শুক্রবার রাতে এক লেলিহান আগুন গ্রীসের উত্তরপূর্ব এটিকা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে এবং শীঘ্রই সে এক বিশাল পরিমাণ বন ভূমি এলাকা ও সম্পত্তি ভস্মীভূত করে। দুই দিনের মাথায় এই আগুন এথেন্সের সবচেয়ে উত্তরের উপশহরের কাছে পৌঁছে যায়, এই অগ্নিকাণ্ড ২০০৭ সালে ঘটা রাতের দু:স্বপ্নের মতো বিধ্বংসী দাবানলের স্মৃতি আবার ফিরিয়ে এনেছে।
গ্রীক ব্লগার মাইন্ডস্ট্রিপার এর ভদ্রমহিলা তার বাড়ির বারান্দা থেকে তোলা ছবি পোস্ট করেন ব্লগে যা শনিবার সন্ধ্যার দৃশ্য:
Ωρα Αθήνας 8μμ
Κι εγώ θέλω να φύγω από το σπίτι μου.
ঘটনার একদিন পরে লন্ডন ভিত্তিক ফটোগ্রাফার মালজোপোউলো একটি ছবি পোস্ট করেছে যা এক বিমান থেকে নেওয়া হয়েছে।
ভদ্রমহিলা মন্তব্য করেছেন, “একে ভাষায় বর্ণনা করা যায় না….”।
সরাসরি তোলা আগুনের দৃশ্য:
রবিবার রাতে স্কিনিয়াস বনের ভেতরে রাখা এক ওয়েব ক্যামেরা এই দৃশ্যটি ধারণ করেছে কিভাবে আগুন ধেয়ে আসছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ক্যামেরা কাজ করছিল ততক্ষণ পর্যন্ত সে এই দৃশ্য ধারণ করে, (তারপর অস্থায়ী ভাবে কাজ করা বন্ধ করে) এখন ক্যামেরাটি আবার কাজ করছে।
দি নিউ এথেনিয়ান রবিবার সকালের ঘটনার কথা জানাচ্ছে, রবিবার সকালে আগুন এথেন্সের পেনডেলি উপশহর এলাকায় এসে পৌঁছায়।
অনেক স্থানীয় বাসিন্দা তাদের বাসা রক্ষা করার জন্য সারারাত জেগেছে। রবিবার সকাল পর্যন্ত তারা চেষ্টা করে যাচ্ছিল ছোটখাট আগুন নেভানোর জন্য, যা তাদের ঘরের কাছে জ্বলছিল। জলপাই গাছের ডাল ও বেলচা দিয়ে তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে অথবা একটা মানব বন্ধন তৈরি করে একজনের থেকে আরেক জনের হাতে পানি পূর্ণ বালতি দিয়ে একই কাজ করছিল। তাদের উঠান থেকে একটা হোস পাইপ থেকে তারা পানি টানছিল। এক কটু ধোঁয়ায় বাতাস ভরে গিয়েছিল, এবং লোকজন তাদের মুখ টি-শার্ট, মাথার চুল ঢাকার জন্য যে পোশাক ব্যবহার করা হয় সেই কেইরিচীফ ও তোয়ালে দিয়ে মুখ ঢেকে কাজ করছিল। […]
পানডেলি আবাসিক এলাকার অনেক বাসিন্দা তাদের বাসা খালি করার ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে। অনেক বেলা পর্যন্ত রাস্তাঘাট গাড়িতে ভরে ছিল। অনেক লোক তাদের বাসার বাইরে অপেক্ষা করছিল। তাদের মুখ ঢাকা ছিল, তাদের পেছনে তাদের কুকুর গুলো ছিল, যারা শেকলে বাধা ছিল। লেলিহান আগুন তখন দেখা যাচ্ছিল না কিন্তু তার গভীরতা বোঝা যাচ্ছিল বিস্ফোরণের বিভিন্ন শব্দের মাধ্যমে- সম্ভবত প্রাকৃতিক গ্যাস ভর্তি ট্যাংক অথবা গাড়ীর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছিল।
টুইটারে লোকজন এক গুগল ম্যাপ ম্যাশআপের (ম্যাশআপ হচ্ছে ওয়েব পাতার এক ভিন্ন সংস্করণ যেখানে ম্যাপের সাথে কয়েকটি ডাটা একসাথে যুক্ত থাকে) দিকে নির্দেশ করছিল। এখানে আগুন বিষয়ক তথ্য প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ফার্মস তথ্য প্রদান করছিল। তারা আগুনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিল এবং টুইটারে হ্যাশট্যাগের মাধ্যমে পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে (#জিআরফায়ারস) টুইটারে অগ্নিকাণ্ড সম্বন্ধে সমষ্টিগত ভাবে যে প্রশ্ন আসছিল তারই উত্তর দিচ্ছিল। টিভিতে যে বর্ণনা প্রচার হচ্ছিল বেশির ভাগ মেসেজে সে গুলোই উত্তর হিসেবে পাঠানো হয়েছিল, এর সাথে প্রচার মাধ্যম ও রাজনৈতিক দলের সমালোচনাও ছিল, যার মধ্যে ছিল মূল বিষয়ের উপর সামান্য সরাসরি রিপোর্ট করা।
টুইটার ব্যবহারকারী @সাভাকোস আগুনের সামনে থেকে কিছু সরাসরি রিপোর্ট সরবরাহ করেছেন। তিনি এর সাথে ঘটনার তত্ত্বাবধান করেছেন গুগল মানচিত্রের মাধ্যমে।
Ενεργό μέτωπο της φωτιάς στην Σταμάτα, λίγο πριν από την πλατεία #grfires http://bit.ly/t38Z5 http://twitpic.com/ezarv
এ ছাড়াও টুইটারে, @কেইয়ানাউন রিয়েল টাইম বা ঘটনার সময় তোলা এক ভিডিও পোস্ট করেছেন, যার সাথে ধারা বর্ণনা ছিল, কুইক নামের এক সফটওয়ার ব্যবহার করে তিনি এ কাজ করতে সমর্থ হন। সে সময় তিনি এটিকার ধোঁয়াচ্ছন্ন সড়কের উপর গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
অন্ধকারে আলোর ঝলকানি:
অগ্নিকাণ্ডের সময় সূর্য অস্ত যাওয়া এক ভীতিকর ব্যাপারে পরিণত হয়। কারণ বিমান গুলো তখন মাটিতে নেমে আসে এবং অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধের বিষয়টি বাধাগ্রস্ত হতে থাকে। এরিক প্যাকার টুইটারে এই নাটকীয় মুহূর্তের বর্ণনা করছেন।
@এরিকটিপার্কস: সুর্যাস্ত হচ্ছে এবং আমরা দেখছি সামান্য আলোতে বিমানের মাধ্যমে দুর্ধর্ষ অগ্নি নির্বাপক কর্মীরা আগুন নেভানোর শেষ চেষ্টা করা যাচ্ছে। অন্ধকার পাহাড়ের উপর জ্বলতে থাকা শত শত আগুনের শিখাকে স্পষ্ট করল।
আগষ্টের ২৩ তারিখে গ্রীক ওয়েব ডিজাইনার ডিমিত্রিওস ডোকুগ্লু টুইটপিকে এই ছবিটি পোস্ট করেছে।
আমার ছাদ থেকে গতকাল রাতের দৃশ্য। #জিআরফায়ারস
টু্ইটপিক ব্যবহারের মাধ্যমে অনেক টু্ইটার ব্যবহারকারী ব্যক্তি মোবাইলে তোলা ছবি পোস্ট করেছে এবং একজন গ্রীক সফটওয়ার ডেভেলপার একটি স্বয়ংক্রিয় তরতাজা সংবাদ দিতে থাকা ওয়েব সেবা চালু করেছে এই সমস্ত পোস্ট গুলোকে এক করে, এর জন্য সে #জিআরফায়ার হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছে।
অগ্নিকাণ্ডের সময় রাজনীতি:
টীচার ডিউড, একজন নাগরিক ফটো সাংবাদিক, যইনি থিসালোনিকি থাকেন। তিনি লেলিহান আগুন ও জাতীয় নির্বাচনের সাথে দেশটির রাজনীতির যে যোগসূত্র রয়েছে তার উপর মনোযোগ দেন।
যদিও গ্রীসে নিয়মিতই ছড়িয়ে পড়া অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, কিন্তু এথেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এক গবেষণায় দেখা গেছে জাতীয় নির্বাচনের সাথে এই বিপর্যয়ের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। স্পাইরোস সাকুরোস ও নিকোস ক্রিস্টোডৌউলাকিস-এর মতে গত ৫৪ বছরে বন ভূমি তার অর্ধেক অংশ হারিয়েছে, তবে ১৬ বছরে সেই সমস্ত এলাকায় আগুন লেগেছে যেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
শেষ বার যে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে যা ঘটেছিল ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক এক সপ্তাহ পূর্বে। এবার বেশিরভাগ রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিবেচনা করছেন কয়েক মাসের মধ্যেই এক নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
টিচার ডিউড টুইটারে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন এর আগের এক অগ্নি নির্বাপন কর্মকাণ্ডের চেষ্টার কথা, যেটাতে তিনি নিজেই অংশগ্রহণ করেছিলেন। .
১৯৯৭ সালে সালোনিকিতে কি ঘটেছিল তা মনে রেখেছি। আগুন নেভানোর সময় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আমি কাজ করেছিলাম, খুবই ভীতিকর ব্যাপার, আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
… এবং অরওয়াইলি মন্তব্য করেছে যে :
দি নিউ ডেমোক্রেসি দলের [সরকারি দল] প্রতীকের এখন নতুন এক মানে তৈরি হয়েছে। এইচটিটিপি://টিনইয়ুরাল.কম/এম৪মাফা#জিআরফায়ারস।