“অতএব যাও, সব দেশে অনুসারী তৈরি কর…” বাইবেলের ম্যাট ২৮:১৯ আদেশ দিয়েছে সকলকে তার [জিশুর] কথা প্রচার করতে।
জাম্বিয়ার ধর্মযাজকরা, যে দেশকে মৃত প্রেসিডেন্ট ফ্রেডারিক চিলুবা ২০ বছর আগে খ্রীস্টান রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষনা করেছিলেন, সকল সুযোগ আর ফোরাম ব্যবহার করছেন কথাটা প্রচার করতে।
এখন পর্যন্ত ঈশ্বরের কথা জানাবার সব থেকে অদ্ভুত জায়গা ছিল বাস টার্মিনাল যেখানে যাজকরা অপেক্ষা করেন দূরপাল্লার যাত্রীদের দ্বারা বাস ভরার জন্য আর তারপরে উঠে বসে বানী দেয়া শুরু করেন, আর প্রায়শ: দানও গ্রহন করেন কয়েক কিলোমিটার পরে নেমে যাওয়ার আগে।
প্রথমদিকে বাসে ধর্ম যাজকদের বাণীর ব্যাপারটিকে লোকে স্বাগত জানাত কারন অনেক সড়ক দূর্ঘটনা হতো যেখানে মানুষ মারা যেত বা বিকলাঙ্গ হত। যাওয়ার আগে প্রার্থনা টনিক হিসাবে দেখা হত কিন্তু এখন এটা একটা (বিরক্তিকর) প্রথায় পরিণত হয়েছে যা প্রত্যেক দূরপাল্লার বাসে দেখা যাচ্ছে।
তবে বলাবাহুল্য ধর্মানুসারী দের প্রথামাফিক একত্র হওয়ার জন্যে মাথার ছাদ লাগে এবং বিভিন্ন চার্চ শহর আর নগরে বিশাল সব বাড়ি নির্মান করছে। তবে অনেক চার্চ নিজস্ব বাড়ি তৈরি করতে সমর্থ হয়না, তারা স্কুলের ক্লাসরুম আর কমিউনিটি হল ব্যবহার করেন যার জন্য সামান্য অর্থ দিতে হয়।
সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট ফেসবুকের আসার সাথে সাথে, কিছু উৎসুক আর উদ্দীপ্ত ধর্মযাজক ‘হারানো আত্মাদের (বিধর্মীদের)‘ কাছে পৌঁছানোর জন্য এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করছেন।
আমার ফেসবুক বন্ধুর মধ্যে দুইজন হচ্ছে ধর্ম যাজক যারা সামাজিক মিডিয়ার সাইটকে ব্যবহার করেন ধর্ম প্রচারের জন্য। ফেসবুকের ব্যবহারের ব্যাপারে তাদের মতামত জানার জন্য আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করি।
বিশপ স্টিফান সাফোয়ালি বলেছেন তিনি ফেসবুকে এসেছিলেন শুধুমাত্র একজন অনলাইন সদস্যের সাথে ধর্মপ্রচার বিষয়ক আলোচনার জন্য। তিনি পেন্টি কোস্টাল আর চার্চের বিশ্ব কাউন্সিলের সাথে গত ১০ বছর ধরে যুক্ত ছিলেন যেখান থেকে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর সুবিধা জানতে পেরেছেন। যদিও তিনি টুইটারে আছেন, কিন্তু সেটা খুব বেশী ব্যবহার করেন না।
বিশপ সাফোয়ালি স্বীকার করেছেন যে তিনি অনেক সাড়া পান ফেসবুকে তার পোস্টগুলোতে।
প্রশাসনিক খরচ যেমন ইন্টারনেট সার্ভিস চালানোর জন্য আর্থিক সাহায্যের ব্যাপারে বিশপ সাফোয়ালি না বলেছেন কিন্তু মনে করেন যে ‘অবশ্যই সামাজিক মিডিয়া বিশ্ব ধর্ম প্রচারের জন্য অর্থ তুলতে সাহায্য করতে পারে'।
বিশপ সাফোয়ালি তার স্নাতকপূর্ব পড়াশোনা পেন্সিলভেনিয়ার ভ্যালী ফোর্জ খ্রিশ্চিয়ান কলেজ থেকে করেছেন আর স্নাতক পড়াশোনা চালিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ফুলার থিওলজিকাল সেমিনারি থেকে।
নীচে বিশপ সেফোয়ালির ফেসবুক দেয়ালের একটি উল্লেখযোগ্য পোস্ট দেয়া হল:
চার্চ এমন একটা স্থান যেটা কখনো ভালো খবরের ঘাটতি হওয়া উচিত না! এটা প্রতিজ্ঞা আর এই ধরনের প্রতিজ্ঞার পূরন হওয়াতে পূর্ণ! এটা সব সময় আশা, আশ্বস্ত করা, উত্তর, উৎসাহ দান, সারিয়ে তোলা, মুক্তি দান, সরবরাহ ইত্যাদিতে পূর্ণ। আজকেই চার্চে গিয়ে ঈশ্বরের ভালোবাসার অনুভূতি পান!
বিশপ সাফোয়ালি (লেখার সময়ে তার ২৩১০ জন অনুসারী ছিল) ফেসবুকের মাধ্যমে বিশ্বাসীদের রাতে একটা সভার জন্য আহ্বান জানান:
ঠিক আছে এন্টিওক বাইবেল চার্চ, আবার সময় হয়েছে! সারা রাতের ধর্মীয় ক্রুসেড চালু হয়েছে: শুক্রবার মে ২০, ২০১১ তারিখে! আসুন তা করি- শক্তি বা ক্ষমতা দিয়ে না, বরং ঈশ্বরের শক্তি দিয়ে! দেখা হবে!
নীচে একজন অনুসারী পল থেম্বোর উত্তর:
বিশপ, জেডএনবিসি ( জাম্বিয়া ন্যাশনাল ব্রোডকাস্টিং কপোরেশন) এর সাথে আপনার সাক্ষাৎকার শক্তিশালী ছিল। খুবই গভীর চিন্তাশীল একটি বিষয়। ইশ্বর আপনাকে আর্শীবাদ করুন।
ফেসবুকের বহুল ব্যবহার করে ধর্মীয় প্রচারণা করেন এমন আর একজন হলেন ড: এলিজা মিতি, যিনি দক্ষিণ আফ্রিকাতে থাকা একজন জাম্বিয়ান। তিনি মূলত: একজন লেখক এবং ফেসবুকে তার ২২৩৫ জন অনুসারী আছে। মিতির দেয়ার গতানুগতিক উদ্দীপক পোস্ট এমন হয়ে থাকে:
আজকে, উৎসাহ দানের কথা বলেন। বিজয় আর বিশ্বাসের কথা বলেন। মানুষকে যেন এটা না বলে যে তারা কি ভুল করছে, তাদের সকল ভুল না ধরিয়ে দিয়ে, দেখুন তারা কি ঠিক করছেন। ভালোর উপরে জোর দিন।
তার বাইবেল সংক্রান্ত পোস্ট এমন হয়ে থাকে:
যিনি ঈশ্বরের নাম ধরে ডাকবেন, তিনি বেঁচে যাবেন। যার উপরে তারা বিশ্বাস করেনি তাকে তারা কিভাবে ডাকবে? আর কি করে তার উপরে বিশ্বাস করবেন যার ব্যাপারে তারা শোনেননি? আর প্রচারক ছাড়া তার সম্পর্কে কি করে শুনবে লোকে? আর কি করে তারা প্রচার করবেন যদি তাদেরকে না পাঠানো হয়? যেমন লেখা আছে সেই ভাবেও, কি সুন্দর তাদের পা যারা ভালো জিনিষ বয়ে নিয়ে আসেন! রোমানস ১০:১৩-১৫।
আমি ড: মিতিকে কয়েকটা প্রশ্ন পাঠিয়েছিলাম তার সামাজিক নেটওয়ার্কের সাইট ব্যবহারের ব্যাপারে:
গেরশোম: সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুক ব্যবহার করে ধর্মীয় বার্তা দেয়ার জন্য কে আপনাকে উৎসাহিত করেছে?
ড: মিতি: আমি বিশ্বাস করি বিশ্বের কাছে আমাকে পৌঁছাতে হবে জিশুর বানী নিয়ে আর এই নতুন প্রযুক্তি আমাকে সাহায্য করে অনেক মানুষের সাথে মিলিত হতে আর বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষকে সাহায্য করতে। আমার এখন ছেলে মেয়ে আছে যারা ফেসবুকে জিশুকে স্বীকার করেছে আমার উৎসাহ দানের ফলে আর অনেকেই আছে যারা প্রার্থনা বা পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করে আর ইশ্বর তাদের প্রার্থনার জবাব দিয়েছেন। আমাদের মধ্যরাতের প্রার্থনার পরে দীর্ঘদিন বেকার থাকার পরে মানুষকে চাকুরি পেতে আমরা দেখেছি।
গেরশোম: আপনি কি অন্যান্য সামজিক নেটওয়ার্কের সাইট যেমন টুইটার ব্যবহার করেন?
ড: মিতি: আমি মাইস্পেস, লিঙ্কডইন আর ব্লগ ব্যবহার করি।
গেরশোম: পাঠকের কোন সাড়া কি আপনি পান?
ড: মিতি: প্রতিদিন, অনেক।
গেরশোম: কখনো কি ঋণাত্মক সাড়া পান?
ড: মিতি: হ্যাঁ , বিশেষ করে যারা এখন জীবনে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
গেরশোম: আপনার ধর্মীয় সমাবেশের উপস্থিতির হার কি ভালো হয়েছে ফেসবুক ব্যবহারের মাধ্যমে?
ড: মিতি: হ্যাঁ এবং আর্ন্তজাতিক ভ্রমণ ও আমন্ত্রণের দ্বারও উন্মুক্ত হয়েছে।
গেরশোম: এটা চিন্তা করে যে ইন্টারনেট এবং অন্যান্য জিনিসের জন্য আপনার অর্থের প্রযোজন, আপনি কি আর্থিক সাহায্য পান সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট ব্যবহারের মাধ্যমে?
ড: মিতি: আমি কখনো কোন দান পাইনি কিন্তু এটা সাহায্য করে আমার বই বিক্রিতে আর স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বক্তৃতা প্রচারের সুযোগ পেতে।
গেরশোম: আপনি কি অন্যন্য চার্চকে উৎসাহিত করবেন (ফেসবুক ব্যবহারে)?
ড: মিতি: হ্যাঁ প্রত্যেক চার্চের উচিত তার সদস্যদের জন্য একটা দল তৈরি করতে যেখানে প্রার্থনার আবেদন আর ইশ্বর কি করছেন তার কথা পোস্ট করা যাবে।
ফেসবুক ব্যবহার করে তার বই বিক্রির ক্ষেত্রে নীচের বাণী একেবারে ঠিক:
বই এর ব্যাপারে আপনার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ, দয়া করে বই এর মোড়কে ক্লিক করুন। সেখান থেকে আপনার বই অর্ডার করুন এবং ইবুকটি অতিসত্বর ডাউনলোড করে নিন।