অনেক আগে থেকে মালির টিম্বাকটু অঞ্চল বাণিজ্য এবং সংস্কৃতির সঙ্গমস্থল। নাইজার নদীর তীরে বাস করা সোনাঘি, ফেলু, সোরকো, তুয়ারেগ, বেল্লাহ, কুন্তা, এবং বেরাবিচ-এর লোকেরা দীর্ঘ সময় ধরে একে অন্যের প্রতিবেশী হয়ে বাস করছে। এই সমস্ত শহরের নাগরিকদের সুসম্পর্ক, ২০১২-১৩ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ পর্যবেশিত হয় জাতিগত এবং ধর্মীয় উত্তেজনা । স্থানীয় বেশ কিছু এনজিও এখন কঠোর পরিশ্রমে নেমে পড়েছে, যারা মালির সামাজিক সংযোগ এবং শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রবন্ধ হচ্ছে ওই তিনটি প্রকল্পের একটির কাহিনী ও টিম্বাকটুতে এর প্রচেষ্টা নিয়ে, যার নাম ‘একত্রে বসবাস’ (“ভিভের এন সেমব্লে”)।
‘একত্রে বসবাস’ হচ্ছে পাট-মালির (এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হচ্ছে মালির অভ্যন্তরে যে পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে তাকে সাহায্য করা) একটি বইয়ের ক্লাব, যা টিম্বাকটুর মাধ্যমিক স্কুলে সহনশীলতা এবং স্বাধীনতার সংস্কৃতির বিষয়টি তুলে ধরে। নভেম্বরের শেষে ‘একত্রে বসবাস’ কর্মসূচি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে কি ভাবে বই প্রদান করা যায় সে বিষয় নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদান করেন এমন ৩২ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্দেশ্য একত্রিত করে। এই প্রকল্পে আশা করা হয়েছে যে শিক্ষক এবং বইয়ের ক্লাবের সদস্যদের জন্য ৩২০ টি ইরিডার্স কেনা হবে।
এই ক্ষেত্রে এই প্রবন্ধের লেখিকা এর পরবর্তীতে একটি ফোটো সংবাদ তৈরী করছেন, এখানে প্রদান করা ছবি উপরে বর্ণিত এক কর্মশালা থেকে নেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্পে যথেষ্ট সময় এবং প্রচেষ্টা প্রদান করা হয়েছে। দান করা ইরিডার্সগুলো দিয়ে ৪,০০০-এর মত ইবুক ডাউনলোড করা হয়েছে।
টিম্বাকটুর বেশীর ভাগ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় দলের প্রধান ছিলেন জেইনাব বেনাল্লা। তিনি মরোক্কোর রাবাতের দি আরব ইনিস্টিটিউট ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চ এন্ড হিউম্যান সায়েন্স-এর গবেষণা সহকারী।
শিক্ষকরা আনন্দের সাথে ইরিডার্স গ্রহণ করেছে, বিশেষ করে ইসলামিক মাগরেব নামে পরিচিত এই অঞ্চলে আল কায়েদা এপ্রিল ২০১২ থেকে জানুয়ারি ২০১৩-এর মাঝে শহরের সকল লাইব্রেরী ধ্বংস করে দেওয়ার প্রেক্ষিতে (ঘটনাক্রমে ফরাসী সেনারা এই অঞ্চল থেকে আল কায়েদা সদস্যদের বিতাড়িত করার কাজে সাহায্য করছে)।
ইরিডার্সের ব্যবহার হয়ত স্থানীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় অনুসন্ধিৎসু সংস্কার বয়ে আনতে পারে। সম্ভবত শিক্ষকদের কুখ্যাত “রেড পেন” নামক পদ্ধতির প্রয়োগ কমিয়ে আনতে পারে যা পাঠ্যবইকে সমালোচনার মধ্যে দিয়ে দেখে এবং মুখস্থ করায়। ইরিডার্সের মাধ্যমে, কেউ কেউ আশা করছে যে শিক্ষকরা আগের থেকে আরো বেশী “সহজতর” এবং “ বিষয়ভিত্তিক ভাবে এগিয়ে যাওয়ার” মত পাঠ দান করবে, আশা করা যায় তারা ছাত্রদের মাঝে আরো বেশী আলোচনার সূচনা করবে।
শহরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিক ইতিহাস এবং ২০১২ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত এক নিপীড়ক শাসন ব্যবস্থা সহ্য করার বিষয়টি সামনে রেখে বলা যায় এই সকল কর্মশালা অনেক বাসিন্দার জন্য এক মুক্তির উপায় হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে, বিশেষ করে যারা টিম্বাকটুতে আল কায়েদার অধীনে প্রাপ্ত মানসিক যন্ত্রণার মাঝে এখনো বাস করছে।