ইরান: পৃথিবীর সব থেকে ছোট স্কুল নিয়ে ব্লগিং

এখানে আর একটা গল্প যার মাধ্যমে জানা যাবে ব্লগিং কিভাবে জীবনকে ধনাত্মকভাবে পরিবর্তন করে আর পৃথিবীর অজানা বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

ইরানের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামের একজন তরুন শিক্ষক আব্দুল মোহাম্মদ শেরানি ইরানের দক্ষিণের বন্দর নগরী বুশেহেরের (জামালাবাদ কালুর কাছের) ছোট একটা মাছ ধরা গ্রামে অবস্থিত তার অতি ছোট স্কুলটি আর তার চারজন ছাত্র-ছাত্রী সম্পর্কে ব্লগ করেছেন

এই সামাজিক মিডিয়া উদ্যোগ প্রায় অলৌকিক একটা কাজ করেছে (স্কুলটি প্রচারে): ইরানী মিডিয়া এমনকি সিএনএন এই গ্রাম সম্পর্কে রিপোর্ট করেছে আর সরকার রাস্তা নির্মাণ আর অন্যান্য ব্যবস্থা দিয়ে সহযোগিতা করেছে। ইউনেস্কো একে স্বীকৃতি দিয়েছে পৃথিবীর সব থেকে ছোট স্কুল হিসাবে। এখানে আপনারা স্কুলটির বেশ কিছু ছবি দেখতে পারবেন।

সিএনএন এই স্কুলের উপর একটি প্রতিবেদন করেছে, যা ইউটিউবে একটা ভিডিও হিসাবে বারবার দেয়া হয়েছে।

নোটস অফ আ টিচার এজ সোলজার ব্লগ (একটি ইংরেজী ব্লগ যা আব্দুল মোহাম্মাদের কিছু লেখার ভাষান্তর করেছে) এই স্কুলে ওই শিক্ষকের প্রথম অভিজ্ঞতার কথা লিখেছে:

প্রথম দিন আমি যেন সেনা শিক্ষকে পরিনত হই, একটা ছোট্ট মেয়ে তার মিষ্টি কন্ঠ আর সেই দক্ষিণ ইরানীদের বিনয় নিয়ে আমার সাথে দেখা করতে আসে। তার ছোট্ট হাতের মধ্যে সে আমার হাত নেয়, যাতে একটা সবুজ ব্রেসলেট ছিল অশুভ আত্মা দুরে রাখার জন্য, আর আমাকে কালাউএর নতুন স্কুলটি ঘুরে দেখায়; একটা স্কুল যেখানে কোন দেয়াল নেই আর যা সমুদ্র থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরে দাঁড়িয়ে।

আব্দুল মোহাম্মাদ তার ব্লগে বলেছেন যে একবার তার চারজন ছাত্রকে রচনা লেখার বিষয় হিসাবে তিনি দিয়েছিলেন ‘আমি যদি একজন রাষ্ট্রপতি হতাম':

একজন ছাত্র লিখেছিল, “আমি রাষ্ট্রপতি হলে দরিদ্রদের সাহায্য করতাম, কাউকে দরিদ্র থাকতে দিতাম না… আমি গ্রামের জন্য পানি আর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতাম যাতে গ্রামের মানুষ শহরের লোকের মতো আরামে থাকতে পারে… আমি বিভিন্ন দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতাম আর শক্তিশালী দেশকে দুর্বল দেশের উপর আক্রমণ করতে দিতাম না।”

বাজ হাম জিন্দাগী (মানে আবার জীবন) লিখেছে (ফার্সী ভাষায়):

আব্দুল মোহাম্মাদ সুযোগের অভাব, অসুবিধা আর কষ্ট নিয়ে অভিযোগ করে না। বরং সে জীবন, শেখার প্রতি ভালোবাসা আর যে কোন পরিবেশে শিক্ষা দান নিয়ে লেখে। সে তার ছাত্রদেরকে শিক্ষা দেয় যে দয়া এখানে শাসন করছে আর জীবন তার সব চড়াই উৎরাই নিয়ে চলবে…

Exit mobile version