“সামাজিক যোগাযোগ বিনিময় ব্লগ” এ এই পোস্টের প্রকৃত সংস্করণটি প্রকাশ করা হয়েছে।
ইরাকের টেলিকম মন্ত্রণালয় থেকে ফাঁস হয়ে যাওয়া একটি দলিলে দেখা গেছে, সরকার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেননা, সরকার এটিকে মিথ্যা এবং বিব্রতকর অনলাইন খবরাখবরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার একমাত্র উপায় বলে মনে করে। মিশরে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে মুবারকও একই পন্থা অবলম্বন করেছিলেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে স্থানীয় সাংবাদিক এবং বিশেষজ্ঞগণ এই নথি পত্রের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
উপরন্তু ইরাকিদের অধিকার লঙ্ঘন হতে থাকায় পদক্ষেপটিকে সারা দেশ জুড়ে বিস্তৃত ইরাকি নেটওয়ার্ক ফর সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপের ইরাকি ব্লগারদের প্রত্যাখ্যানের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মিথ্যা খবর প্রচার করা বন্ধ করতে সেন্সরশিপ নয় বরং আরও বেশি সঠিক খবর প্রচার করার তাগিদ দিয়েছে এই গ্রুপটি। #আইএনএসএম_আইকিউ শিরোনামের হ্যাশট্যাগটি খুঁজে বের করুন এবং উন্নয়ন কাজগুলো অনুসরণ করতে দেশের ভিতর থেকে বিশ্বস্ত টুইটার ব্যবহারকারীদের এই তালিকাটিও খুঁজে দেখুন।
ইরাকে #৫২১৪ হ্যাশট্যাগটির অধীনে টেলিকমিউনিকেশন মন্ত্রণালয় থেকে দুই পৃষ্ঠা বিশিষ্ট নথিপত্রটি ফাঁস করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলিলটির একটি অনানুষ্ঠানিক অনুবাদ নিচে প্রকাশ করেছেঃ
সকল ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীকে (ঔফোক আল সামা, আইকিউ নেটওয়ার্ক, আর্থ নেটওয়ার্ক, আর্থলিংক, আলসারেদ, নোউরোজটেল, ফাস্টইরাক, আইটিসি, হালাসাত, আলজাজিরা) উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছেঃ
ইরাকে সম্প্রতি নিরাপত্তা ঘটিত ব্যতিক্রমী যে ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলোর ভিত্তিতে এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নিচে উল্লেখিত সিদ্ধান্তগুলো গৃহীত হয়েছেঃ
১। নিনাওয়া, আনবার, সালেহ আল দিন, কিরকুক, দিয়ালাহঃ এই প্রদেশগুলোর ইন্টারনেট সংযোগ একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হবে।
২। প্রতিদিন বিকাল ৪ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত সারা ইরাক জুড়ে ভিপিএন’এ প্রবেশাধিকার বন্ধ থাকবে।
৩। ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ভাইবার, স্কাইপঃ সমগ্র ইরাকে এই ওয়েবসাইটের প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিতে হবে। ট্যাঙ্গো, উইচ্যাট, ইন্সটাগ্রাম, ডিডিঃ এই এ্যাপ্লিকেশনগুলোও তাঁর সাথে সাথে বন্ধ করে দিতে হবে।
৪। (আল আদেল, আলঘাজলিয়াহ, আবু ঘারিব, আল রাদওয়ানিয়াহ, আল মাহমুদিয়াহ, আল লুতিয়াফিয়াহ, ফাল্লুজা, জারফ শাখের, আল তাজি, আল ইউসফিয়াহ, আল মিসয়েব): এই এলাকাগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
এই নির্দেশনাগুলো মানা হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করতে একটি বিশেষ নিরাপত্তা কমিটি গঠন করতে হবে। যে কোম্পানিগুলো এই নির্দেশনাবলী অমান্য করবে, তারা দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলার জন্য দায়ী থাকবে।
সালেহ হাসান আলি
কর্তব্যরত সাধারণ ব্যবস্থাপক
বেশ কয়েকজন ইরাকি সক্রিয় কর্মীকে নাম ধরে সম্বোধন করা হয়নি। তারাই মূলত: এই ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার জন্য দায়ী। তাদের কারণেই প্রধানমন্ত্রী মালিকি ইরাকে জরুরি অবস্থা জারি করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের সম্মতি পাননি। এ খবর যদি সত্যি হয়ে থাকে, তবে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার জন্য মালিকি সরকার এবং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে আইএসপিগুলোকে দেয়া নির্দেশাবলীকে ইরাকি আইনের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে।
মন্ত্রনালয়ের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার অধিকার কোম্পানিগুলোর আছে। কিন্তু সক্রিয় কর্মীরা চান না, কোম্পানিগুলো এমনটি করুক। কারন, একজন লোক বলেছেন যে, “তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই তাদের অগ্রগণ্য বিষয়– ব্যবহারকারীদের অধিকার নয়।”