এই পোস্টটি সৌদি আরবে সংস্কারকেরা বিচারের কাঠগড়ায়– সংক্রান্ত আমাদের বিশেষ কভারেজ এর একটি অংশ
বিচারক ইসা আল-মাত্রুদি সৌদি মানবাধিকার সক্রিয়কর্মী উমার আল-সায়েদকে ৪ বছরের কারাদণ্ড এবং ৩০০ বার বেত্রাঘাতের আদেশ দিয়েছেন। সৌদি আরবের নেতৃস্থানীয় স্বাধীন মানবাধিকার সংস্থা ‘সৌদি রাজনৈতিক এবং নাগরিক অধিকার অ্যাসোসিয়েশন (এসিপিআরএ)’ এর হয়ে তাঁর শান্তিপূর্ণ কার্যক্রমের জন্য তিনি এই শাস্তি পেলেন।
২৪ বছর বয়সী আল-সায়িদকে ২৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কোন আইনজীবী ছাড়াই জিজ্ঞাসাবাদকে প্রত্যাখ্যান করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে এসিপিআরএ – এর সাতজন সদস্য কারাবন্দী আছেন।
বৃহস্পতিবারের [১২ ডিসেম্বর, ২০১৩] একটি গোপন অধিবেশনের পর এই রায়টি প্রদান করা হয়।
গত মার্চে একজন বিচারক এসিপিআরএ মামলা নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত নেন। তাই এই সংস্থার দু’জন প্রতিষ্ঠাতা, মোহাম্মাদ আল-কাহতানি এবং আব্দুল্লাহ আল হামিদকে যথাক্রমে ১০ বছরের এবং ১১ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়। জুন মাসে আরেকজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আব্দুআলকারিম আল-কাদরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং তাকে ৮ বছরের কারাদণ্ডে দন্ডিত করা হয়।
গত অধিবেশনে বিচারক আল-সায়িদকে তাঁর আইনজীবীর সাথে দেখা করতে দেয়নি। যেহেতু আল-সায়িদকে তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, তাই তিনি জিজ্ঞাসাবাদে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। বিচারক বিচারটি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার হঠাৎ বিচারক রুল জারি করার সিদ্ধান্ত নেন।
আইনজীবীর সাথে আল-সায়িদের ফোনলাপের প্রতিলিপি সহকারে এসিপিআরএ একটি বক্তব্য [আরবি] প্রকাশ করেছেঃ
أخذت من السجن اليوم الساعة الثامنة صباحا وبعد أن قيدوني واركبوني السيارة, توجهوا بي إلى المحكمة, أدخلوني مكتب القاضي وكان خاليا, دخل القاضي عيسى المطرودي وقال: لديك جلسة اليوم. السعيد: أنت لم تحدد موعد في الجلسة السابقة, ووكيلي يحضر إليك كل أسبوع يسأل عن الجلسة القادمة ولم تحدد موعد, و الآن تريد عقد جلسة سرية! أنا أرفضها. القاضي: ليست سرية, وهذا الباب خلفك مفتوح! السعيد: الجلسة العلنية من شروطها أن تكون بموعد مسبق حتى يحضر وكلائي ويدعى الجمهور. القاضي: أنا رئيس الجلسة و أنا من يحدد هل هي علنية أم لا. السعيد: سبق الحديث عن هذا الموضوع وإعادة الكلام لا يفيد, لذلك أنا سأمتنع عن الحديث مطلقا.
আজ সকাল ৮ টায় আমাকে হাতকড়া পরানোর পর জেলখানা থেকে একটি গাড়িতে উঠানো হয়েছে। তারা আমাকে আদালতে নিয়ে গেছে। এরপর তারা আমাকে বিচারকের দপ্তরে নিয়ে যায়। তখন বিচারকের দপ্তর খালি ছিল। বিচারক ইসা আল-মাত্রুদি আসলেন এবং আমাকে বললেনঃ “আজ আপনার একটি অধিবেশন আছে।” আল-সায়িদ বললেন, “গত অধিবেশনে তো আপনি কোন তারিখ নির্দিষ্ট করেননি এবং আমার আইনজীবী পরবর্তী অধিবেশনের সময় সম্পর্কে জানতে প্রতি সপ্তাহে আপনার কাছে এসেছেন। কিন্তু আপনি কোন নির্দিষ্ট তারিখ বলেননি। আপনি এখন একটি গোপন অধিবেশন চালাতে চাচ্ছেন! আমি এটি প্রত্যাখ্যান করলাম!” বিচারক প্রত্যুত্তরে বলেছেন, “না, এটি কোন গোপন অধিবেশন নয়। আপনার পেছনের দরজাটি খোলা আছে। আল-সায়িদ বলেছেন, “জনসম্মুখে একটি অধিবেশন চালাতে হলে আগে থেকে ঘোষণা দিতে হয় যেন আমার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকতে পারে এবং দর্শকেরা তা দেখতে পারে।” বিচারক বলেছেন, “আমি এই অধিবেশনের প্রধান এবং আমিই সিদ্ধান্ত নিবো অধিবেশনটি জনসম্মুখে হবে, কিনা।” আল-সায়িদ বলেছেন, “আমরা এটি নিয়ে আগেও কথা বলেছি। আমি আগে যা বলেছিলাম, তা আবারও বলছি এবং এভাবে আমি একেবারেই কথা বলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছি।”
এই বক্তব্যের পাশাপাশি এসিপিআরএ একটি প্রবন্ধও প্রকাশ করেছে। আল-সায়িদ প্রবন্ধটি জেলে [আরবি] বসে লিখেছেন। প্রবন্ধটিতে তিনি বলেছেনঃ
أنا المعتقل المفتخر بصنيعه عمر بن محمد السعيد أتلو لكم دوافعي ومسببات سجني وهي كرهي للظلم واختلاق الألم والتعاسة في وجوه الناس واستغلال جمودهم و استغفال عقولهم والحيلولة دون أرزاقهم ولوازمهم الإنسانية (تعليم مواكب للعصر/ وظيفة كريمة/ سكن مناسب) إزاء مطامع شخصية شرسة محتمية بالسلطة لتأمين هذه المناهب والفساد.
আমি একজন গর্বিত কারাবন্দী উমার মোহাম্মাদ আল-সায়িদ। আমার এই কারাদণ্ডের পেছনের কারন এবং প্রণোদন সম্পর্কে আপনাদেরকে জানাতে চাইঃ অবিচার, ভোগান্তি, দুর্দশা, জনগণের নীরবতার সুযোগ নেয়া, জনগণের সাথে এমন আচরণ করা, যেন তারা বোকা এবং তাদের মানবীয় প্রয়োজনগুলোকে (আধুনিক শিক্ষা, যথোচিত চাকরি এবং বাসস্থান) অস্বীকার করা ইত্যাদিকে আমি ঘৃণা করি। নিষ্ঠুর ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য তারা এ সকল মানবীয় প্রয়োজনগুলোকে অস্বীকার করে। চুরি এবং দুর্নীতিকে সুরক্ষা দিতে কর্তৃপক্ষ ব্যক্তিগত স্বার্থকে সমর্থন করে।
টুইটার ব্যবহারকারী সুলতান আল-ফিফি চাবকানোর রায় সম্পর্কে মন্তব্য করেছেনঃ
من ينظر إلى الشعب كقطيع أغنام فلا بد أنه يرى الجلد عقوبة مناسبة لكل من خالف أمر الراعي. #عمر_السعيد
— سلطان الفيفي (@SultanAlfifi) December 12, 2013
এটি তাদের জন্য খুব সাধারণ একটি বিষয়, যারা জনগণকে ভেড়ার পাল বলে মনে করে। তাই যেই রাখালের নির্দেশের অমান্য করবে, তাকে চাবকানোই উপযুক্ত শাস্তি হিসেবে ধরা হয়।
এসিপিআরএ – এর সদস্য এবং আল-সায়িদের ভাই আব্দুল্লাহ আল-সায়িদ টুইট করেছেনঃ
هذا الحكم الجائر وسام عز وشرف ل #عمر_السعيد ووصمة عار وخزي على القاضي #عيسى_المطرودي #صمود pic.twitter.com/7xTTv0XXJn
— عبدالله السعيد (@abdulllah1406) December 12, 2013
এই অন্যায় শাস্তি উমার আল-সায়িদের জন্য একটি সম্মান এবং বিচারক ইসা আল-মাত্রুদির জন্য সম্মান হানিকর।
এই পোস্টটি সৌদি আরবে সংস্কারকেরা বিচারের কাঠগড়ায়– সংক্রান্ত আমাদের বিশেষ কভারেজ এর একটি অংশ