তিউনিসিয়ান নেট নাগরিকেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে “আমিও একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন দিয়েছি” শিরোনামে একটি প্রচারাভিযান চালু করেছে। তাঁরা এটি করছেন ২০১১ সালের বিপ্লবের সময়ে “পুলিশ স্টেশনে আগুন” দেওয়া এবং অন্যান্য “বর্বর আচরণের” অভিযোগে অভিযুক্ত প্রতিবাদীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে।
ব্লগার আজিজ আমামি ২০ এপ্রিল তারিখে টুইট করেছেনঃ
#حتى_أنا_حرقت_مركز : حملة لمساندة النشطاء و الشبان اللذين يتعرضون للإيقاف بخلفية المشاركة في الثورة.
— عزيز عمامي (@Azyyoz) April 20, 2014
আমিও একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিঃ এটি বিপ্লবে অংশগ্রহণ করার কারণে গ্রেপ্তার হওয়া সক্রিয় কর্মী এবং যুবকদের সমর্থন করতে আয়োজিত একটি প্রচারাভিযান।
সাবেক স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট জেইনি আল আবিদিন বেন আলির ২৩ বছরের শাসনকে গুড়িয়ে দিতে ২০১১ সালে বিপ্লব ঘটেছিল। নিঃসন্দেহে, সে সময়ে বিপুল সংখ্যক যুবককে তাদের বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচী পালনের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়।
তাদের মাঝে একজন হলেন সাবের এমরাইহি। একজন পুলিশ কর্মকর্তার উপর হামলা চালানোর অভিযোগে তাকে এক বছরেরও বেশি সময় বিনা বিচারে কারাভোগ করতে হয়েছে। পুলিশের উপর হামলার অভিযোগ আনার এক বছর পরে একটি ভিডিও দেখে তাকে সনাক্ত করার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিবরণ অনুসারে ভিডিওটিতে তিনি বলেছেনঃ “যতক্ষণ আমরা এখানে আছি, ততক্ষণ এই কুকুরেরা [পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে উদ্দেশ্য করে] এসে পৌছাতে পারবে না।” ২০১৩ সালের মে মাসে তাকে মুক্তি দিয়ে একটি আদেশ জারি করা হলে গত জানুয়ারি মাসে অবশেষে আদালত তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়।
অতঃপর গত বছরের মার্চ মাসে তিউনিসিয়ার একটি আদালত ডিজারবা দ্বীপে অবস্থিত আজিম শহরের একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অপরাধে ১০ জন প্রতিবাদকারীর প্রত্যেককে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা একজন স্থানীয় অধিবাসীকে গুলি করে মেরে ফেলার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তারা ঐ পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন।
বিপ্লবের সময়ে যে সব প্রতিবাদকারীদেরকে হত্যা করা হয়েছে তাদের আত্মীয় স্বজনদের নামও ‘আমিও একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছি’ প্রচারাভিযানের ফেসবুক পাতায় সংকলন করা একটি তালিকায় রয়েছে। সম্প্রতি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা এই তালিকাতে অন্তর্ভুক্ত আছেন। অভিযুক্তদের মাঝে আছেন হেলমি চেনিতি এবং ইসাম আমরি। তাদের ভাইদেরকে পশ্চিম তিউনিসিয়ার কেন্দ্রীয় অঞ্চল থালাতে হত্যা করা হয়েছে। এটি অন্যতম একটি স্থান যেখানে প্রথম বেন আলির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ফুঁসে উঠেছিল।
তাদের সমর্থকদের মতে এসব অভিযোগের অনেকগুলোই “মিথ্যা সাজানো”। উপরন্তু পুলিশ নিপীড়নের মাত্রা বিবেচনা করলে পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া সে সময়ের জন্য একটি বৈধ বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড ছিল। পুলিশের নিপীড়নে সে সময়ে কয়েক ডজন লোক মারা যায় এবং আরও অনেকে আহত হয়। বিশেষ করে ২০১০ সালের শেষে এবং ২০১১ সালের শুরুতে বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচীতে অংশ নেওয়া অনেক লোক নিহত ও আহত হয়েছেন।
যৌথ ব্লগ নাওয়াতের জন্য লিখতে [ফার্সী] গিয়ে হেনদা চেন্নাউই বলেছেন, প্রচারাভিযানটি “পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে বৈপ্লবিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বৈধতা” দাবি করছে।
তিনি এই বিচারকে “ঘোর দুর্বৃত্তায়ন” বলে আখ্যায়িত করেছেনঃ
la liste des procès contre les jeunes de la révolution est longue. Les accusations sont souvent les mêmes ; formation d’un gang, diffamation, trouble à l’ordre public et violence contre la police. Beaucoup d’entre eux ont été arrêté et incarcéré, pendant des semaines, voire des mois, avant leurs procès. Les plus chanceux ont bénéficié d’une médiatisation. Les autres croupissent dans un semblant d’exil, comme le cas de Jihed Mabrouk, blessé de la révolution. Actuellement au Maroc, il a été condamné à trois mois de prison et une amende pour avoir dénoncé un des symboles du RCD dans sa ville, à Mahdia.
বিপ্লবে অংশ নেওয়া তরুণদের তালিকা অনেক বড়। তাই দেখা অনেকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়েছে। আর অভিযোগগুলো হচ্ছে, একটি দল গঠন করা, মানহানি, জনগণের মাঝে বিশৃঙ্খলা তৈরি করা এবং পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতা ইত্যাদি। এদের মধ্যে অনেককেই তাদের বিচার [শুরু] হওয়ার এক সপ্তাহ আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। এমনকি কাউকে কাউকে তাদের বিচার [শুরু] হওয়ার এক মাস আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে যারা সবচেয়ে বেশি ভাগ্যবান তারা প্রচার মাধ্যমগুলোর সমর্থন পেয়েছেন। অন্যরা জিহাদ মাবরুকের মতো নির্বাসনের ছায়ায় পচে মরছে। তাকে সম্প্রতি মরক্কোতে তিন মাসের কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়েছে। তাঁর বাসস্থান মাহদিয়া শহরে আরসিডির [বেন আলির সাবেক ক্ষমতাসীন দল] অন্যতম একজন নেতার নিন্দা করার অভিযোগে তাকে এই শাস্তি দেয়া হয়।
টুইটারে সারাহ সাইদি আরও পুলিশ স্টেশন পুড়িয়ে দেয়ার আশা ব্যক্ত করেছেনঃ
محضرين رواحنا لمحاكمات بقانون مكافحة الإرهاب! أيوان #حتى_أنا_حرقت_مركز. وناوية نزيد نحرق ان حرقوا أحلامنا!
— sarah saidi (@sarahsaidi29) April 20, 2014
সন্ত্রাস-বিরোধী আইনের অধীনে আমরা অভিযুক্ত হতে তৈরি আছি। আমি একটি পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছি। তারা যদি আমাদের স্বপ্নকে পুড়িয়ে দেয়, তবে আমি আরও আগুন জ্বালিয়ে দিতে চাই।