১০০ দিন বিনা বিচারে কারাগারে: আলা আব্দে এল ফাত্তাহ

আজ মিশরের প্রখ্যাত ব্লগার আলা আব্দে এল ফাত্তাহের বিনা বিচারের কারাগারে আটকের একশত দিন পূর্ণ হল। ২৬ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে আলা আব্দে এল ফাত্তাহকে তার কায়রোর বাসগৃহ থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং নির্মম প্রভার করা হয়, গ্রেফতারের দুদিন পর যার বিরুদ্ধে “বেসামরিক প্রতিবাদকারীর সামরিক আদালতে বিচার নয়” নামক আন্দোলন সংগঠিত করার অভিযোগ আনা হয়।

এ্যাডভক্স লেখক এবং আব্দে এল ফাত্তাহ-এর বন্ধু রাশা আবদুল্লাহ–এর মতে:

বৈধ অনুমতি ছাড়া শূরা কাউন্সিলের (মিশরীয় সংসদের উচ্চ কক্ষ) সামনে বিক্ষোভ আয়োজন করার অভিযোগে তাকে ২৮ নভেম্বর তারিখ হতে তাকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। এই বিক্ষোভের দুদিন পরে আইন সভার সদস্যরা একটি আইন পাস করে যে আইন অনুসারে সকল বিক্ষোভকারীকে পরিকল্পিত বিক্ষোভের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পেশ করতে হবে।

[…]

যে বিক্ষোভ নিয়ে প্রশ্ন তার আয়োজক হচ্ছে বেসামরিক নাগরিকদের, সামরিক আদালতে বিচার নয়, যা মোনা সাইফ-এর এক প্রচারণা,তবে মোনার ভাই আলা এর সদস্য নয়। এই দলটি বিক্ষোভ আয়োজনের দায়িত্ব স্বীকার করে একটি সংবাদ বিবৃতি প্রদান করেছে। এই দলের সদস্যরা সরকারি কর্মকর্তাদের এই ঘটনার দায় স্বীকার করে একটি রিপোর্টও জমা দিয়েছে। এই বিক্ষোভ, যা ২৬ নভেম্বর –এ অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে মিশরের নতুন সংবিধানে বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক আদালতে বিচার বিলুপ্তির দাবী জানানো হয়, এই মাসের শেষে যার উপর ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা (জানুয়ারীতে)।

এই বিক্ষোভ শুরু হবার প্রায় আধা ঘন্টার মধ্যে পুলিশ নির্মমভাবে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এই ঘটনায় পুলিশ ১১ জন মহিলাকে গ্রেফতার করে যাদের বেশীর ভাগ সামরিক বিচারকে না বলুন দলের সদস্য। ওই সমস্ত মহিলাদের সকলকে আটক থাকা অবস্থায় প্রহার করা হয় এবং এদের কাউকে যৌন নির্যাতন করা হয়, যাদের কয়েক ঘণ্টা বন্দী রাখা হয়। এরপর তাদের সকলকে পুলিশের একটি গাড়িতে চড়ানো হয় এবং মাঝরাতের শেষে মরুভূমিতে ছেড়ে আসা হয়। পুরুষদের কয়েক সপ্তাহ আটকে রাখা হয় এবং এখন যাদের তদন্ত স্থগিত রেখে তাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে (কেবল একজন ব্যতিত, আহমেদ আব্দেল রাহমান)।

আলাকে দুদিন পর আলার ঘরে অভিযান চালিয়ে তালে আটক করে এবং তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভের আয়োজন করার অভিযোগ আনা হয়। যদিও বাস্তবতা হচ্ছে ২৬ নভেম্বর তারিখে আলা সেই পুলিশ থানার বাইরে অপেক্ষা করছিল, যেখানে সারা বিকেল ধরে তার বোন এবং বোনের সহকর্মীদের আটকে রাখা হয়েছিল, যাদের পরে মরুভূমিতে পুলিশ ফেলে আসার পর বন্ধুরা উদ্ধার করে। যদিও আলা এবং আবদেল রাহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত রেখে মাসব্যাপী আটকে রাখা হয়েছে, তারপরেও আদালত এই মামলায় কোন তারিখ ধার্য্য করেনি।

পরিস্থিতি এখনো আগের মতই আছে। আলার গ্রেফতারের ১০০ দিন পরেও এখনো আদালতের তারিখ ধার্য্য করা হয়নি। আব্দে এল ফাত্তাহ-এর গ্রেফতারে ১০০ দিন উপলক্ষে ইউটিউবে তাহরির ডায়রি এই ভিডিওটি পোস্ট করেছে।

এই ভিডিওতে মানাল হাসানের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, যে তার স্বামী আব্দে এল ফাত্তাহ এবং সামরিক বিচার ব্যবস্থাকে না বলুন-এর সদস্য নাজলি হাসানের ক্ষেত্রে কি ঘটেছে তা বর্ণনা করছে, যে পথিক আহমেদ আব্দুল রাহমান-এর বিচারের বিষয়ে ধারণা দিচ্ছে, তিনি বিনয়ের সাথে পুলিশকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কেন পুলিশ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারীদের প্রহার এবং তাদের যৌন নির্যাতন করছে।

এই পোস্টের সাথে প্রদান করা ছবি “ আলা আব্দে এল ফাত্তাহর মুক্তি” লেখাটা কায়রোর সামরিক আদালত ভবনের বাইরে ভূমিতে লেখা হয়েছে। ছবিটি তুলেছে এবং টুইটারে পোস্ট করেছে নাজলি হাসান।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .