হের্টা লুশো ১৯ বছর বয়স্ক এক ছাত্রী। সে এক বিপদের মধ্যে রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার হবার বিপদ। তাকে এদেশ থেকে ১৯শে আগষ্ট বুধবার আলবেনিয়া চলে যাবার আদেশ দেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ খবর: ১৯শে আগষ্ট যখন হের্টা কর্তৃপক্ষের কাছে যায় তখন তাকে বলা হয়েছে যে সে নভেম্বরের ৯ তারিখ পর্যন্ত থাকতে পারবে আমেরিকায়। সে জানাচ্ছে যে তাকে সমর্থন করে পাঠানো চিঠিগুলো তার ফাইলের সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে তার এটর্নির অনুরোধে এবং সেই চিঠিগুলো ৯ ইঞ্চি উঁচু হয়েছে। আন্দোলন এখনও চলছে।
ড্রিমঅ্যাক্টিভিস্ট.অর্গ ও অন্য অভিবাসী অধিকার আন্দোলনের ব্লগাররা আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তাকে সাহায্য করার ও দেরি করে পাঠানোর জন্য যতক্ষণ না নতুন আইন কাজ করা শুরু করে, এর ফলে সে এ দেশে থাকতে পারবে।
এবং তারা অনেক গুলো উপায়ের তালিকা তৈরি করেছে যার মধ্য দিয়ে লোকদের সাহায্য করতে পারা যাবে। এর মধ্যে রয়েছে সিনেটর বা সংসদ সদস্যদের জানানো, (ফেসবুক) গ্রুপে যোগদান করা ও সংগঠনে অথবা খুব সাধারণভাবে কোন এক ব্লগে তার ঘটনা পোস্ট করা।
হের্টার গল্প
হের্টা লুশো ডেট্রয়স মার্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নবাগতা ছাত্রী। তার বিষয় হচ্ছে ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং (তড়িৎ প্রকৌশল)।
আট বছর আগে হের্টা লুশো তার মায়ের সাথে আলবেনিয়া থেকে আমেরিকায় আসে। সে সময় সে ছিল এক শিশু। স্বপ্নের আমেরিকায় বাস করার জন্য তাদের এই আগমন। এরপর সে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়।
আইনের সংজ্ঞা অনুসারে হের্টা বৈধ অভিবাসী নয়, যাদের বলা হয় “আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্ট”। কিন্তু যখন সে আমেরিকায় আসে, সেই বছর থেকে তার জন্য তারা পরিবার বৈধ নাগরিকত্বের যোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করে যাচ্ছিল। আগস্টের ১৯ তারিখে, হের্টার ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের আশাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। এই দিনে আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) নামের প্রতিষ্ঠান তাকে আলবেনিয়ায় পাঠিয়ে দেবার পরিকল্পনা করেছে।
ড্রিমঅ্যাক্টিভিস্ট.অর্গের সদস্যদের কাছে পাঠানো এক ইমেইলে হের্টা লিখেছে:
“আমাদের সকল প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) নামের প্রতিষ্ঠান দ্বারা আমি বহিষ্কৃত হবো সেই দেশ থেকে, যে দেশকে আমি আমার একমাত্র স্বদেশ বলে জেনেছি। আমাকে এমন এক দেশে ফিরে যেতে হবে, যে দেশ এখন আমার কাছে বিদেশে পরিণত হয়েছে। এমনকি আমি এখন আর আলবেনিয়ার ভাষাও ভালো মত বলতে পারি না”।
হের্টার বাবা আলবেনিয়ায় থাকে। তার মা এবং ভাইবোনেরা আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার সাহস করেছে।
“আমার পিতামাতা আমাকে আমেরিকায় নিয়ে আসে কারণ এই দেশটি যে প্রতিশ্রুতি দেয় তাতে তারা বিশ্বাস করেছিল। তাদের কাছে এই দেশটি ছিল অসীম সম্ভাবনা , মূল্যবোধ এবং আদর্শের জায়গা। তারা স্বপ্নের আমেরিকার প্রতি বিশ্বস্ত ভাবে বিশ্বাস করেছিলেন। তার মানে কঠোর পরিশ্রম, শিক্ষা এবং ভালো চরিত্রের মাধ্যমে তাদের সন্তানরা যা চাইবে তাই তারা অর্জন করতে পারবে”।
এই ভিডিওটি তৈরি করেছে সিটিজেন অরেঞ্জের কাইল ডে বুয়াসেট। হের্টা ব্যাখ্যা করছে সে কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
লুশোর জন্য ব্লগিং করা
অনেক ব্লগার হের্টার জন্য লিখেছে এবং তাদের পাঠকদের উৎসাহ প্রদান করেছে হের্টার ঘটনার জন্য লড়াই করতে। এর মধ্যে রয়েছ আমেরিকান হিউমানিটি, বি-লিস্টেড, ডকুমেন্ট মি, নুয়েস্ত্রা ভয়েস এবং স্ট্যান্ডিং ফার্ম।
চেঞ্চ.অর্গ হের্টাকে সাহায্য করার জন্য অনলাইনে এক দরখাস্ত দিয়েছে এবং সিইইয়ু (সার্ভিস এমপ্লইয়ি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন) এর সাথে সিনেটরদের ফোন করার সুবিধা দিচ্ছে তাদের ওয়েব সাইটে। ফেসবুকে হের্টার ঘটনা প্রায় ২০০০ এর বেশি সমর্থককে আকর্ষণ করতে পেরেছে।
কাইল সিটিজেন অরেঞ্জে লিখেছে হের্টা ও তার বড় ভাই লির্জন এর সাথে সাক্ষাৎ-এর কথা। হের্টার ভাই লির্জন এর ছাত্র ভিসা রয়েছে।
“লির্জন এবং হের্টা এক অন্যরকম ব্যক্তি। হের্টা খুব সৌভাগ্যবান যে সে লির্জন এর মতো ভাই পেয়েছে। তার এই ভাই, বোনের জন্য নিরন্তর কথা বলে যাচ্ছে। এমনকি যে ছোট্ট সময়ে লির্জন এবং হের্টা আমাদের পরিবারের সাথে পরিচিত হয়, সে সময় তারা এক বিশাল প্রভাব তৈরি করতে সক্ষম হয়। এটা আমার জন্যেও এক বিশেষ মুহূর্ত ছিল। আমার পরিবার আমাকে কম্পিউটারে টাইপ করতে দেখে অভ্যস্ত ছিল। এই প্রথম এমন কারো সাথে তাদের সাক্ষাৎ হল যাদের জীবনকে আমি প্রভাবিত করছি”।
তিনি বলে যাচ্ছেন:
“হের্টা হয়তো আমাকে এইভাবে বর্ণনা করতে দিতে চাইবে না, কিন্তু আমি বলবো আমেরিকা তার মুখে থুতু ছিটিয়েছে এবং তার উত্তর সে দিয়েছে ভালোবাসা দিয়ে। এটাই গভীর সত্য যে বিচার না পাওয়া কারো মুখে যদি গভীর ভালোবাসার চিহ্ন থাকে, এমনকি যদি তা একজন মাত্র ব্যক্তির মুখে থাকে, তা হলে তা মহাবিশ্বের লক্ষ ক্রোধান্বিত প্রতিবাদকারীর চেয়েও অনেক কাজের হয়। আমেরিকায় থাকার জন্য হের্টা যে ভাবে লড়ছে তাকে গন্ধী বলত “সত্যগ্রহ”। ড: রেভারেন্ড মার্টিন লুথার কিং, জুনিয়র যার অনুবাদ করেছিলেন “সত্যের শক্তি” অথবা “সত্যিকার-ভালোবাসা”। যারা হের্টাকে সমর্থন করছে তারাও সত্যগ্রহে অংশগ্রহণ করছে”।
“আমি ক্রমাগত বিশ্বাস করে যাই …”
ড্রিমঅ্যাক্টিভিস্ট.অর্গ, সিটিজেন অরেঞ্জ, এবং আরো অনেকের সমর্থনে- হের্টা তার গল্প সারা বিশ্বকে জানাচ্ছে। তাদের আশার নাম এক প্রস্তাবিত আইন, যার নাম ড্রিম এ্যাক্ট, যা শীঘ্রই পাশ হতে যাচ্ছে। এই আইনের ফলে বৈধতার কাগজ তৈরি না হওয়া ছাত্রেরও এই দেশে থাকার অধিকার থাকবে, যেমন হের্টা। যাদের “নির্ধারিত প্রমাণপত্রযুক্ত কাগজ নেই” এমন ছাত্রদের বৈধ অভিবাসী হবার সুযোগ থাকবে, তবে তা নির্ভর করবে বিশেষ শর্তের উপর, যেমন পড়াশোনার জন্য আগমনের সময় তার বয়স কত ছিল।
যদিও কেন্দ্রীয় আইন প্রণেতারা ২০০৭ সালে প্রথমবার আনা এই বিল বাতিল করে দিয়েছিল। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে কিছু পরিবর্তন করে তাকে পুনরায় উপস্থাপন করা হয় এবং সমর্থকরা আশা করছেন এই আইন এতটা সমর্থন লাভ করবে যে তা রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার অফিস থেকে পাশ হয়ে আসবে। এই আইন চালু হলে অনেকের লাভ হবে। হিসেব করে দেখা গেছে যে সারা আমেরিকায় বৈধ কাগজ নেই এমন প্রায় ৬৫,০০০ জন ছাত্র রয়েছে। তারা শিশু অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার ও থাকার অনুমতি পায়।
হের্টা আশা করছে তার জীবন হয়তো অন্য আরেক অনুমোদনহীন ও অভিবাসী ছাত্র, ১৮ বছর বয়স্ক তাহার মতো ঘুরে দাড়াবে। তাহার জীবন এক বিশেষ ভাবে বাক নিয়ে নেয়। তাহা নিউ জার্সিতে থাকত। সেখান থেকে তাকে তার পুর্বপুরুষদের দেশ “বাংলাদেশে” পাঠিয়ে দেবার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল -তবে দুজন সিনেটর ও অন্য আমেরিকানদের সহায়তার কারণে-হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিস তার এই বহিষ্কারাদেশ বাতিল করে।
এখন লুশো একই ভাবে সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছে:
“আমার এই বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন যতক্ষণ না আমি আমার কলেজের পড়া শেষ করি অথবা ড্রিমএ্যাক্ট পাশ না হয়। আমার আমেরিকার স্বপ্ন পুরণের প্রতিশ্রুতি পুনরায় বাস্তবায়নে আমাকে সাহায্য করুন, যাতে এক সাথে আমরা সকলের আমেরিকান ড্রিম বা আমেরিকায় বসবাসের মাধ্যমে যে স্বপ্ন পুরণের প্রতিশ্রুতি তৈরি হয় তা নূতন করে বাস্তবায়নে কাজ করতে পারি।
1 টি মন্তব্য
Hello! Thanks for the translation!
I just added this update at the top of the original post:
Update: When Herta reported to the authorities on August 19 she was told she can remain in the country until November 9. She says there was a 9-inch stack of letters from supporters that her attorney has asked be added to her file. The campaign continues.