সার্বিয়ার অনলাইন সমাজ আজ (২২শে সেপ্টেম্বর) বিকেলে ব্যস্ত ছিল স্তুতি মূলক বক্তব্যে বেলগ্রেডে একটা ধারা সৃষ্টিকারী ঘটনার পর। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় আর তথ্য সোসাইটির অফিসের নতুন ঠিকানা ‘পারিস্কা ৭, বেলগ্রেড’ এ আজ ছিল অনলাইন সমাজের ছোট্ট, অলস একটি জমায়েত যার নাম দেয়া হয়েছে ‘টুইট আপ ইন পারিস্কা ৭’ আর এটি সংগঠিত হয়েছে বিশেষত: টুইটার আর ফেসবুকের মাধ্যমে।
চলতি গুজব হচ্ছে যে এই অনানুষ্ঠানিক সভার উদ্যোগের পেছনে আছেন সার্বিয়ার টেলিযোগাযোগ আর তথ্য সোসাইটি মন্ত্রী বিশেষ উপদেষ্টা স্লোবোদান মার্কোভিচ, যিনি অনলাইন সমাজের বেশ সচেষ্ট সদস্য। আরও আছেন সিআরআই ডোমেইন্স এর সিইও এবং সার্বিয়ান ইন্টারনেট উন্নয়ন সেন্টারের উদ্যোক্তা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জোরান তোরবিকা, যিনি শুরু থেকে স্থানীয় অনলাইন সমাজের অংশ।
মন্ত্রী জাসনা মাতিচ অতিথিদের অভ্যাগত জানান তার নতুন অফিসের ছাদে, আর পরবর্তী কয়েক ঘন্টা ব্যয় করেন সাধারণ লক্ষ্য, বিষয়, ধারণার ব্যপারে আলোচনায় আর মতামত বিনিময় করে…তার অনলাইন সঙ্গীদের সাথে।
বিশিষ্ট স্থানীয় ব্লগার প্রেদ্রাগ মিলিচেভিচ ছাদে মন্ত্রী মাতিচ এর সাথে সেই বিকেলের অনুষ্ঠানের স্মৃতিচারণ করেছেন তার সাম্প্রতিক ব্লগ পোস্টে, যার শিরোনাম সার্বিয়ার টুইট-আপে প্রথমবারের মত মন্ত্রী:
মন্ত্রীরা সব সময়ে মানুষের প্রতীক না হয়ে বেশী কাজের প্রতীক হন, আমাদের প্রতিদিনের রাজনৈতিক ভাষায় তারা একটি ধারণা হিসেবে বিবেচিত হন বাস্তব জীবনের ব্যক্তির থেকে। মন্ত্রীরা সব সময়ে ওখানে কোথাও ছিলেন…অনেক দূরে।
আজকে একজন মন্ত্রী আমাদের মাঝে এসেছেন। জীবন্ত একজন মানুষ, মানে মহিলা। 😉 টেলিযোগাযোগ আর তথ্য সোসাইটির মন্ত্রী, জাসনা মাটিচ। তিনি আমাদের সাথে কথা বলেছেন, ই-শিক্ষা, চ্যালেঞ্জ, স্বচ্ছতা, আইন, প্রক্রিয়া ইত্যাদি নিয়ে… তিনি আইনের ব্যাপারে আমাদের জানিয়েছেন। তিনি সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি সতর্কতার সাথে আমাদের কথা শুনেছেন। আমাদের বিভিন্ন ধারণা বিবেচনা করেছেন। প্রস্তাবিত সমাধানে তিনি খুশি হয়েছেন। পাশ থেকে বলা মজার কথায় তিনি হেসেছেন। তিনি আমাদের একজন ছিলেন।
ব্লগ জগতের খুব সচল একজন সদস্য, নোভি সাদ এর তাতিয়ানা ভেহোভেচ, বা ম্নুশেমা একজন কপিরাইটার, সম্পাদক আর প্রকাশক। তিনি আজকে বেলগ্রেডে সভায় এসেছেন আর তার ব্লগ পোস্টে একই ধরনের গল্প বলেছেন:
একদা পাহাড়ি বল্কান চাষীদের দেশে…
আসলে সেটা নয়: আজকে, যোগাযোগ আর তথ্য সোসাইটির মন্ত্রী জাসনা মাতিচের রৌদ্রস্নাত ছাদে, মন্ত্রণালয়ের নতুন অফিসে মতবিনিময়ের জন্যে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে সাক্ষাতকার, যে স্থানে আসল জীবন আর আসল মানুষ পরষ্পরের সাথে মিশেছে। সম্মান।
জনাবা ভেহোভেচ তার ব্লগ পোস্টে এই সাক্ষাতের সম্ভাব্য ফল আলোচনা করেছেন:
এই টুইটার জমায়েতের উপসংহার হিসেবে অনলাইন গোত্রের জন্য তিনটি সম্ভাব্য প্রাপ্তি আছে যার সারসংক্ষেপ তিনি তার ব্লগ পোস্টে লিখেছেন:
১। যে কেউ ইলেক্ট্রনিক কমার্স, ইলেক্ট্রনিক বানিজ্য, আমদানি বা সবার উপরে সার্ভিসের রপ্তানীতে কোন বাধার সম্মুখীন হয়, তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এই সকল বিষয়ের মানচিত্র তৈরি করার জন্য আর যদি সম্ভব হয়, সাধারণ জ্ঞান, কাজের জ্ঞান আর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উপরে ভিত্তি করে কোন সমাধানের প্রস্তাব করা।
২। প্রস্তাব করা হয়েছে অর্ন্তবর্তীকালীন দল তৈরি করা, আর মনে হচ্ছে একটি এরই মধ্যে গঠন করা হয়েছে যেটি যোগযোগ মন্ত্রণালয় আর তথ্য সোসাইটি আর ব্যবহারকারীদের যোগাযোগের প্লাটফর্ম হিসাবে বিভিন্ন প্রকল্প প্রস্তাব করবে। এদের লক্ষ্য হবে ধারণা আর সমাধানের আদান প্রদানের জন্য পারষ্পরিক বিনিময়ের স্থান সৃষ্টি করা, আর সর্বোপরি সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা যেগুলো আইনের বাস্তবসম্মত প্রয়োগে সমস্যা সৃষ্টি করে [ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে] আর এর বাস্তব প্রয়োগের দুর্বলতা আর দোষত্রুটি লিপিবদ্ধ করা।
৩। একটি কার্যকরী দল তৈরি করা হয়েছে অধীনস্ত আইনের খসড়া তৈরির জন্য যেটি একসাথে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের (সব) যোগাযোগের ব্যাপারটিকে বিবেচনা করবে, এসব বাধ্যতামূলক বিষয়বস্তুর ব্যাখ্যা থাকবে আর নাগরিকদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমের ব্যাখ্যা থাকবে। এই আইনের লক্ষ্য হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের কাজের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, সরকারী সাইটের কাজ বৃদ্ধি করা আর দ্রুত যোগাযোগ।
মনে হতে পারে যে মন্ত্রী মাটিচের সাথে আজকের টুইটাপ অনুষ্ঠানটি বেলগ্রেডের অনলাইন সমাজের জন্য জন্যে যাকে বলা হয় ‘সাত মাইল লম্বা পদক্ষেপ’ আর আশা করা যায়, গোটা সার্বিয়ার সমাজের জন্যেও তাই। মনে করিয়ে দিচ্ছি যে যে কোন ধরনের কথাবার্তা, তা যতই মধুর হোক না কেন, তার ফল পাওয়া গেলেই তা সার্থক ধরা হবে, জনাব মিলিসেভিচ তার ব্লগ পোস্টে লিখেছেন:
আমি যাদুর কাঠিতে বিশ্বাস করিনা, কিন্ত খোলামেলা যোগাযোগে আমি বিশ্বাস করি। আর আমি বিশ্বাস করি যে কেউ যদি রাষ্ট্রের উঁচু চুড়া থেকে মানুষের মধ্যে নেমে আসেন, তাদের সাথে খোলাখুলিভাবে কথা বলার জন্য, তখন আমরা কিছু বাস্তব সম্মত ফল আশা করতে পারি। অদূর ভবিষ্যতে। তাছাড়া ‘আশা সবার শেষে মারা যায়…’