মঙ্গোলিয়ার খনি প্রকল্প দেশটির সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কাঠামোর উন্নয়নের এবং দারিদ্র বিমোচনের প্রতিশ্রুতি প্রদান করছে, কিন্তু ঠিক তাঁর বিপরীতে খনি এলাকার কাছে বাস করা স্থানীয় সম্প্রদায়, খনি খননের ক্ষতিকর দিকগুলো অনুভব করছে, কারণ এর ফলে তাদের পরিবেশ এবং ঐতিহ্যগত জীবন ধারণের উপায়গুলো আক্রান্ত হচ্ছে।
পরিবেশবাদী এনজিও সিইই ব্যাঙ্ক ওয়াচ নেটওয়ার্ক সংবাদ প্রদান করেছে যে কিরগিজস্থান এবং মঙ্গোলিয়া, উভয় এলাকার খনি প্রকল্প, যা কিনা ইউরোপিয়ান ব্যাংক ফর রিকনস্ট্রাকশন এন্ড ডেভলাপমেন্টে এর সাহায্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ব্যাঙ্কওয়াচ উদ্বিগ্ন, ইবিআরডি জেনে রাখ, স্বর্ণ উত্তোলনের জন্য তাড়াহুড়া করার ফলে তা জনতাকে পশ্চাদপদ করে রাখতে পারে, নামক লেখায় নিজেদের কন্ঠ তুলে ধরেছে। এর ফলে, তা প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণে হ্রাস ঘটাতে থাকবে, বিশেষ করে পানির উৎস কমে আসব, এবং নিত্য দিনের প্রয়োজনীয় সম্পদের মূল্যে তা পরিবর্তন ঘটাবে।
তবে প্রতিশ্রুত অর্জিত অর্থ মঙ্গোলিয়ার অতীব প্রয়োজনীয় সামাজিক সেবা খাতের উন্নয়নে এবং এমন এক অর্থনীতি গঠনে সাহায্য করবে কিনা, যা কিনা দেশটির ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকা প্রাকৃতিক সম্পদ অথবা হঠাৎ করে নিত্যপণ্য সামগ্রীর দাম পাল্টে যাবার বিষয়টির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে কিনা, তা এক আলোচ্য প্রশ্ন। তবে, খনি প্রকল্পের প্রভাবে ইতোমধ্যে এলাকায় “ডাচ ডিজিজ” বা, “সম্পদের অভিশাপ” মত এক জটিলতা সৃষ্টির শঙ্কা বৃদ্ধি করেছে
সিইই ব্যাঙ্কওয়াচ নেটওয়ার্ক ইন ইস্টার্ন ইউরোপে, উরগেওয়ালদ ফ্রম জার্মানি, দি ব্যাঙ্ক ইনফরমেশন সেন্টার ইন দি ইউনাইটেড স্টেটস, অয়ু তোলগি ওয়াচ ফ্রম মঙ্গোলিয়া নামক প্রতিষ্ঠান মিলিতভাবে এই সংক্ষিপ্ত ভিডিওটি তৈরি করেছে। যারা মঙ্গোলিয়ার দক্ষিণ গোবি মরুভূমিতে উখা খুদ্গা কয়লা খনি খনন করার ফলে, তা ইতোমধ্যে সেখানকার পরিবেশে এবং সামাজে যে প্রভাব সৃষ্টি করেছে, সে বিষয়ে গবেষণার জন্য উক্ত এলাকা ভ্রমণ করেছে:
যখন উপরের ভিডিওটি আমাদের প্রদর্শন করছে যে, খনি খনন করার ফলে মঙ্গোলিয়ায় তার প্রভাব কি ভাবে পড়তে শুরু করেছে, তখন কিরগিজস্থানের ইতিহাসে লম্বা সময় ধরে খনিসমূহ পরিবেশ, স্বাস্থ্য এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের উপর এক নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে রেখেছে।
পরবর্তী ভিডিও কিরগিজস্তানের হিমবাহ এলাকার উপর তোলা এবং এটি কুমটর উন্মুক্ত স্বর্ণখনি এলাকার আশেপাশের অঞ্চল পরিভ্রমণ করেছে, যা কিনা ১৫ বছর ধরে চালু আছে। এখানকার সম্প্রদায় বিষাক্ত সায়েনাইড আক্রান্ত এবং এখানকার পানি দূষিত হয়ে গেছে, প্রতিশ্রুত উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সুবিধার কোনটাই জনগোষ্ঠীর কাছে এসে পৌঁছেনি।
মঙ্গোলিয়া এবং কিরগিজস্থানের উভয় ভিডিও এবং এর প্রেক্ষাপটের বিষয়ে লেখা হয়েছে “ মধ্য এশিয়ার খনি, পৃথিবীর ধনীর, জনতার যন্ত্রণা”:
মঙ্গোলিয়ার অয়ু তোলগি ও তাভান তোলগি এবং কিরগিজস্থানের কুমটর স্বর্ণখনি-র ক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছে, এগুলো কি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কোন অবদান রেখেছে, এবং উভয় প্রকল্প (অয়ু তোগলি সম্ভবত শীঘ্রই তা লাভ করবে) ইউরোপীয়ান ব্যাঙ্ক ফর রিকনস্ট্রাকশন এন্ড ডেভলাপমেন্ট বা ইবিআরডি সমর্থন লাভ করেছে। তবে উভয় খনি এখন স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে, যে সমস্ত ক্ষতিপুরণ টাকার অঙ্কে করা যায় না।
এই সমস্ত দেশগুলো এখন কেবল নেতিবাচক উন্নয়নের মুখোমুখি হচ্ছে না, যা এই সব খনি প্রকল্পগুলোর কারণে সৃষ্টি হচ্ছে। তিব্বতের কাছে, কয়েকটি গ্রামের গ্রামবাসীরা তাদের এক পবিত্র পর্বতের কাছে এক খনির প্রকল্প স্থগিত করতে সক্ষম হয়।
এই বিষয়টিও বিতর্কিত; দেশের উন্নয়নের জন্য একটি সম্প্রদায় কতটা মূল্য প্রদান করবে? ভ্লাদেনা মার্টেনেস্কাভিচ ব্যাঙ্কওয়াচ-এর মধ্য এশিয়া-এর এক কর্মকর্তা লিখেছে:-
একটি শিল্প দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভালভাবে অবদান রাখতে পারে এবং দেশে কাঙ্খিত কর্মস্থান এবং উপার্জনের সুযোগ তৈরি করে। আবার খনি হচ্ছে প্রচণ্ড ধবংসাত্বক কর্মকাণ্ড ঘটায় ও একই সাথে তা পরিবেশের উপর নেতিবাচক এবং তা স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রায় প্রভাব তৈরি করে। গণতান্ত্রিক কাঠামোরের অভাবের মধ্যে অবস্থান করতে থাকা এক অনুন্নত বিশ্বে, যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা অথবা প্রতিষ্ঠানখুব সাধারণ ভাবে দূর্নীতিপরায়ণ হবার ফলে, সেখানে দ্রুত অনেক বেশী ক্ষতি হতে পারে। এই সবের ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে সুবিধা প্রদান করার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং সর্বোপরি এর সকল সুবিধা, খনির সাথে যুক্ত কোম্পানীতে গিয়ে তা শেষ হয়-এতে খনি খননকারী কোম্পানি প্রযুক্তি গত উন্নয়ন লাভ করে এবং উন্নত দেশের মানুষের লাভ করে সম্পদ।