বেশ কয়েকটা ধারাবাহিক বিস্ফোরণ আর গুলির আওয়াজ শোনা গেছে, মনে হচ্ছে মুম্বাই শহর হামলার সম্মুখীন হয়েছে। মিডিয়ার খবর অনুযায়ী শহরের সাতটি জায়গা হামলার শিকার হয়েছে। অভুতপূর্ব এই ধরনের সন্ত্রাসী হামলায় গুলি, গ্রেনেড ও নানা বিস্ফোরণের সমন্বয়ে আক্রমণ চালানো হয়েছে সিনেমা হল, হোটেল, হাসপাতাল আর অন্যান্য জনবহুল স্থানে। একটি মিডিয়া রিপোর্ট জানাচ্ছে:
অন্তত চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে আর ১৫ জন আহত হয়েছে যখন বুধবার রাত্রে অচেনা বন্দুকধারীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায় দক্ষিন মুম্বাইএর অন্তত চারটি স্থানে।
এক লাইনের একটি পোস্টে, আ ভিঊ অন মার্কেট এন্ড লাইফ এই ঘটনার ফলে যে বিভ্রান্তি আর ধাক্কা লেগেছে তা জানাচ্ছে:
আমার জানালার বাইরে সাইরেন। দয়া করে এটাকে নিরাপদ রাত্রি বানিয়ে দেন।
টুইটারে বেশ কয়েকজন মুম্বাই থেকে মেসেজ দিচ্ছেন আর মনে হচ্ছে খুব কম সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। এ নিয়ে সন্দেহ আছে যে এটা কি আসলেই সন্ত্রাসী হামলা। মুম্বাই বিভিন্ন গুন্ডদের মধ্যে মারামারি দেখেছে, কিন্তু এক দশকের মধ্যে এরকম সন্ত্রাসের খবর শোনা যায়নি।
ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য একটি অনলাইন কমিউনিটি সাম্প্রতিক ঘটনা পোস্ট করছে:
১০ মিনিট আগে (ভারতীয় সময় রাত ১০:৪৫) গোলাগুলি আর বিস্ফোরণর খবর পাওয়া গেছে দক্ষিণ মুম্বাইএ। এখন পর্যন্ত নিহতের খবর পাওয়া যায় নি। ১৫ জন আহত আর একজন পুলিশ আহত হয়েছে। গুলি করার জন্য এ কে ৪৭ অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
এ পযন্ত নিশ্চিত ৫টা গোলাগুলির ঘটনা। ৩ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে!
রেল স্টেশন (ছত্রপতি সিভাজি টার্মিনাল), তাজ হোটেল, কোলাবা কজওয়ে আর ভিটি স্টেশনে গুলির খবর পাওয়া গেছে। প্রতিবেদন নিশ্চিত করেছে যে এটা সন্ত্রাসী হামলা। ভিটি স্টেশনে আশংকা করা হচ্ছে যে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।
রেট্রিবিউশন্স এ একটা পোস্ট আমাদেরকে মনে করিয়ে দিয়েছে যে ভারতে সন্ত্রাসী হামলার ভয় একটা বাস্তবতা। স্টাকাটোতে একটা পোস্ট একই ধারণা তুলে ধরেছে- ভারতের বিভিন্ন শহরে সম্প্রতি যেসব চিন্তার অতীত সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে:
আমরা যখন কথা বলছি তখনি বোম্বেতে বোমা বিষ্ফোরিত হলো। ফোন জ্যাম হয়ে গেছে, পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। এর আগেও আমি এর ভিতর দিয়ে গেছি। তাই আতঙ্কিত হচ্ছিনা।
আর একটা লেখা ভয় আর অসহায়ত্ব তুলে ধরেছে।
সংবাদে এইসব দেখা খুবই ভীতিকর।
আমি ভয়ে খুবই কাঁপছি। খবরে এইভাবে আমি কখনো ধাক্কা খাইনি। দূরত্বের কারনে এটা হচ্ছে। বোম্বেতে থাকলে আমি হয়তো এতো মনোযোগ দিয়ে সংবাদ শুনতাম না।
শহরের লোক শুধুমাত্র ধাক্কাটাই ব্লগ করছে। রাত্রে অফিসের সময় শেষ হওয়ার পরে হামলা হয়েছে। হিমাদ্রী লিখেছেন:
কোলাবা থেকে তার এক বন্ধু সবে মাত্র ফিরেছে। বাড়ে মিয়া যেখানে সে খাচ্ছিল তার কাছে গুলী চলে। আর আমরা যখন তা নিয়ে আলোচনা করছি আর সেলফোনে কোন নাম্বার ডায়েল করছি, কয়েক সেকেন্ড বা মিনিটের ব্যবধানে আমরা তিনটা বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। মাটি কেঁপে গেল। এটা অন্য সাধারণ কোন রাত না।
আমরা টেলিভিশন খুললাম। বাইরে তখনো গুলি চলছে, ৪-৫ রাউন্ড একবারে। আমি এটা যখন লিখছি, গাড়ী, পুলিশের গাড়ীর সাইরেনের আওয়াজ আমার কানে বাজছে। আমার বসার ঘরে ছয়জন খবর শুনছে। তাদের মধ্যে দুইজন লিওপোল্ড এ বসে ছিল, যেখানে আগে গুলি চলেছে। একজন ব্রোকার, আর অন্যজন তার বন্ধু। আমি আমার রুমমেট এখানে আছি। আন্টি তার রুমে আছেন। ঘুমের ব্যাঘাত হওয়ায় বাবলু সবাইকে গালি দিচ্ছে। আর আমরা একসাথে আছি। শুধুমাত্র একাত্ম হয়ে এর বিরুদ্ধে লড়া যাবে।
এই পোস্ট যখন লেখা হচ্ছে তখনো, শহরে আরো হামলা আর সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এই পোস্টটি মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে গ্লোবাল ভয়েসেসের বিশেষ কাভারেজের অংশ।