
সাম্প্রতিক থাই সামরিক অভ্যুথানের প্রথম বার্ষিকীতে থাই ছাত্ররা এক প্লাজার সামনে জড়ো হয়। পরে থাই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। ছবি এলএলটিডি-এর ফেসবুক পাতা থেকে নেওয়া।
মে ১০১৪-এ সংঘঠিত সামরিক অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকীতে বিক্ষোভ প্রদর্শনের দায়ে থাই পুলিশ ডজন খানেক ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে। এই লেখাটি যখন লেখা হচ্ছিল সে সময় পর্যন্ত সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য ৪৮ জন ছাত্রকে আটক করা হয়।
দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার ইতি টানার পদক্ষেপ হিসেবে সামরিক বাহিনী দেশটিতে এক অভ্যুত্থান ঘটায়। তারা প্রচার মাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে এবং বিক্ষোভ সহ প্রকাশ্য স্থানে পাঁচ বা তার অধিক নাগরিকের সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ২০১৪ সালের সমাপ্তির পূর্বে এই সরকার অর্ন্তবর্তীকালীন এক আইন রচনা করে যার ভিত্তিতে দেশে সামরিক বাহিনী দ্বারা নিয়োগ প্রাপ্ত বেসামরিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সামরিক বাহিনীর প্রধান প্রায়ুত চান ও-চাহ প্রধান মন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়।
সামরিক বাহিনীর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, অনেক থাই নাগরিক, বিশেষ করে তরুণরা দেশটিতে গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান জানাচ্ছে। তারা বার বার স্বাধীন প্রচার মাধ্যম, উন্মুক্ত নির্বাচন, এবং বেসামরিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে।
Banner says “Object the coup” rally @ Khon Kaen RT @moui: นศ.ดาวดิน ชูป้ายต่อต้านรัฐประหารในวัน #1AnniversaryThaiCoup pic.twitter.com/EPe3oqdV6J
— Zashnain Zainal (@bedlamfury) May 22, 2015
ব্যানারে লেখা আছে “ অভ্যুথানের বিরুদ্ধে আপত্তি” নামক র্যালি।
গত এপ্রিলে সামরিক আইন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় কিন্তু এখনো সরকারের মাঝে তা ক্ষমতা অসীম।
আইএল গবেষক দল গত বছর সামরিক বাহিনী দ্বারা বেশ কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উদ্ধৃত করেছে :
এই অভ্যুত্থানের পর, অন্তত ৭৫১ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এনসিপিও [সামরিক বাহিনী সমর্থিত সরকার] মামলার আদেশ জারি করেছে। অন্তত ৪২৪ জন ব্যক্তির স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেককে “বাধ্যতামূলক আচরণ খাপ খাইয়ে নেওয়ার” মত প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, যাতে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখল করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তারা পুনরায় নিজেদের শিক্ষিত করে নিতে পারে এবং এরপর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে ১৬৩ জন ব্যক্তিকে রাজনৈতিক অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অন্তত ৭১ গণ কার্যক্রমে সামরিক বাহিনী হয় হস্তক্ষেপ করেছে অথবা বাতিল করেছে।
364 days after the coup, at least 428 people arrested, 124 civilian tried at Military Court http://t.co/lNstO8yUgk pic.twitter.com/6Zt58dhrGD
— iLawFX (@iLawFX) May 21, 2015
অভ্যুত্থানের ৩৬৪ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর অন্তত ৪২৮ জন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ১২৪ জন ব্যক্তিকে সামরিক আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাংবাদিক সাকসিথ সায়াসোমবাট সামরিক বাহিনীর বাড়াবাড়ি রকমের নিয়ন্ত্রণের আরোপের সমালোচনা করেছে:
এটা শুধু এক বাজে শিক্ষকের মত আচরণ নয় যে আশা করছে তার ছাত্ররা অনুগত তোতাপাখির মত বুলি আওড়াবে, সাথে সে আশা করছে যে সবাই হবে উদ্ধত এক যা সকল কর্মকাণ্ড দেখেও না দেখার ভান করবে।
পুলিশ গতকাল যে সমস্ত ছাত্রদের গ্রেফতার করেছে নীচে তাদের কয়েকজনের ছবি তুলে ধরা হল:
Cops say detained for ‘risky behavior’ RT @aofpressman: เบื้องต้นตำรวจยังไม่แจ้งข้อกล่าวหา เพราะมีพฤติกรรมสุ่มเสี่ยง pic.twitter.com/4RuAEeg94A
— Zashnain Zainal (@bedlamfury) May 22, 2015
গ্রেফতারকৃতরা বলছে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ আচরণের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। পুনরায় টুইট করুন
13 Khon Kaen university students held for protesting against the May 22 coup http://t.co/ClYcTsF63m pic.twitter.com/FJXtQtyy05
— ThaiPBS English News (@ThaipbsEngNews) May 22, 2015
২২ মে অভ্যুথানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় খোন কায়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ জন ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে
Police starts arresting nonviolent students!! @LLTD_TU #ThaiCoup #1AnniversaryThaiCoup pic.twitter.com/CS3lAW5bAI
— TH Students fr Democ (@TSCD_EN) May 22, 2015
পুলিশ অহিংস বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করা শুরু করেছে!!
Activists from Permas (students and youth of Patani) are also detained at police station http://t.co/j0ScsdWbEz pic.twitter.com/fDkYaC6XJ2
— Zashnain Zainal (@bedlamfury) May 22, 2015
পরেমাস–এর (পাটানির ছাত্র ও তরুণ) একটিভিস্টদেরও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
Students said that cops didn't care about their activist friend who needs medical attention. http://t.co/42YnV1knSO pic.twitter.com/Wm09yvBBq4
— Zashnain Zainal (@bedlamfury) May 22, 2015
ছাত্ররা বলছে যে পুলিশ তাদের একটিভিস্ট বন্ধু, যাদের চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের বিন্দুমাত্র যত্ন করছে না।
একটি দল যারা নিজেদের সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট-এর (ওয়াইপিডি) তরুণ তুর্কি হিসেবে দাবি করছে তারা এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আসা শাসকদের বিরুদ্ধে প্রদান করা বিবৃতি প্রকাশ করেছে :
আমরা কোন গণতান্ত্রিক সমাজ গড়তে সক্ষম হব না, যদি আমাদের মাঝে স্বাধীনতা, মুক্তি, অধিকার ন্যায়বিচার এবং মিত্রতার অভাব রয়ে যায়। আমরা বিশ্বাস করি যে সমাজের মাঝে প্রতিরোধ গড়ে না তোলা হলে শান্তি অর্জন সম্ভব নয়। কেবল ক্ষমতা, অর্থনীতি এবং রাজনীতির মাধ্যমে যদি সাম্য ও ন্যায় বিচার গড়ে তোলা সম্ভব হয় কেবল তাহলে শান্তি অর্জন সম্ভব। .
সামরিক বাহিনীর এই অভ্যূত্থানের ঠিক এক বছর পরেও থাইল্যান্ড এখনো রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। সাধারণ নাগরিকরা রাজনীতিবিদের মাঝে এই নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চলতে থাকা সংঘর্ষের ইতি চায়, কিন্তু সামরিক কোন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের মুল্যের বিনিময়ে নয়, যারা দ্রুত জনগণের স্বাধীনতাকে নাকচ করে দেয়।