কয়েকদিন আগে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ফাঁস হয়ে যাওয়া সৌদি আরবের এক নতুন সন্ত্রাস বিরোধী খসড়া আইন প্রকাশ করেছে । সংগঠনটি এক বিবৃতিতে , এই আইনকে বর্ণনা করছে এমন এক আইন হিসেবে, যার মধ্যে দিয়ে কর্তৃপক্ষ শান্তিপূর্ণ ভিন্নমতাবলম্বীদের কঠোর শাস্তি প্রদান করতে পারবে। এর সাথে তারা আরো যোগ করেছে এই আইনের ক্ষমতাবলে, যে বাদশাহ বা যুবরাজের সততার বিষয়ে প্রশ্ন তুলবে তাকে শাস্তি কমপক্ষে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হবে।
তাজা সংবাদ : সৌদি আরব, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিয়েছে
টুইটারের মাধ্যমে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল (@অ্যামনেস্টি ) এই সংবাদ সব জায়গায় ছড়িয়ে দেয়। যেখানে # সৌদিটেররল হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে অনেকে এই আইনের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে:
@এ্যামনেস্টি : গোপন নথি উন্মোচন করছে যে # সৌদি আরবের “সন্ত্রাস বিরোধী ” আইন শান্তিপূর্ণ ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন করার এক আইন http://owl.li/5KS9Y
সৌদি ব্লগার আহমেদ আল ওমরান (@ আহমেদ) এই নতুন খসড়া আইন সম্বন্ধে বেশ কিছু টুইট করেছে এবং লিখেছে :
@আহমেদ: আমি দেখতে পাচ্ছি অনেক সৌদি টুইটারকারী প্রস্তাবিত এই সন্ত্রাস বিরোধী আইনকে জরুরী আইন হিসেবে অভিহিত করছে ।”
@আল ফারহান বলছে, তারা উত্তর কোরিয়াকে নকল করার চেষ্টা করছে। ।
সৌদি ব্লগার ফুয়াদ আল ফারহান (@ আলফারহান )উল্লেখ করেছে যে সে নিজেও টুইটারের মাধ্যমে প্রস্তাবিত সন্ত্রাস বিরোধী আইনের বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে এবং এর পরবর্তী টুইটে সে লেখক জর্জ অরওয়েল-এর বিখ্যাত উপন্যাস ১৯৮৪-এর কথা উল্লেখ করেছে:
@আলফারহান: ২০১১ হচ্ছে, আসলে আমাদের জন্য ১৯৮৪-এর বাস্তবতা #Saudi #সৌদি সন্ত্রাসআইন
সৌদি আইনজীবী ফাহাদ আলমালিকি (@এফআলমালিকি) নতুন আইনের মূল বিষয়টি তিক্ত এবং ব্যাঙ্গাত্মক স্বরে ব্যাখ্যা করেছে:
@এফআলমালিকি: প্রশ্ন : সংজ্ঞা প্রদান করুন: আমি বিরক্ত । উত্তর: আমি তা করতে পারি না । এর ফলে হয়ত আমাকে জেলে যেতে হতে পারে। আমি যা বলতে পারি তা হচ্ছে; আমি আসলে প্রায় সুখী এক ব্যক্তি।
সৌদি সাংবাদিক ইমাম আল–কাহতানি (@ইমাকিউএইচ) [আরবী ভাষায়] সৌদি অভিজাত সম্প্রদায়ের কাছে দাবী করেছেন যে তারা প্রস্তাবিত এই আইন যাতে পাস না হয়, তার উদ্যোগ নেয়:
واجب اخلاقي على النخب الثقافية والدينية المقربة من السلطة مناصحتها بخطورة النظام المزمع اصداره وتداعياته الخطيرة على الحريات
সৌদি একটিভিস্ট ওয়ালেদ আবু আলখায়ের (@আবুআলখায়ের) [আরবী ভাষায়] এই ধরনের আইন অনুমোদন করার ক্ষেত্রে শুরা কাউন্সিলকে (ধর্মীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা) সতর্ক করে দিচ্ছে:
كمواطن سعودي أحمل أعضاء مجلس الشورى المسؤولية التاريخية الكاملة في تمرير نظام مكافحة الإرهاب الجديد
সৌদি আরবের মহিলা টুইটারকারী লুজাইয়ানা আলইয়ামানি (@লুজাইয়ানা আলইয়ামানি ) [আরবী ভাষায়] এই আইন যে কতটা অগণতান্ত্রিক সে বিষয়ে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন :
اسمعوا: هذا المشروع اغتصاب مشرع لأحلامنا! عار والله أن نعيش عراة من الأحلام لهذا الوطن
সৌদি আরবের আরেকজন টুইটারকারী মউজ ধাহধাহ (@মউজএমবি) [আরবী ভাষায়] এই আইনের বিষয়ে এই সাধারণ চিত্র এঁকেছে:
باختصار “قانون طوارئ جديد”
মাহা আলাসমারি (@মাহা_আলাসমারি ) [আরবী ভাষায়] ব্যাখ্যা করেছে কি ভাবে এই আইন দেশটির বাক স্বাধীনতাকে ধবংস করে ফেলবে:
ان طُبق هذا النظام سيأتي يوم يكون فيه وجود مُعتقل من كل عائله سعوديه بالسجون بتهمَه التعبير عن الرأي أمر طبيعي
@maha_alasmri: যদি এই আইন প্রয়োগ করা শুরু হয়, তাহলে এমন একদিন আসবে যেদিন নিজস্ব মতামত প্রদান করার জন্য সৌদি আরবের সকল পরিবারের মধ্যে থেকে অনন্ত একজনকে জেলে যেতে হবে!
মোহাম্মাদ খেলাওইয়া (@খেলাওইয়া ) [আরবী ভাষায়] এই আইনকে এমন এক প্রতীক হিসেবে দেখছে, যা দেখে মনে হচ্ছে যে সৌদি শাসকরা আরব বিপ্লবের এই সময়ে তা থেকে কোন শিক্ষা গ্রহণ করেনি:
صاحب القانون لم يستوعب دروس الثورات العربية ونتائج القهر والظلم وامتهان الكرامة وغياب المعارضة الوطنية الشريفة
খেলাওয়াই এর সাথে আরো যোগ করেছেনঃ
كلنا ضد الأرهاب والأرهابيين ولكن استخدام قوانين جائرة بأسمة لتجريم وسلب حقوق المواطن المشروعة هو ارهاب ايضا
@খেলাওয়াই : আমরা সকলেই সন্ত্রাসবাদ এবং সন্ত্রাসীদের বিপক্ষে, কিন্তু অন্যায় আইন নাগরিকদের বৈধ অধিকার কেড়ে নিতে যাচ্ছে। আর এই কাজটি করা হচ্ছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে। আর কাজটি নিজেই একটা সন্ত্রাসমূলক কাজ।
আরেকজন টুইটারকারী মাজেদ আলনিমার (@মাজেদআলনিমার ), এর সাথে বলছে :
@মাজেদআলনিমার : সৌদি সন্ত্রাস বিরোধ আইন সন্ত্রাসীদের বদলে সৌদি নাগরিকদের হত্যা করবে!
এই আইন যে কতটা ভয়ঙ্কর এবং সন্ত্রাসবাদকে মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে সৌদি কর্তৃপক্ষ যে কতটা ভুল করেছে সে কথা জানিয়ে মোহাম্মাদ আল রাশেদ (@অনলাইনমারস ) [আরবী ভাষায়] টুইট করেছে :
عندما حاربت أمريكا وأوروبا الإرهاب حاربته خارجيا لتحمي داخلها. ونحن نحارب الإرهاب داخليا لنحمي من؟