যদি এটি হাসের মতো হাটে আর ডাকে তাহলে ওটা সামরিক শাসন হতে বাধ্য। প্রেসিডেন্ট মোশারফ তার ইচ্ছা মতো একে যা ইচ্ছা তাই বলতে পারেন, ইমারজেন্সি বা আমের-জেন্সি (যেমন তিনি তার টেলিভিশনের বক্তৃতায় উচ্চারন করেছিলেন) কিন্তু এটি সব দিক থেকে সামরিক শাসন। এই ধরনের জরুরী অবস্থা ঘোষনা আইনগত দিক প্রশ্নবিদ্ধ আর সরকারি যে কারন বলা হচ্ছে (সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ) তা হাস্যকর। মোশারফ বলতে পারতেন যে এলিয়ানরা আক্রমন করছে তাহলে তা হয়তো বেশী বিশ্বাসযোগ্য হতো।
মাইন ক্যাম্ফ ব্লগের মিনো তার স্বভাবসুলভ স্টাইলে এই পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন:
যাক, শেষ পযন্ত ঢাকনা খুলে গেছে। হাসি মাখা মুখোশ ভেদ করে বেরিয়ে আসছে আসল চেহারা। প্রিয় নেতা চ্যাপলিনের মোচটি ছাড়া আমাদের সামনে তার ক্ষুদ্রতম সম্মান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। একজন সাহসী বাতি আমাদের অদ্ভুত আর অপূর্ব সময়ের জন্য। একজন দু:খ বিলাসি সাদ্দাম হোসেন তৈরি হচ্ছে। তার খাকি পোষাকে হিটলারের প্রতিভু যাকে আমরা ডান হাত তুলে হিটলারী কায়দায় সেলুট করবো আর জিগ হাইল বলবো (অথবা নিজেদের গর্তের ভিতর ঢুঁকে আবার ঘুমিয়ে পড়বো)।
ধর্মীয় ব্যাপারে বাড়াবাড়ি আর সন্ত্রাস দমনের জন্য সরকার উকিল, বিচারক, মিডিয়া আর মানবাধিকার কর্মীদের নিয়ন্ত্রন করছে যেখানে আমার ধারনা ধর্মীয় গোড়া আর সম্ভাব্য সন্ত্রাসীরা হাফ ছেড়ে তাদের কাজ করছে।
পাক এফেয়ার্স হালকা মার্শাল ল এর কারন ব্যাখ্যা করেছে:
সবকিছুর মাঝে পড়ে মোশারফ চেষ্টা করছে একটি সম অবস্থানে আসার যেখানে লোককেও সন্তুষ্ট রাখা যাবে এবং ন্যাটো আর আমেরিকাকে পাকিস্তানের ভূমিতে প্রবেশ থেকে দূরে রাখা যাবে। মোশারফের এখনকার অবস্থায় থাকা কঠিন কারন সে একদিকে দেশের সম্মান তুলে ধরার চেষ্টা করছে অন্যদিকে আমেরিকাকে যাতে ক্ষেপানো না হয় সে চেষ্টাও তাকে করতে হচ্ছে।
প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্ট আর হাই কোর্টের বেশিরভাগ বিচারকদের “পুরোনর বদলে নতুন” এই নীতির আওতায় সরিয়ে দেয়া হয় আর এর ফলে যে বিক্ষোভ হয় তার জন্য বেশ কিছু উকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। সকল বেসরকারী পাকিস্তানী চ্যানেল বন্ধ আর শোনা গেছে যে জং সংবাদপত্র জরুরী অবস্থার উপর একটা প্রকাশনা করতে গেলে তা থামানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু মোশারফ তার বক্তৃতায় বলেছেন যে তিনি এখনো সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশাস করেন। আমার মনে হয় সরকারের নিয়ন্ত্রনের স্বাধীনতা যেটা তারা ভোগ করে তার কথা তিনি বলছিলেন ।
সিলসিলা-এ-মাহ-ও-সাল ব্লগ মোশারফের সমর্থকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছেন, আর উইন্ডমিল ব্লগ একটি রুপকথার গল্প বলেছে যা পাকিস্তানের সংবাদপত্রে মতামতের হিসাবে বিশালাকারে প্রকাশের যোগ্য।
গতকাল গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল যে কিছু অফিসার তার ক্ষমতার অপব্যবহারে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গৃহবন্দী করেছে। এর ফলে করাচির শেয়ার বাজার একটি বড় ঝাকুনি খায়। কিন্তু ফ্রিডম এন্ড ডেমোক্রেসি ব্লগ জিইও নিউজ এর একটি ভিডিও ক্লিপ দেখিয়েছেন যেখানে সুপ্রীম কোর্ট সবশেষ যে আদেশ দিয়েছে যে সামরিক কমান্ডার আর কমকর্তারা কোন ধরনের অসাংবিধানিক কার্যে অংশগ্রহন করতে পারবে না তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। হয়তো ওই গুঞ্জনে কিছু ছিল। (নিউজ ক্লিপটি উর্দুতে কিন্তু আদেশটি ইংরেজিতে পড়ে শোনানো হয়)।
বৈঠক ব্লগ জরুরি অবস্থা সম্পর্কে মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
উপস্থাপকরা বলছেন যে জনগন ক্ষুব্ধ (জরুরী অবস্থা জারীর জন্য)। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন চ্যানেলে যে উপস্থাপক নিজে বেশি ক্ষুব্ধ।
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া মোশারফের ভাষনের বিষদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রক্র্যাস্টিনেশান ব্লগ। (তার লেখায় ভাষনের ভিডিও আর উদ্ধৃতি আছে):
আপনারা মোশারফের বক্তৃতায় “আমি” টা লক্ষ্য করবেন, যেমন “আমি এটি করেছি, আমি ওটি করেছি” আর তার সব উক্তি নিজের আর পাকিস্তান সম্পর্কে আর তিনি যা করছেন তা সব পাকিস্তানের জন্যই করছেন। এটি অবশ্য এই ধরনের বক্তৃতার মূল বিষয়, আমার এখনো জিয়ার বক্তৃতা মনে আছে।
মেট্রোব্লগিং লাহোর প্রেসের মতামতের একটি সারসংক্ষেপ দিয়েছেন, আর মেট্রোব্লগিং ইসলামাবাদ ডন নিউজ চ্যানেলের লাইভ ওয়েবকাস্টের এর লিংক তুলে ধরেছেন।
পাকিস্তানের ব্লগগুলোর পরিক্রমা আপাতত এটুকুই। আমি একটা সংক্ষিপ্ত ভ্রমনে করাচিতে যাচ্ছি। এটা সংক্ষিপ্ত কারন আমার স্ত্রী সামরিক শাসন (আরো ঠিকভাবে বৈবাহিক শাসন) আরোপ করেছে আমার এই সফরের ব্যাপারে। সে এর কারন বলেছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। আহা, যদি মোশারফ এমন কারন দেখাতে পারে তাহলে আমার স্ত্রী কেন পারবে না।
- ওমর আলভি