গণমাধ্যম ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের একটা জটিল সম্পর্ক রয়েছে। গ্লোবাল ভয়েসেসের অ্যাডভক্স গবেষণা উদ্যোগ পরাধীনতা পর্যবেক্ষক জালের মতো বিস্তৃত বা ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের ক্রমবর্ধমান ঘটনাকে পরীক্ষা করে। এই অংশটি পরাধীনতা পর্যবেক্ষকের গবেষণা থেকে বেরিয়ে আসা এল সালভাদর সম্পর্কিত ধারাবাহিক প্রতিবেদনের নির্বাহী সারাংশ। এখানে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।
এল সালভাদর ১৯৯২ সালে সরকার ও গেরিলা আন্দোলনের মধ্যে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে একটি গৃহযুদ্ধ (১৯৮০-১৯৯২) শেষ করলে একে জাতিসংঘ বিশ্বজুড়ে শান্তি আলোচনা ও সংঘাত সমাধানের উদাহরণ হিসেবে দেশটিকে উপস্থাপন করে। ২০১৯ সালে রাষ্ট্রপতি নায়েব বুকেলের ক্ষমতায় আসার পর থেকে এল সালভাদর কর্তৃত্ববাদ ও জনপ্রিয়তাবাদের একটি নতুন রূপের উত্থানের একটি কেস স্টাডি হয়ে উঠছে।
মাত্র তিন বছরে বুকেলে বিটকয়েনের ব্যবহারকে দেশে বৈধ দরপত্র, সালভাদোরীয় রাজনীতিতে দুর্নীতি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের বিরুদ্ধে প্রথাবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির আখ্যান ও বক্তৃতা প্রচার করে সহস্রাব্দ চিত্রের একটি মিশ্রণ দিয়ে একটি জটিল রাজনৈতিক ঘটনা তৈরি করেছেন যাকে অনেকে “বুকেলেবাদ” বলে অভিহিত করেছেন। বুকেলে দ্রুত একটি নতুন রাজনৈতিক দল নুভাস আইডিয়াস তৈরি করেছেন যা আইনসভার ৮৪ জন সাংসদসহ দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় সরকারগুলির একটি বৃহৎ সংখ্যাগরিষ্ঠকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই সমর্থন নিয়ে ২০২১ সালের মে মাসে বুকেলে সর্বোচ্চ আদালতের সাংবিধানিক কক্ষের পাঁচজন বিচারক ও অ্যাটর্নি জেনারেলের বিতর্কিত অপসারণের দাবি করেন। এভাবে বুকেলে নির্বাহী, আইনসভা এবং সর্বোচ্চ ন্যায়বিচারিক আদালতের গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক কক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে সম্প্রতি সংবিধানের পুনর্ব্যাখ্যা করে বুকেলে ২০২৪ সালে পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা জাগিয়েছেন।
রাজনীতিতে প্রবেশের আগে বিজ্ঞাপন শিল্পে কর্মরত কলেজ শেষ না করা বুকেলে তার অনুসারীদের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে সামাজিক গণমাধ্যম বিশেষ করে টুইটার ও অন্যান্য মঞ্চ ব্যবহারের জন্যে স্বীকৃত হয়েছেন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকে বুকেলে সরকারি কর্মকর্তাদের আদেশ প্রদানে, ডিক্রির অনুমোদন ঘোষণা করতে এবং দেশের যেকোনো অনুষ্ঠানে প্রতিক্রিয়া জানাতে টুইটার ব্যবহার করেছেন।
এই প্রতিবেদনে দুটি বড় ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে: স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে পেগাসাস গোয়েন্দা সরঞ্জাম ব্যবহার এবং একটি সংবাদের বেনামী উৎস না প্রকাশের জন্যে দুই নারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বুকেলের আইনি উপদেষ্টার হুমকি। দ্বিতীয় ঘটনাটি নারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি বুকেলে ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রচারিত অনলাইন হয়রানি ও হুমকি এবং সামাজিক গণমাধ্যমে বুকেলের সমর্থক, ট্রোল কেন্দ্র ও সরকারপন্থী প্রভাবশালীদের এসবের প্রতিলিপির একটি প্রবণতা উপস্থাপন করে।
এই দুটি প্রধান ঘটনার বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই প্রতিবেদনটি মূল গবেষণা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছে: এল সালভাদরে ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের মূল উদ্দেশ্য, পদ্ধতি ও প্রতিক্রিয়া কী? এইভাবে, এই গবেষণাটি এল সালভাদরে ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের গঠনের প্রধান বৈশিষ্ট্য, কৌশল ও আখ্যানগুলিকে চিহ্নিত করে। উপসংহারে, বুকেলে ও বুকেলেবাদ জনপ্রিয়তাবাদ ও কর্তৃত্ববাদী চর্চাভিত্তিক একটি রাজনৈতিক প্রকল্প তৈরি করছে বলে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে এবং এই প্রক্রিয়ার একটি মূল উদ্দেশ্য হলো পেগাসাসের মতো গোয়েন্দা সরঞ্জামের প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বাধীন সাংবাদিকতার ভূমিকাকে অসম্মান এবং আইনিভাবে সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বর ও রাজনৈতিক বিরোধীদের একটি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
ফলে ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের এই রূপটি এল সালভাদরে অনলাইন ও অফলাইন মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করা ছাড়াও সারা বিশ্বের অন্যান্য কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠী অনুপ্রাণিত ডিজিটাল দমন ও নজরদারির গতিশীলতাকেও প্রতিফলিত করে।
এখানে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়ুন।