যখন গত ২৬শে মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীনতা উদযাপন করছিল, তখন বাংলা ব্লগোস্ফিয়ার একের পর এক লেখা প্রকাশ করে যাচ্ছিল ২৫শে মার্চ, ১৯৭১ এর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কৃত হত্যাযজ্ঞ “অপারেশন সার্চলাইট” সম্বন্ধে। পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দমন করা।
আবুল বাহার ২৫শে মার্চের সেই ভয়াল রাতের কথা স্মরণ করেছে এই শব্দগুলোর মাধ্যমে:
হঠাৎ করেই যেন ঢাকা থমকে দাড়াল। চারদিকে শুন শান নিস্তব্ধতা। অশুভ শক্তির ধ্বংসযজ্ঞের নীচে সারা দেশ কাঁপছিল। মাটি রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল এবং হাসনাহেনা ফুলের গন্ধ মিইয়ে গিয়েছিল তাজা রক্তের গন্ধে।
আজ ব্লগাররা চিৎকার করে জানাচ্ছে ১৯৭১ সালে হানাদারদের হাতে নিহত প্রায় ত্রিশ লাখ মৃতের কথা। বাংলাদেশ গণহত্যা আর্কাইভ অনেক শ্রম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কিছু সংখক ব্লগারদের দ্বারা যা নেটিজেনদের (ইন্টারনেট নাগরিক) জানাবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় কি পরিমাণ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল বাঙ্গালী জনগোষ্ঠীর উপর। “বাংলাদেশ ১৯৭১” নামে আরেকটি নতুন ওয়েবসাইট প্রকাশ করছে কিছু বাংলা ব্লগার যা চেষ্টা করবে বর্তমান প্রজন্মের বাংলাদেশীদের সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়াই করা প্রজন্মের সাথে যোগসূত্র স্থাপন করার। এবং এটি আরও চেষ্টা করবে যে যুদ্ধপরাধীদের কিভাবে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া যায়।
বর্তমানে কেন স্বাধীনতার চেতনা পুনরুজ্জীবিত করা দরকার? হয়ত রাসেলের মতামত অনুযায়ী “স্বাধীনতা যুদ্ধকে কল্পকাহিনী বানানো” থেকে বিরত রাখার জন্যে। এছাড়াও শামীম আমাদের ব্যাখ্যা করছে কেন এতবছর পর অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে যুদ্ধাপরাধীদের আইনের আওতায় আনা। সে বলছে যে তাদের বিচার করা উচিৎ প্রতিশোধের মনোভাব থেকে নয় বরং ভবিষ্যতে যাতে এরূপ না হয় সেটি নিশ্চিত করা উচিৎ নয়। এটি একটি গুরুত্পূর্ণ পদক্ষেপ ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যে এবং যারা মারা গিয়েছেন বা নির্যাতিত হয়েছে তাদের এবং তাদের জীবিত পরিবারের সদস্যদের জন্যে একটি সান্তনা স্বরূপ।
রাবাব লিখছেন যে আজকের এই স্বাধীনতার দিনে সে কোন অনুপ্রেরণা পাচ্ছে না বরং হতাশ ও ব্যথিত হয়েছে চারিদিকে দুর্নীতি ও বিচ্ছিন্নতাবাদের জয়জয়কার দেখে। ফলে একটি একতাবদ্ধ এবং অর্থনৈতিকভাবে সমর্থ বাংলাদেশের স্বপ্ন দুরে সরে যাচ্ছে। ব্লগার সবজান্তাও এই হতাশাই প্রকাশ করেছেন। তবে যখনই সে জাতীয় সঙ্গীত “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি” শুনে তখন এই হতাশার অবসান হয়।