আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া ত্রিপোলির লাইব্রেরী লেবাননে পুনরায় চালু করা হয়েছে

Father Sarrouj at the opening ceremony (Al Saeh Facebook Page)

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফাদার সারাউজ (আল সায়েহে-এর ফেসবুক পাতা থেকে নেওয়া)।

যখন ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে ত্রিপোলির ফাদার ইব্রাহিম সারাউজ–এর আল সায়েহ লাইব্রেরী অজ্ঞাত দুস্কৃতিকারীরা পুড়িয়ে দেয়, এবং সারাউজ-এর জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়, তখন সম্প্রদায়ের সদস্যরা এবং লেবাননের সকল প্রকার নাগরিক অনলাইনে অর্থ সংগ্রহের সূচনা করে-এর প্রতি সাড়া প্রদান করে, যার নাম ছিল “কাফানা সামাতান” (নীরব যথেষ্ট ছিলাম): আর এর উদ্দেশ্য ছিল লেবাননের আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া লাইব্রেরি নতুন করে গড়ে তোলা এবং হারিয়ে যাওয়া ১০,০০০ প্রাচীন বই আবার সংগ্রহ করে রাখা।

এই সময়ে এই হচ্ছে কাফানা সামাতানের বার্তা :

ফাদার ইব্রাহিম সারাউজ-এর হাতে গড়া আল সায়েহ লাইব্রেরি হচ্ছে ৪০ বছরের পুরোনো এক বইয়ের দোকান, যা লেবাননের উত্তরের শহর ত্রিপোলির পুরোনো বাজারে অবস্থিত। এই লাইব্রেরিতে ছিল ৮৭ হাজার বই এবং পুঁথি, যার মধ্যে কিছু বই ছিল দুষ্প্রাপ্য এবং কিছু ছিল মূল্যবান ধর্মীয় পুঁথি।

বিগত কয়েক বছর ধরে, রাজনীতিতে যুক্ত এমন কয়েকজন ব্যবসায়ী তাকে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে আসছিল যাতে সে লাইব্রেরি বন্ধ করতে বাধ্য হয়। ৩ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে অজ্ঞাত একদল লোক লাইব্রেরি জ্বালিয়ে দেয়। এর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, আগুনে পুড়ে যাওয়ার পরের দিন শত শত নাগরিক এর সামনে এসে জড় হয় এবং লাইব্রেরিকে বাঁচানোর জন্য এবং সেটিকে আগের চেয়ে আরো উন্নত অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য অর্থ ও বই দান করা শুরু করে।

এখন কোন ধরনের রাজনৈতিক এবং সম্প্রদায়ের সহায়তা ছাড়াই, কেবল নাগরিকদের সমর্থনে কাফানা সামাতান নামের এই প্রচারণা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে লাইব্রেরিটিকে আবার গড়ে তোলা হবে যাতে আবার তা নাগরিকদের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব হয়।

একই সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র থেকে জানা গেছে ৭৮,০০০-এর মত বই উদ্ধার করার মত অবস্থা ছিল না, যদিও সঠিক সংখ্যা কখনো প্রকাশ করা হয়নি। এএফপির সংবাদ অনুসারে মুসলমান এবং খৃষ্টান সম্প্রদায়ের আর খুঁজে পাওয়া যায় না এমন অমূল্য প্রাচীন বই ও পাণ্ডুলিপির দুই তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়ে গেছে।

জ্ঞান এবং সহনশীলতার প্রতি এই হামলা দেশটিকে দারুণ ভাবে আঘাত করে এবং সকল রাজনৈতিক দল এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ে নেতা এই ঘটনার নিন্দা জানায়। এই হামলার এক মাস পরেই কাফানা সামাতান ঘোষণা প্রদান করে যে এই প্রকল্প সফলতার সাথে এক তহবিল গড়ে তুলেছে, যার জন্য ৩০৬ জন ব্যক্তিকে ধন্যবাদ, যারা ৫ থেকে ১০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত অর্থ প্রদান করে। আর এভাবে লাইব্রেরি গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় ৩৫,০০০ মার্কিন ডলারের সবটাই এখান থেকে উঠে আসে।

আর এভাবে, এই হামলার ঠিক এক বছর পরে ৩ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে ত্রিপোলির বাসিন্দারা এই সংবাদে জেগে ওঠে যে লাইব্রেরি আবার চালু হয়েছে। এই উপলক্ষে ফাদার সারাউজ-এর আয়োজনে, স্থানীয় ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা ও অনেক ত্রিপোলিবাসীর উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় (এখানে যার ছবি দেখা যাচ্ছে)।

Exit mobile version