কাতার: শিল্পী এম এফ হোসেন ভারতীয় পাসপোর্টের বদলে কাতারি পাসপোর্ট নিয়েছেন

ইন্টারনেট জুড়ে খবর যে ৯৫ বছর বয়সী বির্তকিত ভারতীয় চিত্রশিল্পী এফ এম হোসেন কাতারের নাগরিকত্বের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের এই ছোট্ট রক্ষণশীল দেশের পক্ষ থেকে এমন নাগরিকত্ব দেয়া বিরল ঘটনা।

“আমি ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিল্পী এম. এফ. হোসেন, ৯৫ বছর বয়সে কাতারের নাগরিকত্ব দ্বারা সম্মানিত হয়েছি,” শিল্পী একটা স্কেচে লিখেছেন যেটা বহুল পঠিত ভারতীয় ইংরেজী দৈনিক দ্যা হিন্দুতে প্রকাশিত হয়, আর সবাই সংবাদটি জানতে পারে।

হোসেন, যাকে ভারতের সব থেকে বড় শিল্পী বলা হয়ে থাকে, কাতারে আরব সভ্যতার ইতিহাস নিয়ে একটি প্রকল্পে কাজ করছেন সেখানকার ফাস্ট লেডি, শেইখা মোজাহ বিন্তে নাসের আল মিসনেদের অনুরোধে।

এই নাগরিকত্ব প্রদান অনেককে অবাক করেছে যেহেতু ভারতে হোসেনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অশালীনতার অভিযোগ আছে। ১৯৭০ এর দশকে তার আঁকা হিন্দু দেব-দেবীদের উলঙ্গ চিত্র ২০০৬ সালে যখন প্রথম প্রকাশিত হয় তার বিরুদ্ধে প্রচুর প্রতিবাদ, ভাংচুর আর ভীতি প্রদর্শিত হয় এবং তিনি দেশ ছাড়েন।

টুইটারে @আইভিজি বলেছেন:

এটা অদ্ভুত খবর। কাতারের কি লাভ তাকে নাগরিকত্ব দিয়ে?

দ্যা হিন্দুর সাংবাদিক এন রাম, এই সংবাদকে ‘জনাব হোসেনের জন্য একটা সম্মান হিসাবে বলেন, তার শৈল্পিক গুণের আর ভারতে গ্রথিত যে সভ্যতার তিনি প্রতিনিধিত্ব করছেন তার জন্যে। কিন্তু ভারতের জন্য এটা দু:খের দিন।

জনপ্রিয় অনলাইন ফোরাম কাতার লিভিং এ এই সংবাদ তুলে দেওয়ার পর এতে ১১৬টি মন্তব্য আসে বিশেষ করে এই সাইট সপ্তাহান্তে কাজের জন্য বন্ধের পূর্বে।

কেউ কেউ কাতারের প্রশংসা করেছেন, মুসলিম একটা রাজতন্ত্র যারা শিল্পের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেছেন, আর অন্যরা ভাবছেন কোথায় ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্র ভুল করলো।

মন্তব্যকারী ল্যান্ডক্রুজার কাতার বলেছেন:

(তিনি) খুব গুণী মানুষ আর বাজে দেশের মানুষ (তার প্রতি) ঘৃণার প্রচারণা চালিয়েছে। এম এফ হোসেনকে অভিবাদন।

থৌফি বলেছেন:

এটা কি গণতন্ত্র…?????? এটা কি গণতন্ত্র…??????? আমাদের দেশকে অনেক লজ্জা…

ভারত থেকে হোসেনের নির্বাসন তার স্বীকারোক্তি অনুসারে নিজে অর্পিত, আর ভারতীয় রাজনীতিবিদরা বলছেন যে তিনি ইচ্ছা মতো যাতায়াত করতে পারেন।

তবে, তার দেশে যেহেতু দ্বৈত নাগরিকত্বের অনুমতি নেই, হোসেনকে তার ভারতীয় পাসপোর্ট ত্যাগ করে কাতারি হতে হবে।

ভারতে, টুইটার ব্যবহারকারীরা এই সংবাদে সাড়া দিচ্ছেন লাগাতার বার্তা দিয়ে যাতে বিরক্তি থেকে অনুতপ্ত হওয়া পর্যন্ত অনুভূতির প্রকাশ করেছে।

@গুরগাওহারিয়ানা বলেছেন:

এম এফ হোসেন কাতারের নাগরিকত্ব গ্রহন করেছেন। ভারতের জন্য বড় ক্ষতি। আমরা কি খারাপ।

@গুল্পানাগ বলেছেন:

হোসেন তাহলে কাতারের নাগরিকত্ব গ্রহন করলেন। তার নিজের দেশ যদি তাকে নিরাপত্তা/ভালো থাকা নিশ্চিত না করতে পারে, তাহলে তার কারণ আছে।

@রাজইজম বলেছেন:

যদি তার এতো সাহস থাকে তাহলে কাতারে সে কোন মুসলিমের উলঙ্গ চিত্র বানাক আর পর মুহূর্তে তাকে মারা হবে।

কাতারে হোসেনকে কি ধরনের প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়া হবে তা দেখা বাকি।

কাতার লিভিং এর মন্তব্যকারী হিরো_হাই২ বলেছেন:

আমি আশা করি তার শিল্প কর্ম এখানে গড়ে তুলতে তার অসুবিধা হবে না যদিও এখানে মিডিয়ার স্বাধীনতা নিয়ে আমাদের কিছু সমস্যা আছে।

সভেলতে_স্যাগি বলেছেন:

যখনই শিল্পকর্মে ধর্মকে খারাপভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, সমস্যা হয়েছে।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .