এই পোস্টটি বাহরাইন বিক্ষোভ ২০১১-এর উপর করা আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ।
বাহরাইনের বিপ্লবের প্রতীক, পার্ল রাউন্ডএ্যাবাউট-এর কাছাকাছি বাহরাইনের একটি প্রধান মহাসড়ক দখল করে দশ হাজার মানুষ “হামাদ নিপাত যাক” বলে বাহরাইনের সুলতান হামাদের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছে।
বাহরাইনের শাসকগোষ্ঠীর স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনগণের দাবী পুনরায় উত্থাপনের জন্যে শুক্রবার, ৯ মার্চ, ২০১২ তারিখে বুদাইয়া মহাসড়কের উপর এই বিশাল মিছিলটি হয়েছিল। বিক্ষোভের প্রথম প্রতিবাদ দুই মাসে কি ঘটেছে তা দেখার জন্যে বাহরাইনের রাজার অনুমোদিত বাহরাইন স্বাধীন তদন্ত কমিশন নামের একটি সত্য অনুসন্ধান মিশনের মতে এই সময়টি হত্যা, গ্রেফতার, দুর্নীতি, নিপীড়ন এবং নাগরিক বৈষম্যে দুষ্ট [পিডিএফ রিপোর্ট] ।
গত মার্চ ২০১১-তে বাহরাইনে বিক্ষোভ দমন এবং সামরিক আইন চালানোর জন্যে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন উপদ্বীপ রক্ষা বাহিনীর সৈন্য (পেনিনসুলা শিল্ড ফোর্স) প্রবেশ করেছে, যার ফলে প্রধান প্রধান বিরোধীরা গ্রেফতার হয়েছে। আব্দুলহাদি খোওয়াজা সহ তাদের অধিকাংশেরই সামরিক বিচারের মাধ্যমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। এছাড়াও ব্লগার আলী আব্দুলইমামের অনুপস্থিতিতেই তার ১৫ বছরের সাজা হয়েছে।
উত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত গুলি, নির্যাতনে মৃত্যু, গাড়ি চাপা, বা অতিরিক্ত টিয়ার গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যেভাবে শাসকগোষ্ঠী বন্দীদের মুক্তি দিয়ে সংস্কার শুরুর বিক্ষোভকারীদের দাবি এবং আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করে যাচ্ছে তাতে সামাজিক মিডিয়াতে বিক্ষোভকারীদের অব্যাহত প্রতিবাদ ও কথা বলা শুরু হয়েছে।
বাহরাইনের সক্রিয় কর্মী মরিয়ম আল-খোওয়াজা শুক্রবার সমাবেশের একটা ছবি পোস্ট করেছেন:
টুইটার ব্যবহারকারী @ডমিনিককাভাকেব সমাবেশে অংশ নেয়া দুই বাহরাইনি বৃদ্ধের এই ছবিটি পোস্ট করেছেন:
এবং ইউটিউব ব্যবহারকারী বিলাদ১৪ফেব “বাহরাইনি বিরোধী মিছিল (এখানে আমরা সবাই বাহরাইনি) ৯ মার্চ ২০১২।” মন্তব্যসহ সমাবেশের এই ভিডিওটি পোস্ট করেছেন। ভিডিওটিতে বিশাল সংখ্যক বিক্ষোভকারীদের দেখানো হচ্ছে:
মোহাম্মদ আশুর সমাবেশটিতে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন::
@মোহএমডিআশুর: আমি সংখ্যার খেলা কখনো পছন্দ করিনি। আমি যা জানি তা হলো এটা আমার অংশ নেয়া বৃহত্তম মিছিল ছিল।
অন্যদিকে, আল দাওয়ার এই ছবিটি টুইট করেছেন যেখানে বিক্ষোভকারীরা রাজার বিরুদ্ধে সংলাপ সম্বলিত একটি বিশাল ব্যানার বহন করছে। ছবিটির কেন্দ্রে ব্যানারটিতে লেখা [আরবী ভাষায়]: খুনীর সঙ্গে কোন আলোচনা নয়।
সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী স্লোগান ” আমরা শিয়া এবং সুন্নি ভাই ভাই, আমরা এদেশ বিক্রি করবো না” প্রদর্শিত আরেকটি ছবি টুইট করেছেন আইনজীবী @রিমাশাল্লান:
জাতীয় গণতান্ত্রিক সংগ্রাম সমিতি (ওয়াদ) সমাবেশ থেকে এই ছবিটি পোস্ট করেছে। এতে একটি সামরিক আদালতে দণ্ডিত বিরোধী নেতাদের মধ্যে ওয়াদের নামক দলের কারারুদ্ধ সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শরীফ রয়েছেন:
সমাবেশ চলার সময় টুইটারে আবার আরেকজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। মানবাধিকার কর্মী সাঈদ ইউসিফ টুইট করেছেন:
@সাঈদইউসিফ: #বাহরাইন দুরাজের জোয়ান ছেলে ফাধেল মির্জা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার সময় মাথায় একটি গ্যাসের খোলার আঘাত লেগে এখনি মৃত্যুবরণ করেছেন।
পরের দিন শনিবার জনতা ২১-বছর-বয়েসী বিক্ষোভকারীর শেষকৃত্যানুষ্ঠানে গিয়েছিল:
অ্যাংরি এরাবিয়া নামে টুইটারকারী জয়নাব আল খোওয়াজা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার মিছিলে ছিলেন এবং তার পর্যবেক্ষণ টুইট করছেন।
@অ্যাংরিএরাবিয়া: শহীদরা “হামাদ নিপাত যাক, নিপাত যাক!!” চিৎকার করতে করতে ফাদেলের দেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছে”
মোহাম্মদ আশুরের মতো অন্যান্য টুইটার ব্যবহারকারীরাও সেখানে ছিলেন। আশুর শেষকৃত্যানুষ্ঠান থেকে নিচের চিত্রটি শেয়ার করেছেন:
@মোহএমডিআশুর: এই মূহুর্তে দুরাজে মাথায় সরাসরি একটি গ্যাসের খোলার আঘাত লাগা ২১ বছর বয়সী #ফাধেল-এর শেষকৃত্যানুষ্ঠান হচ্ছে ।
এই পোস্টটি বাহরাইন বিক্ষোভ ২০১১-এর উপর করা আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ।