পাকিস্তান: নার্সের গণধর্ষণে ক্ষোভপ্রকাশ ও প্রতিবাদ

জিন্নাহ পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিক্যাল সেন্টার (জেপিএমসি) এর একজন শিক্ষানবিস নার্সের গণধর্ষণের ঘটনা পাকিস্তানিদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার ঘটিয়েছে। এই গণধর্ষণ একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে ঘটেছে এবং এই বিষয়টি কঠোর ভাবে সমালোচনায় এসেছে কারণ সারা দেশের হসপিটাল গুলোতে নার্স এবং মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার কি অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়। ইট্রিবিউন কর্তৃক ইউটিউবে প্রকাশিত এই ভিডিও রিপোর্টে ঘটনাটির একটি মর্মস্পর্শী বিবরণ পাওয়া যাবে।

ছবিতে ক্লিক করুন ভিডিওটি দেখার জন্যে।

ছবিতে ক্লিক করুন ভিডিওটি দেখার জন্যে

জামাল আশিকাইন মন্তব্য করেছেন “জেগে ওঠো! নারী নির্যাতন থামাতে উদ্যোগী হও” শিরোনামে তার এক ব্লগ পোস্টে:

ঘটনার প্রথম দিন সংবাদ চ্যানেলগুলো এতই উত্তেজিত ছিল যে সাংবাদিকতার মূল নীতি বিসর্জন দিয়ে তারা এই ঘটনার শিকার নার্সটির চেহারা পরিস্কারভাবে দেখানো ভিডিওটি সারাদিন ধরে বার বার প্রদর্শন করে। এতে তার চেহারা এবং তার নাম সারা দেশ ব্যাপী দর্শকদের স্মৃতিতে গেঁথে যাবে।

এই ঘটনা সম্পর্কে বিষদ বর্ণনা করতে গিয়ে জামাল জনপ্রিয় এনজিওর নীতিনির্ধারকদের করা পরিসংখ্যানের দিকে দৃষ্টি ফিরিয়েছেন যেগুলি বলছে যে নারীদের প্রতি নির্যাতন থামাতে জলদি উপযুক্ত আইন হওয়া দরকার। আরেকজন ব্লগার নায়াব ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন:

একটিই কারণ আছে এর যে কোন আইন নেই – যেই আইন এইসব দুস্কৃতকারীদের শাস্তি দিতে পারবে এবং এইসব জঘন্য কাজ কমাতে পারবে। কিন্তু এটি বর্তমানে সম্ভব নয় কারণ এই দেশটি এখন এমন সব রাজনৈতিক নেতাদের কর্তৃত্বে যারা মিথ্যুক এবং তাদের ভুয়া ডিগ্রির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে।

এ ছাড়াও, নায়াব এই ব্যাপারে ধর্মীয় নেতাদের চুপ থাকার ব্যাপারটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো এড়িয়ে রাজনৈতিক বিষয় গুলো সামনে আনার অভিযোগ তোলেন তিনি। আমার ব্লগ মিস্টিফাইড জাস্টিস এ আমি কর্মস্থলে যৌন নির্যাতন বিরোধী আইনের ফাঁকফোকরগুলো নিয়ে লিখেছি এবং বলেছি যে এই আইন ভালভাবে কার্যকর হওয়া দরকার:

জেপিএমসির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাজ করা ৩৫০ জনেরও বেশী নার্সের জন্যে যৌন নির্যাতন নতুন কোন ঘটনা নয় কিন্তু এই গণধর্ষণের শিকারের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন তাদের প্রতিবাদ করতে বাধ্য করেছে এবং একাত্মতা ঘোষণা করে তারা ধর্মঘটে গেছে। এটি সত্যিই ন্যাক্কারজনক যে এমন একটি ঘটনা একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে ঘটেছে [..] এবং আমি জেনে খুবই মর্মাহত হয়েছি যে মেমন কর্তৃক নির্যাতনের ব্যাপারটি নার্সটি অনেক আগে থেকেই কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছে এবং সেই একমাত্র শিকার নয়। কিন্তু তাদের আকুতি কেউ শোনে নি। যদিও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি নিরোধক বিলটি পাস হয়েছে, তার কেসটি একটি জ্বলন্ত উদাহরণ যে কিভাবে কর্মস্থলে যৌন হয়রানির ব্যাপারটি একেবারে গুরুত্বের সাথে দেখা হয় না। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই এইসব ঘটনাগুলোকে ধামাচাপা দেয়া হয়, যার ফলে অপরাধীরা পার পেয়ে যায় আর এই ঘটনার শিকাররা আবারও এইসব নির্যাতনের শিকার হয়। বিভিন্ন সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠান তাদের সুনাম বাঁচাতে এইসব ঘটনা ধামাচাপা দেয় এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে বিরত থাকে। শুধুমাত্র আইনই এই সমস্যার সমাধান করবে না, এইসব সংগঠন এবং প্রতিষ্ঠানদের তাদের মহিলা কর্মীদের জন্যে যথেষ্ট সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। শুধুমাত্র আইন বা বিচার ব্যবস্থা এই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে না যতক্ষণ না পর্যন্ত সহকর্মীরা এইসব ব্যাপারকে গুরুত্বের সাথে না নেয়।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .