বর্ণবাদ আচরণের সম্মুখীন সিরিয়ানদের সমর্থনে লেবানিজদের প্রচারাভিযান চালু

বর্ণবাদ আচরণের সম্মুখীন সিরিয়ানদের সমর্থন করে একটি প্রচারাভিযান (আরবিতেঃ الحملةالداعمةللسوريينبوجهالعنصريّة) গত ২১ মার্চ, ২০১৪ তারিখে লেবাননে চালু করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক বৈষম্য দূরীকরণের জন্য পালিত আন্তর্জাতিক দিবসে এটি চালু করা হয়। “সমস্ত [লেবাননে অবস্থিত] সিরিয়ানদের প্রতি সহিংসতা, বর্ণবাদী রাজনৈতিক অলঙ্কারশাস্ত্র এবং সংশ্লিষ্ট মিডিয়ার প্রতারণাকে প্রত্যাখ্যান” করে লেবানিজরা এটি চালু করেছে। অন্য কথায় বলতে গেলে এটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে, লেবাননে বসবাসরত সিরিয়ার উদ্বাস্তুদের প্রতি বেড়ে চলা যেসব বৈষম্য মূলক আচরণ মনে মনে উপলব্ধি করা হচ্ছে, সেগুলোকে মোকাবেলা করা। লেবানিজ রাজনীতিবিদদের প্রতি সক্রিয় কর্মীরা অভিযোগ করেছেন যে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত বিভিন্ন স্বার্থ হাসিল করতে সিরিয়ান শরনার্থী এবং কোন কোন অঞ্চলের লেবানিজ অধিবাসীদের মাঝে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

মোহাম্মাদ ছারের সম্মানে “আমি কোন শহীদ নই” শিরোনামের প্রচারাভিযান শুরু করার পর পর্যায়ক্রমে অলিম্পিকের স্কি খেলোয়াড় জ্যাকি চামুনের সমর্থনে সর্ব প্রথম “আমি নগ্ন নই” শিরোনামের প্রচারাভিযানটি শুরু করা হয়। এরপর পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে এই সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী প্রচারাভিযানটি অনলাইন প্রতিবাদের একই (এবং এখন বেশ পরিচিত) পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছে। এই পদ্ধতিতে সাধারণ নাগরিকেরা তাদের সেলফি পোস্ট করছে, যা বিভিন্ন বার্তা বহন করে থাকে।  

ফ্রেঞ্চ ভাষায় বহুল প্রকাশিত লেবানিজ পত্রিকা “এল’ ওরিয়েন্ট-লে জোরে” দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে প্রচারাভিযানে অংশ নেয়া একজন সক্রিয় কর্মী বলেছেনঃ

Les politiciens n'arrivent même pas à résoudre le problème de l'approvisionnement en électricité, des transports en commun, des violences à Tripoli, dans le Hermel, de la violence conjugale, de la cherté des télécommunications… Ces problèmes existaient avant l'arrivée des réfugiés syriens, et nos politiciens ne les ont pas résolus. Ils ne veulent rien résoudre, ils ne l'ont jamais voulu

এমনকি রাজনীতিবিদেরা মৌলিক সমস্যাগুলোরও সমাধান করতে পারেন না। যেমন, আমাদেরকে বিদ্যুৎ এবং গণ পরিবহন সুবিধা প্রদান করা, ত্রিপোলি এবং হারমেলে সহিংসতা বন্ধ করা, পারিবারিক সহিংসতা বন্ধ করা, ব্যয় বহুল টেলিকমিউনিকেশন সুবিধা প্রদান করা… সিরিয়ান শরণার্থীরা আসার আগেও এই সমস্যাগুলো ছিল। কিন্তু আমাদের রাজনীতিবিদেরা সেগুলোর কোন সমাধান করেন নি। তারা কোন সমস্যারই সমাধান করতে চান না। তারা অতীতেও কখনও কোন সমস্যার সমাধান করেন নি। 

যারা এই প্রচারাভিযানটিতে অংশগ্রহন করেছেন, তাদের কয়েকটি উদাহরণ এখানে দেয়া হলঃ 

“এবং আমাদের বাড়ি আমাদের বাড়ি হবে যদি আমরা আমাদের পিতামাতাকে পিতামাতা, ভাইকে ভাই হিসেবে মেনে নিই।  

আমি একজন সিরিয়ানের সাথে দেখা করেছিলাম, যিনি আমাদের দুইজন কেই গর্বিত করেছেন। 

উপরেঃ মানবতাবাদী। নিচেঃ বর্ণবাদী

সে অপমানকর মৃত্যুর [আমাদের দেশে] মৃত্যু [তার দেশে] থেকে রেহাই পাননি।  

প্রতিটি সিরিয়ানই ক্রিমিনাল নয় আবার প্রতিটি লেবানিজই নিষ্পাপ নয়। 

সিরিয়ান শরণার্থীরা আমাদের মতঃ তাঁরা বাঁচতে পারে না। দুর্নীতিগ্রস্ত শাসকশ্রেণীর প্রতি আপনার রাগ ঝারুন।  

সিরিয়ান হওয়ার আগে আমি একজন মানুষ  

বর্ণবাদকে না বলুন। লেবানন একটি ছোট্ট দেশ, কিন্তু এর হৃদয় অনেক বড়।  

আমাদের ৯০ শতাংশ বাড়ি সিরিয়ানদের তৈরি। আপনি বর্ণবাদী হলে, আপনার ঘর ছেড়ে দিন।  

এমনকি কিছু লোক আবার ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকারেরও সমালোচনা করেছেন। 

যেহেতু এক দেশের সীমানা অতিক্রমের মাধ্যমে ‘অভিবাসন’ হয়ে থাকে … তাই আমি ‘স্বাগত’ জানাতে পারিনা, কারণ, সেটি শুধুমাত্র আমার দেশ নয়।  

এবং তারা এমনকি একটি হাইওয়েতে একটি সাইনবোর্ডও ঝুলিয়ে দিয়েছেন:

প্রিয় সিরিয়াবাসী জনগণ, স্বাগতম! লেবাননের হৃদয়ে আপনাদের স্বাগতম।  

Exit mobile version