক্রিয়কর্মীর মতো অনেকেই এই আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর চেষ্টা করছেন, যারা আটকের শিকার হয়েছেন। অনুমতি ছাড়া একটি প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজনের অপরাধে এল ফাত্তাহকে গত মাসে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মুসলমানদের রোজা রাখার পবিত্র মাস রমজানের শুরুতে পুলিশ জোর করে একটি বাড়িতে অভিযান চালায়, যেখানে ১১ জন যুবকের একটি দল সেহেরি পার্টিতে (দিনের রোজার শুরুতে মুসলমানদের রাতের শেষ খাবার) যোগ দিয়েছিল। দৃশ্যত কিছু ফটকা হিসাবে জমায়েত আইন লঙ্ঘনের জন্য পুলিশ ঐ অভিযান চালায়। নেটিজেনরা #معتقلي _ السحور [আরবী ভাষায়] এই হ্যাশট্যাগের ব্যবহার শুরু করেছেন, যার অর্থ দাঁড়ায় বন্দীদের সেহেরি করতে দিন।
আহমদ আবেদ আল্লাহ তার ফেসবুক দেয়ালে নিম্নলিখিত পোস্ট [আরবী ভাষায়] লিখেছেন:
١١ واحد بيتسحروا في بيت واحد منهم في دمنهور … الداخلية قبضت عليهم بتهمة التظاهر من غير تصريح … الحرية لمعتقلي السحور
১১ জন মানুষ তাদের একজনের বাড়িতে সেহেরি খাচ্ছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেআইনি জমায়েতের জন্য তাঁদের গ্রেপ্তার করল … সেহেরি বন্দীদের মুক্ত দিন।
ডামানায়ার থেকে টুইটার ব্যবহারকারী মোহাম্মদ হাজেম তার বন্ধুদের সমর্থনে টুইট করেছেন:
مش عارف ابكي علي مجزرة الحرس الجمهوري ولا ابكي علي اصحابي 11 المعتقلين حسبي الله ونعم الوكيل #معتقلي_السحور
— Mohamed Hazem (@HazeemZZ) July 5, 2014
আমি জানি না, রিপাবলিকান রক্ষিবাহিনী দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার জন্য নাকি আমার ১১ জন আটক বন্ধুর জন্য আমি কাঁদব।
তিনি পরে তীব্র ব্যঙ্গপূর্ণ টুইট করেছেন:
ياتري ياوكيل النيابة هتعمل الاحراز جبنة رومي وزتون ولا هتخليها مولوتوف #كل_هدفهم_انهم_يصوموا #معتقلي_السحور 🙁
— Mohamed Hazem (@HazeemZZ) July 5, 2014
পাবলিক প্রসিকিউটর কি পনির এবং জলপাইকে প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করবেন ? নাকি এটিকে মোলোটভ বানাবেন ?
আর শাদান-শশ সেই ১১ জন বন্দীর একটি আলোকচিত্র টুইট করে লিখেছেন:
التهمة سحور جماعي حيازة فول وفلافل وزبادي #معتقلي_السحور pic.twitter.com/2cbVqvTsrl
— Shahdan (@Shahdan_shosh) July 5, 2014
তাদের অপরাধ: সেহেরি খাওয়া এক দল। তাদের কাছে ফাউল (মটরশুটি), ফালাফেল এবং দই পাওয়ায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সক্রিয় কর্মী ওয়েল আব্বাস তার অনুগামীদের উদ্দেশে টুইট করেছেন:
انا غالبا هالغي حفل الفطار السنوي اللي باعمله كل سنة في بيتي احتراما لقانون التظاهر الجديد 🙂 #قبضوا_عليهم_وهم_بيتسحروا #دمنهور
— Wael Abbas (@waelabbas) July 4, 2014
আমি সম্ভবত এই নতুন বিক্ষোভ আইনের সম্মানে আমার বাৎসরিক ইফতার পার্টি [রোজা ভাঙ্গার খাবার] বাতিল করব 🙂
তিনি আরও লিখেছেনঃ
اصلا نص اللي كانوا عندي في الفطار السنة اللي فاتت يا محبوسين يا هربانين يا مطاردين 🙂
— Wael Abbas (@waelabbas) July 4, 2014
যাইহোক, আমি গত বছর ইফতারির জন্য যাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে তাঁদের অর্ধেক কারাগারে, নির্বাসিত বা দৌড়ের উপর আছেন 🙂
গত বছর, মুরসির শাসনকালে অনুরূপ একটি আইন আরোপ করা হয়েছিল, যা এক জায়গায় জামায়েতের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো থেকে সেটি পরে সমর্থন পায়নি। অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকারের ক্ষেত্রে মিশরীয় কেন্দ্র দ্বারা সঞ্চালিত মিশরীয় ব্লগ উইকিথাওয়রা [আরবী ভাষায়] অভিযোগ করেছে, গত জুলাই ২০১৩ (মুরসি সরকারের উৎখাতের পর) থেকে মধ্য মে, ২০১৪ সালের মধ্যে কমপক্ষে ৮০ জন মানুষ জেল হেফাজতে মারা গেছেন এবং আরো প্রায় ৪০,০০০ মানুষ আটক হয়েছেন।