শ্রীলঙ্কা: মূল্যবৃদ্ধি এবং সরকারি আদেশ প্রয়োগে পুলিশের নৃশংসতা

শ্রীলঙ্কা বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধি এবং সারচার্জ প্রয়োগসহ একটি অস্থিতিশীল অর্থনীতির মুখোমুখি হয়েছে, যা ব্যাপক বিক্ষোভে প্ররোচনা যোগাচ্ছে। প্রতিবাদকারীদের উপর পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর নৃশংস ব্যবস্থা গ্রহণে গত কয়েক মাসে বেশ কিছু লোক নিহত হয়েছে।

সেরেন্ডিপিটিতে, রাতমেল ব্যাখ্যা করেছেন:

রুপির পুনরায় অবমূল্যায়নের হুমকি থাকা পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধির ধারায় কোন সময় বা সীমা না থাকায় আমরা এখন আমাদের ব্যক্তিগত আর্থিক ব্যবস্থাপনা করতে গিয়ে কঠিন সময় কাটাচ্ছি। পণ্ডিতেরা এখন বলছেন সরকার ধার করা সময় কাটাচ্ছে বলে এটা অবশ্যম্ভাবী ছিল। কিন্তু তারা কেন সবসময় এতো নীরব থাকে? কারণ এর কারণে সরকার, দেশের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে মিথ্যাতথ্যের একটি সফল প্রচারণা চালাতে সক্ষম হয়।

A man shouts during a protest over rising costs in living. Image by Rohan Karunarathne. Copyright Demotix (14/12/2011)

একজন মানুষ জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধির এক প্রতিবাদের সময় চিৎকার করে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। রোহন করুণারত্নের ছবি। কপিরাইট ডেমোটিক্স-এর (১৪/১২/২০১১)।

আইটি এবং ব্যবসা কৌশলের ছাত্র শায়ন্থান তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন:

গত কয়েকদিন তেলের সংকট আমাদের সত্যিই কঠিনভাবে ভোগাচ্ছে। সোমবার কাজে যাওয়ার জন্যে বাইরে বেরিয়ে একটি বাসও না পেয়ে আমাকে একটি তিনচাকার যান খুঁজে নিয়ে অফিসে যেতে হয়েছে। পরের দিন বাম্বালাপিতিয়া থেকে গ্যালে যাওয়ার পথে কন্ডাকটরকে ২০ টাকা দিলে সে বলে এটাই সংশোধিত ভাড়া। নতুন ভাড়া সম্পর্কে আমার কোন ধারণা না থাকায় সেটাকে আমি সঠিক ধরে নিই। পরে দেখি আমাকে কয়েক রুপি ঠকানো হয়েছে।

জেলেদের শহর চিলাওতে হাজার হাজার জেলে তেলের দাম কমানোর দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেয়। পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ হলে, পুলিশ তাদের প্রতি গুলি ছোঁড়ে। এতে একজন মারা যায় এবং অনেকে আহত হয়।

গ্রাউন্ডভিউজ-এ, নাইজেল ভি নুগাভেলা লিখেছেন:

সর্বোপরি সরকার “আপনি আমাদের সাথে না হয় আমাদের বিরুদ্ধে” এই ভাবে ভাবতে পছন্দ করে-আর গত কয়েক বছর-সেটাই রাস্তার প্রতিবাদ এবং সুশীল সমাজের কর্মীদের বিরুদ্ধে অপবাদসূচক মৌখিক আক্রমণের পুরোনো অভ্যাসে অনুদিত হয়েছে।

সুতরাং জননিরাপত্তা কী সত্যিই এই সরকারের জন্যে কোনো উদ্বেগ জনক বিষয়? জননিরাপত্তা যদি একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে থাকে, তাহলে কেন সামরিক এবং পুলিশ বাহিনী রাস্তায় প্রতিবাদকারীদের মেরেছে? অথবা এটা বৃহত্তর ভিন্নমতের আন্দোলন ঠেকানোর নিপীড়ন কিনা? জনশৃংখলা যদি এর একটি লক্ষ্য হয়, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর দ্বারা প্রতিবাদকারীদের জঘন্য এসব হত্যাকাণ্ড ভবিষ্যতে সহিংস মোকাবেলার ঘটনা নিঃসন্দেহে বাড়িয়ে দিবে, তাই নয় কী?

নাইজেল আরো লিখেছেন:

এটা করা হয়েছে মূলত – নাভানথুরাই, পত্তুভিল, কিন্নিয়া, পুত্তালাম, কাটুনায়েকে এবং অন্যান্য স্থানে-নাগরিক বিক্ষোভে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর যথাযথ আচরণ নিশ্চিতকরণে ব্যর্থতার পূর্ব উদাহরণ সৃষ্টির এবং চিলাও‘র নৃশংস ঘটনার মতো লঙ্ঘনের পর যথাযথ পুনর্গঠন প্রতিষ্ঠার কারণে। হস্তক্ষেপগুলোর প্রতিটি অসমাপ্ত বিপর্যয়ের ঘটনা হয়ে থাকা সত্ত্বেও জনশৃংখলা রক্ষার্থে ক্রমাগত সামরিক শক্তির ব্যবহারে সরকারের কোন সংশয় নেই বলে মনে হচ্ছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .