জর্জিয়া, রাশিয়া: লুটেরা আর শরণার্থীদের খাওয়ানো

শনিবার রাশিয়ান দুতাবাসের সামনে তিবলিসির বেশ কয়েকজন লোক জমায়েত হয় লুটপাটের বিরুদ্ধে প্রতীকি বিক্ষোভ করার জন্য। লাইভ জার্নাল (এলজে) ব্যবহারকারী ওলেগ_প্যানফিলোভ এই উদ্যোগের ব্যাপারে লিখেছেন আর ছবি পোস্ট করেছেন:

তিবলিসির রাশিয়ান দুতাবাসে তারা পুরানো ফ্রিজ, টয়লেট, টয়লেট পেপার, ইস্ত্রী, ভদকা (মদ), কাঁটা চামচ, কাপড় আর অন্যান্য জিনিষ রেখে এসেছে যার প্রতি [রাশিয়ান সেনা লুটেরারা] আগ্রহ দেখিয়েছিল জর্জিয়ানদের বাড়ি, সরকারী সংস্থা, সেনা সদর আর সেনা ব্যারাকে গিয়ে:

মানুষ কাছ থেকে দেখতে আসছে, মাথা নাড়ছে আর হাসছে। পাশ দিয়ে যাওয়া গাড়ি হর্ণ বাজাচ্ছে…

[ছয়টি ছবি]

তিবলিসিতে থাকা এলজে ব্যবহারকারী টনি-জিও এই প্রতিবাদের কঠোর সমালোচনা করে লিখেছেন:

“আসুন রাশিয়ান সেনাদের খাওয়াই” কর্মসূচী

এই কর্মসূচী নিজেই একটা শক্তিশালী জনসংযোগ অস্ত্র। কিন্তু সেটি শুধুমাত্র সম্ভব যখন বেশ কিছু রাশিয়ান এই ব্যাপারে জানতে পারবে। আমার সন্দেহ যে [চ্যানেল ১ এর] ভ্রেমিয়া সংবাদ বা [আরটিআর চ্যানেলের] ভেস্তি সংবাদ এটা দেখাবে না।

আমি এটা বোঝাতে চাচ্ছি। একজন রাশিয়ান নারী, জর্জিয়ান সেনা অফিসারের মা, আতঙ্কিত হয়ে বলছেন যে [কালিনিনগ্রাদ এ থাকা] তার মার কোন ধারনা নেই যে জর্জিয়াতে কি হচ্ছে আর মনে করছে যে জর্জিয়ান সেনারা তস্খিনভ্যালিতে এখনো আক্রমণ করছে, যা সোভিয়েত সেনারা সাহসিকতার সাথে প্রতিরোধ করছে। ইশ্বর বাচিয়েছে যে সে তার নাতির উপর কোন অভিশাপ দেয়নি কারন সে তস্খিনভ্যালিতে রাশিয়ান সেনাদের হত্যা করছে।

আমি এই রিপোর্ট সমর্থন করছি। রাশিয়াতে আমার বোনের সাথে আমি গতকাল কথা বলেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে আমার বোন জর্জিয়ান, কিন্তু ঠিক আমার মতো তার জন্ম আর বড় হওয়া রাশিয়াতে আর তার জীবনের ৩০ বছরের মধ্যে রাশিয়াতে মাত্র কয়েক সপ্তাহ কাটিয়েছে। কিন্তু সে বিবাহের পরেও তার জর্জিয়ান কুমারী নাম রেখেছে। কিন্তু সেও জানে না যে কি ঘটছে। বেশীরভাগ সাধারন মানুষ ইন্টারনেট আর স্যাটেলাইট টেলিভিশন ব্যবহার করে না বিশস্ত খবর পাওয়ার জন্য- তারা [রাশিয়ান সরকারী টেলিভিশন] যা দেখাচ্ছে তাই দেখছে। তাই এটা বিষ্ময়কর না যে তাদের বেশীরভাগ বিশ্বাস করে যে রাশিয়ান সেনারা তস্খিনভ্যালির বাইরে আসেনি…?

কিন্তু এটা আমার বলার উদ্দেশ্য না। একটা কিন্ডারগার্টেনে [তিবলিসির এলাকায়] ১১০ টি শরণার্থী পরিবার অনেক বাচ্চা নিয়ে আছে। মানবিক সাহায্য ওখানে পৌঁছায়নি। তাদেরকে ওখানে রাখা হয়েছে ব্যাস, এরপর সময় হলে সাহায্য করা হবে। এই কিন্ডারগার্টেনে, সেই এলাকার স্কুলের থেকে আলাদা বাচ্চাদের জন্য অন্তত বিছানা আছে। বেশীরভাগ মানুষ মাটিতে ঘুমায়। কোন কম্বল বা ম্যাট্রেস নেই। তাদের অবশিষ্ট টাকা দিয়ে তারা যা পারে কিনে খায়। যেমন বুঝতে পারছে তাদের কাছে বেশি টাকা অবশিষ্ট নেই। গতকাল একবার এই কিন্ডারগার্টেনে খাবার দেয়া হয়েছিল। বাসি রুটি। ১১০টি পরিবারের জন্য সাত কেজি চিনি।

গতকাল রাতে আমি এক বস্তা বাচ্চাদের কাপড় নিয়ে গিয়েছিলাম, যেটা আমি চেয়েছিলাম কেন্দ্রীয় দানকেন্দ্রে দিতে, এই কিন্ডারগার্টেনে। আমরা [আমাদের পড়শীসহ] ২০ কেজি চিনি আর দেড় কিলো মাখনও নিয়ে গিয়েছিলাম। আজকে আমি তাদের ফল, দুধ [মাতসোনি] আর ডায়পার এনে দিয়েছি।

জর্জিয়ানবাসীরা, যথেষ্ট হয়েছে তোমাদের তথ্য যুদ্ধ। জানালার বাইরে দেখো, সেখানে কিন্ডারগার্টেন আর স্কুল ভরা শরণার্থী। প্রথমে যা পারো তাদের কাছে নিয়ে যাও, আর তারপর রাশিয়ান দুতাবাসে যাও।

আলোচনা শুরু করুন

লেখকেরা, অনুগ্রহ করে লগ ইন »

নীতিমালা

  • অনুগ্রহ করে অপরের মন্তব্যকে শ্রদ্ধা করুন. যেসব মন্তব্যে গালাগালি, ঘৃণা, অবিবেচনা প্রসূত ব্যক্তিগত আক্রমণ থাকবে সেগুলো প্রকাশের অনুমতি দেয়া হবে না .