এই প্রবন্ধটি মিশর বিপ্লব-২০১১ সম্বন্ধে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ।
“বিপ্লবকে আবার পুনর্জীবিত করার জন্য” আজ দিনের শেষে মিশরীয় নাগরিকরা আবার তাহরির স্কোয়ারে ফিরে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। এক মর্মঘাতী বিস্ময়কর সংবাদ তাদের আবার স্মরণ করিয়ে দেয় যে, এই বিপ্লব সম্পূর্ণ করার ক্ষেত্রে এখনো অনেক কাজ বাকী রয়ে গেছে।
হামলার শিকার নাগরিকদের পুর্নবাসন কেন্দ্র আল নাদিম সেন্টার তাদের ফেসবুকের পাতায় ঘোষণা করেছে :
২৫ ফ্রেব্রুয়ারির সামরিক আদালতে এসাম আলি আত্তাহকে দুই বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে, তুরাহ জেলে তার নিজের কারা কক্ষে মোবাইল সিম পাচার করার শাস্তি হিসেবে তার উপর নির্মম অত্যাচার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে মুখে এবং পায়ুপথে পানির পানির পাইপ (ওয়াটার হোস) ঢুকিয়ে দেওয়া। এই ঘটনার পরে তারা পিতামাতাকে না জানিয়ে তাকে কাসর এল এইনি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে সে মৃত্যু বরণ করে।
মিশরের বিখ্যাত শহীদ খালেদ সাইদের ফেসবুকের পাতায় সম্প্রতি আত্তার মৃতদেহের একটি ছবি প্রকাশ করা হয় এবং আবার সেখানে দাবী করা হয় যে তার উপর সংঘঠিত নির্মম অত্যাচারের কারণে তার মৃত্য ঘটেছে।
আত্তার এই বীভৎস মৃত্যুর সংবাদ, সামাজিক প্রচার মাধ্যম ওয়েব সাইটে এক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে টুইটারে, যেখানে ব্যবহারকারীরা আইনজীবী মালেক আদলীর প্রদান করা নিয়মিত তাজা সংবাদ অনুসরণ করত। মালেক আদলী ঘটনার শিকার ব্যক্তির পরিবারকে এই ঘটনায় আইনী সহায়তা প্রদান করতেন।
আদলী তার একাউন্টে সংবাদ প্রদান করেন যে তিনি এসসাম আত্তার মৃতদেহ দেখেছেন এবং তার সংবাদ ভাষ্য ছিল এ রকম:
সম্প্রতি তিনি আত্তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ টুইট করেন:
আদলির এই টুইট, আদেল সালিব এবং পিটার রামজির মত কিছু টুইটারকারীকে জেইনহোম নামক মর্গে নিয়ে যায়, যেখানে এই মৃতদেহটি রাখা ছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আত্তার পরিবারকে সমর্থন করা।
সাধারণ নাগরিকের সামরিক আদালতে কোন বিচার নয় নামক দলের সম্বনয়কারী একটিভিস্ট মোনা সাইফ, আত্তার ঘটনা সম্বন্ধে আরো তথ্য প্রদান করেছে :
এসসাম আলি আত্তা, যার বয়স ২৩ বছর, তাকে সামরিক এক আদালত দুই বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে। আমরা তার এই শাস্তির বিরুদ্ধে দরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কিন্তু তার উপর করা অত্যাচারের ফলে আজ সে মারা গেছে।
টুইটারে যে সমস্ত প্রতিক্রিয়া এসেছে তার বেশিরভাগই ক্ষোভ এবং হতাশার। নিজেদের হতাশা প্রকাশ করার জন্য টুইটারকারীরা #এসসাম আত্তা নামের একটি হ্যাশট্যাগের সৃষ্টি করেছে। তারা এই কারণে হতাশ যে বিপ্লব পরবর্তী মিশরেও পদ্ধতিগত নির্যাতন ব্যবস্থা এখনো বজায় রয়েছে।
খালেদ সাইদের মামলা রায় প্রদানের দুই দিন পরে এই ঘটনা ঘটল। খালেদ সাইদের মামলায় অভিযুক্ত পুলিশকে তথ্য প্রদানকারী এবং পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে, যারা তার মৃত্যুর জন্য দায়ী। অনেকে এই শাস্তিকে “খুবই সামান্য” বলে মনে করছে এবং তারা এর জন্য বিচার পদ্ধতিকে অভিযুক্ত করেছে, কারণ এই বিচার ব্যবস্থায় এই মামলাকে প্রথম স্তরের হত্যার বদলে প্রচণ্ড প্রহারের কারণে একে দ্বিতীয় মাত্রার এক হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করেছে ।
দৃশ্যত, মিশরের বর্তমান সামরিক শাসন পরিষদের শাসন কার্য দেশটিতে যে প্রান্তিক অবস্থার তৈরি করছে, তার পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে এবং আগামীতে এক সংঘর্ষ অনিবার্য বলে মনে হচ্ছে।
এই প্রবন্ধটি মিশর বিপ্লব-২০১১ সম্বন্ধে আমাদের বিশেষ কাভারেজের অংশ।