নানা ডারকোয়া সেকিয়ামাহ যা বলতে চান তা সবাই পছন্দ করে না। (সতর্কতা: এ ব্লগের কিছু উপাদান শুধুমাত্র প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য। ব্লগে প্রবেশ করতে চাইলে আপনার বয়স অবশ্যই কমপক্ষে ১৮ হতে হবে)। একজন পরিদর্শনকারী সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন:
আমি বিস্মিত। আপনি কি কেনিয়ান?… মনে হয় আপনি তাই। কারন কেনিয়ানরা যৌনতা দ্বারা দ্বারা আচ্ছন্ন। সম্ভবতঃ এটা ৫ম কেনিয়ান ব্লগ যারা যৌনতা বিষয়ে কথা বলছে।…. জনগণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন…
নানা ডারকোয়ার প্রতি উত্তর:
ইলিয়াস, আমি কেনিয়ান নই আমি ঘানার। সম্ভবতঃ স্বল্প জ্ঞানে মানুষকে বিচার করা আপনার উচিত নয়। কেনিয়দের দ্বারা লিখিত মাত্র ৫টি ব্লগ পড়েই আপনি ধারনা করেছেন যে, কেনীয়রা যৌনতা দ্বারা আচ্ছন্ন? কি বাজে বকছেন।
তাঁর অতিথি দ্রুত সাড়া দেন:
নানা আমি কোন সীদ্ধান্তে ঝাঁপিয়ে পড়ি নি। কেনীয় ও ঘানানিয়ানদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। আপনারা উভয়েই বান্টুও হতে পারেন। কাজেই আপনারা উভয় দেশের জনগণের যৌনতার বিষয়ে মুগ্ধতা থাকতে পারে। আপনি কি আসলেই মনে করেন যে এটা আলোকিত করার উপায়। মনে হচ্ছে আপনারা সবাই মিলে পশ্চিমা সংস্কৃতি অনুকরণের চেষ্টা করছেন। l দয়া করে নিজস্ব সংস্কৃতিতে দৃঢ় থাকুন এবং আপনি যা নন তা হবার চেষ্টা বাদ দিন।
নানা ডারকোয়ার ব্লগ আফ্রিকান মেয়েদের শোবার ঘর থেকে অ্যাডভেঞ্চার –শীর্ষক ব্লগে এ ধরনের মন্তব্য খুবই ব্যতিক্রমধর্মী। গত দুবছর ধরে অ্যাডভেঞ্চার আফ্রিকান নর-নারীদের যৌন ও যৌনতা বিষয়ে প্রাণখোলা ও অন্তরঙ্গ আলোচনার ফোরামে পরিণত হয়েছে। নানা ডারকোয়া আশা প্রকাশ করেন যে, দু’বছর আগে বন্ধের দিনে বান্ধবীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যে ব্লগের শুরু হয়েছিল তা অব্যাহত থাকবে। কিছু দিনের মধ্যেই তাঁরা (তাঁর বান্ধবীরা) নুতন নতুন বিষয় এবং গোপনীয়তার বিষয়গুলোকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল যা তিনি ইতোপূর্বে উপভোগ করেন নি। তিনি সে আলোচনাকে থামাতে চান নি। তাই তিনি তাঁর অন্তরঙ্গ বান্ধবী আবেনা গেকিয়ের সাথে একটি দল গঠন করেন এবং বিষয়টিকে অনলাইনে নিয়ে আসেন।
কিন্তু তিনি চান এ ব্লগটি যৌনতা বিষয়ে পরচর্চার চাইতে ভাল কোন আলোচনার স্থানে পরিণত হোক। নারীদের যৌন জীবন ও যৌন আনন্দের বিষয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করা উচিত মর্মে নানা ডারকোয়া দৃঢ়সংকল্প। তিনি বিশ্বাস করেন ঘানার বেশিরভাগ অঞ্চলে যৌনতা বিষয়ে ভিক্টরিয়ান রীতি-পদ্ধতিএখনো ব্যাপক ভাবে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যৌনশিক্ষা যা সর্বত্র প্রচলিত-তা অত্যন্ত সাদাসিধে- যদি তুমি সঙ্গম কর তবে গর্ভবতী হবে এবং এর একমাত্র সমাধান হলো সংযম। যাহোক প্রতিমাসে তাঁর সাইট পরিদর্শনকারী ১০,০০০ পরিদর্শকের মধ্যে কম সংখ্যকই চান –এ আলোচনা বন্ধ হোক।
বাহ এটা খুব মজার পাঠ। আমি এ মাত্র এ ব্লগটি খুজে পেয়েছি। কিছু কিছু পোস্টের বিষয়ে আমি শন্কিত। এ বিষয়ে আমাকে মন্তব্য করতে হবে।
নানা ডারকোয়া বিশ্বাস করেন ঘানানিয়ান সমাজে যৌন বিষয়ে ব্যাপক কৌতুহল রয়েছে, বিশেষতঃ তরুণ প্রাপ্তবয়ষ্কদের মধ্যে যারা যৌনতাকে আবিষ্কার করছেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। যৌনতা বিষয়ে সমাজে কোন খোলামেলা আলোচনা হয় না। তিনি মনে করেন সমাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে যৌনতা বিষয়ে রহস্য সৃষ্টি করে এবং এ বিষয়ে ভয় তৈরি করে ও এমন ধারনা তৈরি করে যে আপনি যা করছেন তা ভুল। বৈপরিত্য এই যে, অ্যাডভেঞ্চার বড় পরিসরে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার নিরাপত্তার ক্ষেত্র তৈরি করে। কখনো কখনো এর সাইটে মূল বিষয়ের চাইতে মন্তব্য দীর্ঘতর হয়। এটা পরিষ্কার যে,তাঁর পাঠকেরা তাঁদের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন করার, অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করার ও অন্যের অভিজ্ঞতা তুলে ধরার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
আপনার সব মন্তব্য পড়ে আমি মজার কিছু বিষয় পেয়েছি। আমি অবশ্যই বলবো পোস্ট এবং মন্তব্য পড়ে আমি অনেক কিছু শিখেছি। যদিও আমাকে বলতে হবে কিছু বিষয় বিস্তারিত আলোচিত হয় নি,তাই আমি ঠিক করেছি আমি আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে লিখবো।
মাঝেমাঝে ব্লগ প্রতিবেদন ও মন্তব্যগুলোর মধ্য দিয়ে অনেক অন্তরঙ্গ বিষয় উঠে আসে। অনেকে নানা ডারকোয়াকে এ ধরনের বিষয়ে লেখার উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য তাঁকে ‘সাহসী’ বলেন। তিনি খুব দ্রুতই তাঁর সাহসী খেতাবকে বাতিল করে দিয়ে বলেন তিনি বিশ্বাস করেন জনগণ যারা সত্যিকারের ঝুঁকি নিয়েছেন আসলে তাঁরাই সাহসী। সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণের চাইতে ব্লগ শুরু করার বিষয়টি তাঁর বহুবিধ কর্মক্ষেত্র যেমন- আফ্রিকান নারী উন্নয়ন ফান্ড-এর অনুদান সংগ্রহ এবং যোগাযোগ রক্ষার জন্য প্রোগ্রাম অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন, ফ্যাশন প্রতিষ্ঠান মাকসি পোষাক-এর যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা অথবা নারীবাদী মহিলাদের ক্ষমতায়ন গ্রুপ ফ্যাব ফেম-এর প্রতিষ্ঠাতা পদগুলোর বর্ধিত ভূমিকা। নারীবাদ তাঁর ব্লগের হৃৎপিণ্ড এবং তাঁর সকল প্রেরণার উৎস। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তাঁর নারীবাদী হওয়ার বিষয় নিয়ে ধৈর্য্য সহকারে তিনি একটি লেখা লিখেন:
ওহ এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে নারীবাদী হয়ে আমাদের বর্তমান বিশ্বে আমাদের যাপিত জীবনকে বদলাতে চান? মেয়ে ও নারীদের জন্য বৃহৎ পরিসরে নিরাপদ বিশ্ব সৃষ্টি করতে চান তাহলে আমার এ আন্দোলনে স্বাক্ষর করুন!
নারীবাদ এবং যৌনতা এ দুটো বিষয়ে সাইটটিতে প্রাধান্য পায়। ব্লগগুলো বহু দূরবর্তী সম্পর্ক,পারিবারিক সহিংসতা অথবা সমকামিতা নিয়ে বিশ্লেষন করে। মাঝে মাঝে তাঁর পাঠকদের দ্বারাও ব্লগের লেখা পরিচালিত হয়। আলোচনা ও মন্তব্যগুলো থেকে তিনি ব্লগের লেখার বিষয় নির্ধারণ করেন। যে বিষয়ে তিনি লিখতে চান সে বিষয়টি কতটুকু সংস্কৃতিগত ভাবে যৌনতার ধারণাকে কত গভীরে প্রভাবিত করে এবং তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উপর ভিত্তি করে তিনি লিখেন। নানা ডারকোয়া বিশ্বাস করেন আমাদের প্রশ্ন রাখা উচিত যে নারীরা তাঁদের জীবন-যাত্রার বিষয়ে আজকাল যে পর্যায়ের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে তা কি শুধু প্রথাগত আফ্রিকান সংস্কৃতির জন্য না কি বর্তমান সময়ের আরোপিত বিধি-নিষেধের জন্য।
মজার বিষয় হলো নানা ডারকোয়ার ব্লগে অতিথি লেখক ও মন্তব্যকারীরা পুরুষ।
কোন একজনের ব্লগ লিংক থেকে ক্রমাগত হুমকী আসায় বিষয়টি মজার পাঠে পরিণত হয়েছে। আমি নিজে একজন শ্বেতাঙ্গ পুরুষ এবং আশা করি আমার মন্তব্যকে স্বাগত জানানো হবে।
পুরুষদের এ সাইটে প্রবেশ করাকে তিনি দেখেন অগ্রাধিকার হিসেবে। তিনি বিশ্বাস করেন পুরুষের পণ্য সর্বসাধারণের স্থানে যৌন বিষয়ে খোলামেলা আলোচনাতে সহজে প্রবেশ করতে পারে। যদিও তাঁর লেখাগুলো পুরুষ সমাজের সমর্থন পাচ্ছে তবুও নানা ডারকোয়া নারীদের জন্যই লিখতে সঙ্কল্পবদ্ধ। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, নারী (এবং পুরুষ) উভয়েই অ্যাডভেঞ্চারগুলো চালিয়ে যাবেন এবং ব্লগটি প্ররোচিত বিষয়গুলোতে সমর্থক ও সাহায্যকারীদের মাধ্যমে সীমানা পেরিয়ে মহাদেশব্যাপী বিস্তৃত হবে।