আজ, মানবাধিকার দিবসে, বিশ্বকে আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে আমাদের অনেক বন্ধু, যারা তাদের চিন্তা প্রকাশ করা, প্রশ্ন করা এবং জটিল চিন্তা করা ও গঠনমূলক ভাবে তাদের নিজেদের আগে সমস্যার সমাধান করার মধ্যে দিয়ে নিপীড়নের বিরুদ্ধে নীরবতা ভঙ্গ করেছে।
আজ আমরা আলা আব্দে এল ফাত্তাহ এবং বাসেল খারতাবিল (ওরফে বাসেল সাফাদি) কে স্মরণ করছি, কারাবন্দী আমাদের এই দুই বন্ধু যাদেরকে জোরপূর্বক কারাদণ্ডের শাস্তি প্রদান করা হয়েছে যা তাদের ভবিষ্যৎ-কে এলোমেলো করে দেবে আরব অঞ্চলে উদ্ভাবনী ও মুক্ত চিন্তার বদলে। বাসেল, মার্চ ২০১২ থেকে সিরিয়ার কারাগারে আটক রয়েছে, এবং মুবারকের সময় থেকে বার বার আলাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
আলা, বাসেল এবং অন্য অনেকে যারা তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য অন্যায় ভাবে কারাগারে বন্দী হয়ে রয়েছে তাদের জন্য এই বিশ্বব্যাপি প্রচারণায় নীরবতা ভঙ্গ করুন।
বাসেল–এর জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিরিয়ায়, আর তিনি ওপেন সোর্স সফট্ওয়্যার ডেভলপমেন্ট বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন। তিনি সম্মিলিত এক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আকি ল্যাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং আল-আউসের চীফ টেকনিক্যাল অফিসার ছিলেন, যা এক প্রকাশনা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠা, আর এটি সিরিয়ার প্রত্নতাত্তিক বিজ্ঞান ও শিল্পের প্রতি উৎসর্গকৃত। তিনি সিরিয়ার ক্রিয়েটিভ কমন্সের প্রকল্প প্রধান এবং গণ সংযুক্তির জন্য কাজ করেছে এবং তিনি মোজিলা ফায়ারফক্স, উইকিপিডিয়া, ওপেনক্লিপআর্ট এবং ফাব্রিকাটজর-এর কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করেছেন। তার সাম্প্রতিক কাজের মধ্যে রয়েছে সিরিয়ার পুরোনো শহর পালমাইরাকে ৩ডি ফটোরিয়ালিস্টিকে আবার পুনর্নির্মাণ করা।
ফরেন পলিসি নভেম্বর ২০১২-এ, বাসেলকে বিশ্বের ১০০ জন সেরা চিন্তাবিদের একজন হিসেবে নির্বাচিত করে। বাসেল এক প্রযুক্তি প্রেমী যে বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যবসায় এবং সুশীল সমাজের বিভিন্ন দলের মাঝে নতুন ইন্টারনেট প্রযুক্তির পরিচয় করিয়ে দিয়ে তার দেশের উন্নত ঘটাতে চায়। আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস, বাসেলের ১০০০তম কারাবন্দী দিবসকে চিহ্নিত করছে।
আলা আব্দে এল ফাত্তাহ হচ্ছেন মিশরীয় একটিভিস্ট, ব্লগার এবং ওপেন সোর্স এ্যাডভোকেট, যে তার বিগত তিন বছরের সেরা সময়টা কারাগারে কাটিয়েছেন। তিনি প্রথম জেলে যান মুবারকের আমলে ২০০৬ সালে, এরপর তার দীর্ঘ সময় ধরে এবং প্রভাব তৈরী করা কার্যকলাপের কারণে আলাকে কয়েকবার ২০১১ সাল পর্যন্ত তাকে কারাগারে যেতে এবং বের হতে হয়েছে। ডিসেম্বর ২০১১ –এ সে তার সন্তান খালেদের জন্মদিনে উপস্থিত থাকতে পারেনি, কারণ তখন সে কারাগারে ছিল।
জুন ২০১৪-এ আদালতের বাইরে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
যদিও সেপ্টেম্বরে স্বল্প সময়ের জন্য আলাকে মুক্তি প্রদান করা হয়, কিন্তু ২১ অক্টোবরে আবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে তার আরেকটি জন্মদিন, যা তার ৩৩ বছরের পদার্পণ, সেই ১৮ নভেম্বরও তাকে কায়রোর তোরাহ কারাগারে কাটাতে হয়। প্রতিদিন তাকে মাত্র এক ঘন্টা কারাকক্ষের বাইরে কাটাতে দেওয়া হয়। ১০ ডিসেম্বর থেকে তিনি ৩৮ দিনের অনশন শুরু করতে যাচ্ছেন।
আলার বোন সানা সেইফ, মিশরের কুখ্যাত বিক্ষোভ বিরোধী আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।