ভুটান: দক্ষিণ এশিয়ার নেতারা সার্ক শীর্ষ সম্মিলনের জন্য একত্র হচ্ছেন

ফ্লিকারে সার্ক ফটোগ্রাফি পুল থেকে সেরা কিছু ছবি। তুলেছেন সামিহ (ইজ্জো)। সিসি বাই লাইসেন্স।

ফ্লিকারে সার্ক ফটোগ্রাফি পুল থেকে সেরা কিছু ছবি। তুলেছেন সামিহ (ইজ্জো)। সিসি বাই লাইসেন্স।

ভুটানের ছোট রাজধানী থিম্পু এখন বেশ ব্যস্ত, প্রস্তুত হচ্ছে আসন্ন সার্ক (দক্ষিণ এশিয়া সংস্থা আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা) সম্মিলনের জন্য যা এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে (২৮-২৯ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হবে। কাঠামোগত অপ্রতুলতার কারণে তিনবার এই সুযোগ ছেড়ে দিয়ে এই প্রথমবার ভুটান এই শীর্ষ বৈঠক আয়োজন করছে।

তবে, দেশটা খুবই গর্বিত যে তারা এই বৈঠক আয়োজন করতে পারছে সংস্থাটির রৌপ্য জয়ন্তীর বছরে। এলাকার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্থা সার্ক প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালের ৮ই ডিসেম্বর তারিখে এর চার্টার গৃহীত হওয়ার মাধ্যমে আর বর্তমানে এতে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভূটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কা সদস্য দেশ হিসাবে আছে। ভুটানি সংবাদপত্র জানিয়েছে যে আশা করা যাচ্ছে এইসব দেশ থেকে ৪৫০ জন অংশগ্রহণকারী আর ১৫০ জন সাংবাদিক উপস্থিত থাকবেন আর আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসাবে চীন, জাপান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, মরিশাস আর ইরান থাকবে।

দ্যা সাউথ এশিয়া ব্লগে ফিরোজ জানিয়েছেন:

ষষ্ঠদশ সার্ক শীর্ষ বৈঠকের ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়েছে বৈঠকের তথ্য জানানো আর বিভিন্ন কাঠামোগত সহায়তার জন্যে।

ভূটানের রাজধানী থিম্পুতে আট দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা একত্র হবেন আর রোডম্যাপ তৈরি করবেন গ্লোবাল ওয়ার্মিং ঠেকাতে পরিবেশ রক্ষার, দারিদ্র্য বিমোচন, মূল অর্থনৈতিক এলাকায় সহযোগিতা দেয়া আর সন্ত্রাস দমন।

মালদ্বীপের ব্লগ মালদ্বীপ লাইভ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েসের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে বাংলাদেশ আর মালদ্বীপ এই দুই দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে সব থেকে বেশী বিপদের সম্মুখীন হবে।

পরিবেশ বিজ্ঞানীদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেছেন যে মালদ্বীপ তার অস্তিত্ব হারাবে সমুদ্রের পানি বাড়ার ফলে আর বাংলাদেশ তার উপকুলে ২০ শতাংশ নিম্ন ভূমি হারাবে যার ফলে আড়াই কোটি মানুষ স্থানান্তরিত হবে।

তিনি বলেছেন থিম্পুতে অনুষ্ঠিত সার্ক মন্ত্রীদের কাউন্সিল জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ঘোষণা চূড়ান্ত করবেন।

এ ছাড়া এই বৈঠকে বাণিজ্য আর সার্ভিস, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে দ্রুত সাড়া দান আর পরিবেশগত সহযোগিতা আর দক্ষিণ এশিয়া উন্নয়ন ফান্ড নিয়ে চুক্তি সাক্ষরের আশা করা হচ্ছে।

আরো ধারণা করা হচ্ছে যে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ড: মনোমোহন সিং আর তার পাকিস্তানী পক্ষ ইউসুফ রাজা জিলানী, এই সুযোগ নিতে পারেন দুই দেশের সন্ত্রাস বিরোধী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করতে বিস্তারিতভাবে, যদিও হিন্দু্স্তান টাইমস জানিয়েছে যে এই দুই নেতা দেখা করবেন না।

ব্লগার আনি তারাগনাতে বলেছেন:

দুই নেতা যদি একত্র হন, তা হবে মিশরের শারম-এল-শেখ এ গত জুলাই এ কথোপকথনের পরে প্রথম সাক্ষাৎ। ইন্দো-পাকিস্তান আলোচনা ২০০৮ সালের নভেম্বরে মুম্বাই সন্ত্রাসী হামলার পরে থেমে যায়। যদিও দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী গত ২৫শে ফেব্রুয়ারী নতুন দিল্লীতে আলোচনায় বসেন, এর থেকে কোন ফল হয়নি কারণ ভারত ইসলামাবাদের উপরে জোর দিচ্ছিল তাদের ভূমিতে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক যেটা ছড়িয়ে পড়ছে তার বিরুদ্ধে আরো বেশী কিছু করতে।

বিশ্ব ব্যাঙ্কের দক্ষিন এশিয়া অঞ্চলের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এজাজ ঘনি একটি ব্লগ পোস্টে জোর দিয়েছেন যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আর দারিদ্র্য বিমোচনে দক্ষিণ এশিয়াতে সন্ত্রাসবাদ আর অভ্যন্তরীণ সংঘাতের সাথে যুদ্ধ করা প্রয়োজন:

দক্ষিণ এশিয়ার সরকার বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ এশিয়া আর বিশ্বের প্রেক্ষাপটে, মনে হতে পারে যে সেনাবাহিনী বা স্থানীয় মিলিশিয়া সন্ত্রাসবাদ দমনে খুব বেশী কার্যকর হয়নি।

যে কোন সন্ত্রাসবাদ বিরোধী পদক্ষেপের জন্য সীমান্তের বাইরে সহযোগিতা জরুরি। আঞ্চলিক সহযোগিতার অনেক সুযোগ আছে সংঘর্ষ কমাতে, কিন্তু দক্ষিণ এশিয়াতে এই কৌশল খুব কম ব্যবহার করা হয় সন্ত্রাস দমনে।

ভুটানি শরণার্থী বিষয়ে ভুটানি বিপ্লবী অধিকারী তার ব্লগে বলেছেন:

নেপালের ভালো সুযোগ আছে এপ্রিলের শেষে থিম্পুতে সার্ক সামিটে এই বিষয়টা তোলার।

সব দেশ চাচ্ছে এই সুযোগ নিয়ে তাদের মধ্যকার পার্থক্যের নিরসন করতে, একই সাথে আশা আছে যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যেমন দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি আর জলবায়ু পরিবর্তনকে আঞ্চলিক রাজনীতি চাপা দেবে না।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .