গত শনিবার (২১শে ফ্রেব্রুয়ারী) ব্রাজিলিয়ানরা দেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় বার্ষিক উৎসব কার্নিভাল উপভোগ করার জন্যে জেগে উঠেছিল। এই অনুষ্ঠান পৃথিবীব্যাপী বৃহত্তম মহোৎসব যা উদযাপন করতে বিভিন্ন দেশের লক্ষ লক্ষ জনগণ তাদের নগরীর রাস্তায় নেমে আসে। এটি ইউরোপ থেকে আসা এক সংস্কৃতি যার মধ্যে স্থানীয়, আফ্রিকান এবং বিভিন্ন ইউরোপীয় উপাদান মিশ্রিত হয়েছে। ব্রাজিলে এই কার্নিভাল সংস্কৃতি তার নিজস্ব বৈশিষ্ট, জৌলুশ এবং সুনাম খুঁজে পেয়েছে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সঙ্কটের কথাই বলুন কিংবা ব্রাজিলের নিজস্ব দৈনন্দিন কোন সঙ্কট হোক, প্রথাগত এই মহোৎসব চলবেই। বৃদ্ধির সাধারণ প্রবণতা অনুসারে এ উৎসব উদযাপনের জন্যে আসা স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা গত বছরের চেয়ে আশাতীতভাবে বেশী ছিল। আশা করা হয়েছিল যে এবছর প্রায় ৭১৯,০০০ আন্তর্জাতিক পর্যটক রিও ডি জেনিরো পরিদর্শন করবে (গতবছর ৭০৫,০০০ ছিল)। ডলারের উচ্চমানের ফলশ্রুতিতে অনেক ব্রাজিলিয়ান তাদের ছুটি বিদেশে না কাটিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় যে দেশের মধ্যে কার্নিভাল ভ্রমণে তা উদযাপন করবে।
কার্নিভালের সময় জনগণ বিচিত্র পোশাক পরে, উৎসবে যোগ দেয় বা বিশ্রামের সুযোগ গ্রহণ করে শক্তি সন্চয়ের জন্যে। এটি উদযাপনের সময় দেশটি থমকে দাড়ায়, এবং অনেকে বলে যে কার্নিভালের পরে কেবল নতুন বছর শুরু হয়। জনগণের পোশাকের সৃজনশীলতা দেখে না হেসে পারা যায়না। কারন দেখা যায় পোশাক তৈরিতে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সাম্প্রতিক বিষয়গুলোর অভূতপূর্ব কৌতুকপূর্ণ উপস্থাপন হয়। ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্স এর আওতায় প্রকাশিত কিছু সেরা ফটো এখানে দেখতে পাবেন।
প্রথম দিন, শনিবার, ২১শে ফেব্রুয়ারী
একটি ছাতা খোলার জন্যে যথেষ্ট জায়গা নেই! রিসাইফে কার্নিভাল শুরু হয় গালো দা মাদ্রুগা মিছিলের সাথে। ব্রাজিলের বৃহত্তম মহোৎসব “ব্লোকো” বিশ্বের বৃহত্তম কার্নিভাল মিছিল হিসেবে গিনেস বুকের বিশ্ব রেকর্ডে স্থান পেয়েছে। ছবি তুলেছেন ফিলিপ ফেরেরা।
রিসাইফে কনডম মানুষ, ছবি কার্লোসঅলিভেইরাইস এর সৌজন্যে। কার্নিভালের সময়, কর্তৃপক্ষ লক্ষ লক্ষ কনডম বিলি করে। কিন্তু এখনও নয় মাস পর সবসময় আশা করা হয় একটি শিশু উচ্চ প্রবৃদ্ধির।
আরেকটি বেশ কারুকার্যময় পোশাক। রিসাইফের রাস্তায় ইস্ত্রী করে এমন একজন মহিলা। ছবি কার্লোসঅলিভেইরাইস এর সৌজন্যে।
সাও পাওলোর সাম্ব্রোদ্রোমোতে উদযাপনরত মানুষ, ছবি তুলেছেন আন্দ্রে চেরী।
২২ তারিখ, রোববার, ক্ষমা করে দেয়া
রড্রিগা সলডন ছবি তুলেছেন মোনালিসার যে সশরীরে উৎসব উদযাপন করছে।
রিও ডি জেনেইরোর করদাউ দো বাইতাতা, ছবি তুলেছেন লুসিআনো ই্য়োআকিম।
যারা সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো ছাড়া থাকতে পারে না তাদের জন্যে রয়েছে অর্কুট পোশাক। রিও ডি জেনেইরোতে ছবি তুলেছেন উর্বীফটোজ।
অলিন্দাতে কার্নিভাল পরিদর্শনে ফিডেল কাস্ট্রোও এসেছিলেন। ছবি তুলেছেন আদ্রিয়া দি সুজা। অন্যান্য রাজনীতিবিদদের মধ্যে বেশ কয়েক যায়গায় ব্যারাক ওবামার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু দু:খের বিষয় সৌভাগ্যবান পাপারাজ্জিরা তাদের ছবি সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত করে রেখেছে বলে এখানে দেয়া গেল না।
২৩শে ফেব্রুয়ারী, পরিচ্ছন্ন সোমবার
অলিন্দাতে, সেই ইরাকী সাংবাদিক, বুশ এবং তাকে ছোড়া জুতা সবাই মজা করছে। আপনারা তো ঘটনাটি জানেনই। ছবি তুলেছেন আদ্রিয়া দি সুজা।
গ্রান্ডো রিয়া সাম্বা স্কুলের মক্ষীরাণী পাওলা অলিভিয়েরা চুম্বনের ভঙ্গীতে। এই স্কুল অন্য ত্রিশটির সাথে সাম্বা স্কুল প্যারেডে অংশ নেয়।
রিও ডি জেনেইরোতে পুরস্কার জিতেছে সালগুয়েরো স্কুল। ছবি তুলেছেন অ্যান অ্যাগুইরে।
২৪শে ফেব্রুয়ারী, প্রায়শ্চিত্বের মঙ্গলবার
ভেনিস? না অলিন্দা। ছবি তুলেছেন আদ্রিয়া দি সুজা।
সাও পাওলোতে সারাক্ষণ লাফানো। ছবি তুলেছেন ক্রিস্তিয়ানো কানিচ।
আজ ব্রাজিলে কোন প্যানকেক খাওয়ার দিন না। কার্নিভালের শেষ দিনের করুণ সুর দেখা যায় রিও ডি জেনিরোতে সকালের দৃশ্যে। ছবি তুলেছেন অ্যানা পিন্টা, যেটিত একজন মন্তব্য করেছিল: রিও ডি জেনিরোর বরাবরের দৃশ্য।
২৫শে ফেব্রুয়ারী, ছাইরঙ্গা বুধবার
অলিন্দাতে একজন চিন্তা করে পরবর্তী বছরের কার্নিভালের জন্যে একটি পোস্টার নিয়ে আসে “কেবল ৩৫৩ দিন বাকী”। ছবি তুলেছেন আদ্রিয়া দি সুজা।
এই বছরের কার্নিভাল সরকারী ভাবে শেষ হয়েছে। যদিও এটি উদযাপন বেসরকারীভাবে আরও সপ্তাহখানেক চলবে, ২০০৯ সাল সরকারীভাবে এখন শুরু হতে পারে।