থাইল্যান্ডে সরকার বিরোধী রেড শার্ট ক্যাম্প এরই মধ্যে সেনা নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে কিন্তু পিছিয়ে যাওয়া বিক্ষোভকারীরা বেশ কিছু বাড়ি শহরের জ্বালিয়ে দিয়েছে। অন্যান্য অংগরাজ্যেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে থাইল্যান্ডের উত্তরপূর্বে অবস্থিত উদোন থানিতে। রাজধানী আর দেশের বেশিরভাগ স্থানে সান্ধ্য আইন জারী করা হয়।
নীচে একটা গুগুল ম্যাপ দেয়া হল রেড শার্ট আর সরকারী বাহিনীর মধ্যকার সংঘর্ষের স্থানগুলো দেখিয়ে।
View ব্যাঙ্ককে রক্তিম সংকট বড় ম্যাপে দেখুন
গত ২৪ ঘন্টায় ব্যাঙ্ককে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার ক্রম ব্যাঙ্কক পণ্ডিত, রয়টার্স লাইভ ব্লগ, দ্যা থাই রিপোর্ট আর প্রাচাথাই এর মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। ব্যাঙ্ককের ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষীর বক্তব্য শোনা যাচ্ছে সাইমন রাফনিন, নির্মল ঘোষ আর শ ইয়ান নাইং এর ভাষ্যে যারা রেড শার্ট ক্যাম্পে প্রবেশ করতে পেরেছিলেন। থাইল্যান্ড’স ট্রাবলস শহরে ‘যুদ্ধের’ ছবি পিকাসায় তুলে দিয়েছেন।
দ্যা ড্রপ রেড শার্ট বিক্ষোভ দলকে ছত্রভঙ্গ করার পরের দৃশ্যের বর্ণনা দিয়েছেন:
রাস্তা ময়লায় ভর্তি, সব জায়গায় খাবার নষ্ট হচ্ছে গরমে। দেয়ালের পিছনে লুকিয়ে থাকা একদল মানুষ সয় এর দিকে ফেরা একটা বড় বাড়ির দিকে তাকিয়ে আছে – স্নাইপার দেখায় চেষ্টা করছে তারা। সয়ের সামনে একেবারে খোলা হয়ে গেছে, কোন টায়ার নেই। রামা ৪ এর সাথে কোনায় যে বাড়ি কাসিকর্ন ব্যাঙ্কের অফিস তা পুরোপুরি পুড়ে গেছে। পিছনে পড়ে আছে খালি কালো একটি গুলির খোলস এবং রাস্তার লাইটপোল থেকে ঝুলে থাকে কিছু বৈদ্যুতিক তার।
ব্যাঙ্ককের মল, সিনেমা হল, টিভি স্টেশন আর স্টক এক্সচেঞ্জে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয় পালিয়ে যাওয়া রেড শার্ট বিক্ষোভকারীদের দ্বারা। আসলেই ব্যাঙ্ককের কিছু অংশ গতকাল পুড়ছিল। এখানে দেশের একটি বড় বিপনী বিতান সেন্ট্রাল ওয়ার্ল্ড মল পুড়ছে – তার ছবি দেখা যাচ্ছে।
ব্যাঙ্ককে বিক্ষোভের উপরে হামলা করার পরে, উদোন থানির পরিস্থিতি বেশ আলাদা কারন রেড শার্টের সমর্থকরা সেখানে সরকারি একটা ভবন কব্জা করতে সমর্থ হয়েছিল। লাইফ ইন রুরাল থাইল্যান্ড শহরের পরিস্থিতি নিয়ে সময় মত আপডেট দিয়েছেন। থাই রিপোর্ট বিক্ষোভের ছবি তুলে দিয়েছে। সরকারী বাড়ির সামনে বিক্ষোভের একটা ভিডিও এখানে।
উত্তরপূর্ব থাইল্যান্ডে রেড শার্টের শক্ত ঘাঁটি আছে। তাদের অনেকে গ্রামাঞ্চলে থাকেন যারা বিতাড়িত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার সমর্থক। কিন্তু আজকের রেড শার্ট কেবলমাত্র থাকসিনের অনুগতদের দ্বারা গঠিত না। তাদের সাথে এখন যোগ দিয়েছে এমন দল আর ব্যক্তি যারা থাইল্যান্ডের ‘উচ্চশ্রেনী’ সরকার ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করতে চান।
রেড শার্টরা দাবি করছে প্রধানমন্ত্রী অভিশিত ভিজাজিভার পদত্যাগ যাকে তারা দাবি করছে বেআইনি আর অগণতান্ত্রিক হিসাবে। তারা আরো চাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী যেন সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নতুন নির্বাচনের তারিখ দেন।
গত দুই মাস ধরে, রেড শার্ট তাদের হাজার হাজার সদস্যকে মাঠে নামিয়েছেন ব্যাঙ্ককের রাস্তায় বিক্ষোভ করার জন্য। প্রায় এক সপ্তাহ আগে সংঘর্ষ বেড়ে যায় যখন সরকার বিক্ষোভ স্থান ঘেরাওয়ের আদেশ দেন আর এর পরে বিক্ষোভকারীদের উপরে হামলা করা হয়। সরকার ব্যাঙ্ককে বাড়তে থাকা উদ্বিগ্নতা আর সংঘাতের জন্য ‘সন্ত্রাসী বিক্ষোভকারীদের’ উপরে দোষ দেন।
জটম্যান গতকালের ঘটনা নিয়ে কিছু টুইট প্রতিক্রিয়া একত্র করেছেন। এখানে সেখান থেকে কয়েকটি টুইটার বার্তা:
বামেকিউটি: আমার সিটিডাব্লু চলে গেছে! এটার জন্য ওইসব প্রতিবাদকারীদের মধ্যে কেউ কি দাম দেবে? না তারা দেবে না! আর আমি শুনেছি তারা এখনো সিয়াম স্কোয়ার পোড়াচ্ছে…
প্রা৩ওয়া_পি: @টোয়েটোয়ে কিন্তু কেবল ব্যাঙ্কক না। তারা আমার বাড়ির সামনের রাস্তাতেও গাড়ির টায়ার পোড়াচ্ছে। আপনাদের উচিত এসে এই যুদ্ধক্ষেত্র দেখা।
পিপোপাঙ্কি: আমার সয়তে সোনার একটা দোকান সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে…এখান থেকে তাহলে গতকালের পোড়া গন্ধ আসছিল…
এসএলম্যাক্লে: আরটি@পাইসাল_এন্টি: থাই পিবিএস: সিয়াম স্কোয়ার, বিগ সি রাজদাম্রী, ব্যাঙ্কক ব্যাঙ্ক সাপান লুয়াইং এ এখনো আগুন জ্বলছে রায়টকারীরা যেখান কর্তৃপক্ষের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে।
আইব্যাঙ্কক: ভাবছি সব দমকল বাহিনীর লোক কোথায়, ভিডিওতে তাদের খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।
ডিভানপেল্ট: আজ সকালে দিন দায়েং আর রাতচাপ্রাসোং এই দুই অঞ্চলে ধোঁয়ার দুটো বিশাল কুণ্ডলি। বাতাসে এখনো পোড়া টায়ারের গন্ধ।
নুনিদ৮৮০৫১৭: মানুষ মারা যাচ্ছে, বাইরে অনেক জায়গায় আগুন জ্বলছে কিন্তু আমার প্রিয় বাড়ি বাঁচাতে আমি কিছু করতে পারছি না।
তুল্পিন: আমি এই এলাকার সব দিক থেকে পোড়া গন্ধ পাচ্ছি কিন্তু কোথা থেকে আসছে সেটা বুঝতে পারছি না।