হাঙ্গেরি: আরেকটি নীরবতার আদেশ ক্ষোভের উদ্রেক করেছে

বছরখানেক আগে, বুদাপেস্টের বাসিন্দারা একটি উন্মুক্ত আলোচনায় মত্ত হয় শহরের ষষ্ঠ ডিস্ট্রিক্টের একটি নীরবতার আদেশ নিয়ে যাতে বলা হয় যে পানশালা, রেস্তোঁরা এবং ২৪ ঘণ্টা খোলা দোকানগুলো রাত দশটায় বন্ধ হয়ে যাবে। এরপর হাঙ্গেরির ঝকমকে রাতের জীবন পছন্দকারী বাসিন্দারা মেয়রের অফিসের সামনে এটি বাতিলের জন্যে প্রতিবাদ শুরু করে। পরবর্তীতে এই নিয়ম পাল্টানো হয় এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাত ১টা পর্যন্ত খোলা রাখতে দেয়া হয়। এবং যেসব স্থানে স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্তৃক কোন অভিযোগ নেই সেসব স্থানে ভোর ৬টা পর্যন্ত খোলা রাখতে দেয়া হয়।

গ্রীষ্মের শেষের দিকে বুদাপেষ্টের আরেকটি ডিস্ট্রিক্ট – সপ্তম ডিস্ট্রিক্ট – এরকম আরেকটি আদেশ দেয়। এটি আবার এ নিয়মের প্রতি ক্ষোভের বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছে, যা দেখা গেছে মেয়রের অফিসের সামনে একটি সমাবেশের মাধ্যমে। এরা জড়ো হয়েছিলেন প্রতিবেশী বাসিন্দাদের অভিযোগের ফলে জনপ্রিয় পানশালা সিম্পলা কের্ট (সিম্পলা বাগান) এর বন্ধ হবার সময় কমানোর প্রতিবাদ করতে। এই আদেশ পানশালাটিকে পূর্বের রাত বারোটা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকা থেকে বিরত রাখে।


Szimpla Kert

সিম্পলা কের্ট, ছবি সিম্পলা.হু ওয়েবসাইটের সৌজন্যে

সিম্পলা কের্ট সপ্তম ডিস্ট্রিক্ট এর এর্সেবেতফারোস অঞ্চলে অবস্থিত যেখানে আরও বেশ কটি পানশালা, বার আর রেস্তোঁরা রয়েছে। সিম্পলা কের্ট এদের মধ্যে বেশী জনপ্রিয় স্থানীয় হাঙ্গেরিয়ান ও বিদেশী পর্যটকদের কাছে।

কেট্টোস মের্সে (“দ্বৈত নীতি”) ব্লগের ওয়াইস মানফ্রেড হুবা একটি পোস্টে লিখেছেন [হাঙ্গেরিয়ান ভাষায়]:

[…] সিম্পলা শুধু একটি পানশালা নয়, এটি একটি ট্রেডমার্ক যার আরেকটি পানশালা বার্লিন এ আছে। এটি প্রথম যায়গা যেখানে যে কোন বয়সী পর্যটকরা যায়।

এর বিশেষত্ব হচ্ছে যে সিম্পলা লোক ভাড়া করে যারা কাজিনচি স্ট্রীট দিয়ে যেসব পথচারী যায় তাদের শব্দ করতে মানা করে। তারা শুধু সিম্পলার অতিথিদেরই এটি বলে না, বরং সবাইকেই বলে। […]

ভাস্তাগবর (মোটা চামড়া) ব্লগের জিরো একটি পোস্টে এই বাধ্যবাধকতা মানার ফলশ্রুতি কি হতে পারে তা ব্যাখ্যা করেছে:

[…] এর্সেবেতফারোস এ (যেখানে মেয়র গিয়র্গি হুরভাল্ড এখনও কারাগারে) কর্তৃপক্ষরা মস্করা করছে না: গত কয়েক সপ্তাহে কাজিনচি স্ট্রীট এ বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়। শ্রম মন্ত্রণালয়, কর কর্তৃপক্ষ, অগ্নিনির্বাপক কর্তৃপক্ষ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষক এবং পুলিশের অভিযান এই স্থানের নিত্য ঘটনা। শুধু সিম্পলা কের্টই নয় ‘৪০০‘ এবং ‘কলেভেস কের্ট‘ ও ‘এল্লাতো কের্ট‘ প্রতিষ্ঠানগুলোতে কুকুরওয়ালা পুলিশকে দেখা গেছে। বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে বিদেশী অতিথিরা খাবার সময় তাদের তল্লাসী করা হয়, একটি প্রতিষ্ঠানে প্রত্যেক অতিথির কাছে মাদক খোজা হয়, এবং একজন একজন করে তাদের ছাড়া হয়। […]

গত বছরে যেমন দেখা গেছে, মানুষ এই নীরব আদেশ সম্বন্ধে ফেসবুকে প্রতিবাদ জানাচ্ছে

কেট্টোস মের্সে (“দ্বৈত নীতি”) ব্লগের লেখকরা একটি সশব্দ র‍্যালির আয়োজন করে এই আদেশ যে নোটারী বের করেছেন তার বাড়ির সামনে।

মোহা নামে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ম্যাগাজিন একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেছে যেখানে র‍্যালির একটি ভিডিও তুলে দেয়া হয়। সেখানে ওয়াইস মানফ্রেড হুবা বলেছেন: “সারা ইউরোপ জুড়ে পরিচিত একটি পানশালার প্রতি এমন করা উচিৎ নয়। এ ধরনের মিউনিসিপ্যালিটি আদেশ এইসব প্রতিষ্ঠানের কাজে বাধা দিচ্ছে বা এদের বন্ধ করে দেবার জন্যে তাদের নিজস্ব আইন চাপাচ্ছে।” ভিডিওতে লোকেরা উচ্চস্বরে বলছে “আপনারা বর্টেন্ডার হবার উপযুক্ত নয়।”এই ভিডিওর শেষের দিকে একজন বয়স্ক নারী বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করছে “এগিয়ে যাও ছেলেরা” বলে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .