চীনা নেটিজেনরা দ্রুত ছড়িয়ে পড়া মঞ্চ ধ্বসের ভিডিওতে প্রতীকীবাদ খুঁজে পাচ্ছেন

Cartoonist Biantailajiao capture the collapse of China Dream with his drawing.

কার্টুনিস্ট বিয়ানতাইলাজিয়াও তাঁর অঙ্কনের মাধ্যমে চীনা স্বপ্ন পতনের চিত্র ধারণ করেছেন।

মাটি থেকে পাঁচ মিটার উঁচু একটি মঞ্চ ভেঙে পড়ায় আটজন লোক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। চীনের বেইজিং শহরের গুইঝউ প্রদেশে গত ৮ মে তারিখে একটি গানের প্রতিযোগীতার জন্য সে সময় প্রায় ৮০ জন পুলিশ কর্মকর্তা মঞ্চটিতে সঙ্গীত অনুশীলন করছিলেন।

দূর্ঘটনাটির চিত্রধারণ করা হয়েছে এবং ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। সহমর্মিতা দেখানোর পরিবর্তে অনেকেই এই ঘটনা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করে মন্তব্য করেছেন, যেমন “চীনা স্বপ্ন বেশি ভারী হয়ে গেছে!” অথবা অনেকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর বহুবার উল্লেখিত বুলি “চীনা স্বপ্ন পতনের সূচনা” উল্লেখ করে জাতীয়ভাবে নবশক্তি সঞ্চার করতে প্রচার চালাচ্ছেন। ভিডিওটির একটি ইউটিউব সংস্করন নিচে দেয়া হলঃ

https://youtu.be/5sWATLOcvTI

সংগীত প্রতিযোগীতাটির মূল বিষয়বস্তু ছিল “চীনা স্বপ্ন এবং শ্রম সৌন্দর্য”, যা সমস্ত চীনা ফেডারেশন ট্রেড ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ এবং চীনা কেন্দ্রীয় টেলিভিশন কেন্দ্র (সিসিটিভি) কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত। সংগীত প্রতিযোগীতাটি জাতীয় প্রচারণার একটি অংশ।

টুইটার ব্যবহারকারী @এইচএনজেএইচজে সিসিটিভি চ্যানেলের একজন সংবাদ উপস্থাপকের কণ্ঠস্বর ব্যঙ্গ করে মন্তব্য করেছেনঃ

আমাদের দেশ মাতৃকার জন্য মা দিবস পালন করতে গুইঝউ প্রদেশে অবস্থিত বিজি শহর নাট্যশালা “চীনা স্বপ্নের পতন” নিয়ে একটি অভিজাত অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করেছে।

২০০৮ সালে নির্মিত থিয়েটারটি বিজি শহরের একটি বিশিষ্ট স্থাপনা। সে সময়ে এটি নির্মাণ করতে প্রায় ৯০ মিলিয়ন আরএমবি (আনুমানিক ১৪.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) খরচ হয়েছে। মঞ্চটির ভঙ্গুরতা অনেককে ২০০৮ সালের সিচুয়ান ভূমিকম্পের সময় “তফু-তলানি” স্কুল ভবন ধ্বসে হাজার হাজার ছাত্র মারা যাওয়ার ঘটনাটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। তফু প্রস্তুত প্রণালীতে অবশেষ হিসেবে যে ছোট টুকরাগুলো থাকে সেগুলোকে তফু-তলানি বলা হয়। শব্দটি প্রায়ই বাজে নির্মাণ কাজ নির্দেশ করতে ব্যবহার করা হয়।

চীনা স্বপ্ন বেশী ভারী হয়ে উঠা সম্পর্কে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য কর্তৃপক্ষের খালি রাজনৈতিক স্লোগানের প্রতি চীনা জনগণের অসন্তোষের আভাস দেয়। কার্টুনিস্ট বিয়ানতাইলাজিয়াও ছবি আঁকার (উপরে ছবিটি দেখুন) মাধ্যমে অনুভূতিটি ফুটিয়ে তুলেছেন। ছবিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে পূর্ণ একটি জাহাজ সমুদ্রের মধ্যে ধীরে ধীরে ডুবে যেতে দেখা যাচ্ছে।

গল্পটি ওয়েব পোর্টাল থেকে নেয়া হয়েছে এবং চীনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা নেতিবাচক মন্তব্যগুলো এর পরপরেই মুছে ফেলা হয়। বক্সান নামের একটি বিদেশী ভিন্নমতাবলম্বী চীনা ওয়েবসাইট এই ঘটনা সম্পর্কে জনপ্রিয় কতগুলো মন্তব্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছেঃ

中國夢太沉重了。
豆腐渣工程無處不在。
納稅人的錢不是讓你們參加歌詠比賽的。
站在搖搖欲墜的台子上唱讚歌是要摔下來的!
明顯是超重啦!遲到那三個人一上去舞台就塌了。
太諷刺了。中國夢就是這樣的?連個舞台都是豆腐渣工程!
1秒前還是歌舞昇平,1秒後分崩離析。終究會有壓垮駱駝的最後一根稻草!

চীনা স্বপ্নগুলো বেশ ভারী।

তফু-তলানি প্রকল্পগুলো সবখানে।

কোন সংগীত প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়ার জন্য আপনাকে কর পরিশোধকারীদের টাকায় বেতন দেয়া হয় না।

ধ্বসে পড়া কোন মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রশংসাসূচক গান গাইতে গেলে আপনার অধঃপতন হবেই।

সবশেষে আসা তিনজন যখন মঞ্চে পা রাখলেন তখনি মঞ্চটি ধ্বসে পড়ে গেল। নিঃসন্দেহে তাঁরা খুব ভারী ছিলেন।

খুবই বিদ্রুপাত্মক। এটাই কি চীনা স্বপ্ন? এমনকি মঞ্চটিও তফু-তলানি প্রকল্প।

এক সেকেন্ড আগে, এটা সমৃদ্ধির এক অভিজাত অনুষ্ঠান ছিল। এক সেকেন্ড পরে, সবকিছু ধসে গেল। শেষ খড় অবশেষে প্রদর্শিত হবে। ধৈর্য্যের শেষ সীমা অবশেষে দেখা গেল।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .