এই প্রবন্ধটি লিখেছে ইররাওয়াদ্দির প্রবন্ধকার পিইয়াই কেইয়া। ইররাওয়াদ্দি মায়ানমারের এক স্বাধীন সংবাদ বিষয়ক ওয়েবসাইট। লেখা বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে গ্লোবাল ভয়েসেস-এ এই প্রবন্ধটি পুনরায় প্রকাশ করা হয়েছে।
এর অপরূপ সৌন্দর্য সত্ত্বেও, বাজে পরিবহন ব্যবস্থা মায়ানমারের চিন প্রদেশের উন্নয়নের পথে এক বড় বাধা। বিশেষ করে বর্ষাকালে, সেখানে বাস করা যে কারো কাছে এই বিষয়টিকে সত্য বলে মনে হবে।
যখন বর্ষাকাল শুরু তখন এই দরিদ্র অঙ্গরাজ্যে শুরু হয় ভূমিধ্বস। এই সময়ে প্রায়শ যানগুলো নিয়ন্ত্রণ হারায় কারণ সে সময় উত্তর-পশ্চিম মায়ানমারের পাহাডি এলাকার কর্দমাক্ত রাস্তায় সেগুলোকে একেবেকে চলতে হয়। এখানকার রাস্তাগুলো এমন সরু যে একটি গাড়িও এই রাস্তা দিয়ে চলতে পারে না। যার ফলে গাড়ি ও মানুষ জ্যামে আটকা পড়ে। রাস্তা পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই তাদের ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৮,০০০ ফুট উপরে এই স্থানে এসে পথচারীরা দেখতে পাবে বিস্ময়কর সব পাহাড়, যাদের ঘিরে রয়েছে মেঘের দল। আর সেই সাথে আতঙ্ক তৈরি করা পথ। অথবা এমন সব পাহাড়, যেখানে কাদার মাঝে দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া চার চাকার একটা গাড়ি কাদায় উল্টে আছে। যে ব্যক্তি ছোট একটা গাড়িতে ভ্রমণ করছে, তার জন্য হাটু সমান কাদা অথবা গোড়ালি উঁচু করে গাড়ি ঠেলা অনিবার্য।
কালাই থেকে টেডিম-এর দূরত্ব প্রায় ৬০ মাইল, কিন্তু এইটুকু দূরত্ব পার হতে ১২ কখনো কখনো ঘন্টাও লেগে যেতে পারে। বৃষ্টি, ভূমিধ্বস এবং রাস্তায় সংঘঠিত দুর্ঘটনার কারণে এতটা সময় লেগে যেতে পারে। হৃদয়ের মত মত দেখতে বিখ্যাত রিড লেক-এর দূরত্ব টেডিম থেকে প্রায় ২০ মাইল যা এর কাছে ভারত-মায়ানমার সীমান্তে অবস্থিত। বাণিজ্যের উদ্দেশ্য তৈরি করা দুটি দেশকে যুক্ত করে যে সেতু তার উপরে দাড়ালে দুটি দেশের মধ্যে সম্পূর্ণ বৈপরিত্য ধরা পড়ে। গোধুলির ধুলো সরে গেলে চাঁদের আলোয় ভারতের মিজোরাম রাজ্যকে জ্বলজ্বল করতে দেখা যায় আর মায়ানমারের এলাকা রিহখাওয়াদারকে দেখা যাবে টিম টিম করে জ্বলছে, যেন অন্ধকারে জোনাকিরা কেবল জ্বলতে শুরু করেছে।