কুয়াশায় আচ্ছন্ন সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া

প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়ায় দাবানলের পর সিঙ্গাপুর ও পশ্চিম মালয়েশিয়ার বাতাসের গুণমান বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে।

গত ২১ জুন ২০১৩ তারিখে দুপুর ১২ টায় সিঙ্গাপুরে বায়ু দূষণের সূচক ৪০১ এ পৌছায়, যা সে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর পরের দুই দিন ছিল মালয়েশিয়ার পালা। সিঙ্গাপুর থেকে দুই শত কিলোমিটার দূরের উপকূল শহর মুয়ারে গত ২৩ জুন তারিখে বায়ু দূষণ সূচক ছিল ৭৫০।

খারাপ বায়ুর কারণে মুখের মাস্ক কেনার জন্য অনেক সিঙ্গাপুরবাসীই হাসপাতাল এবং ফার্মেসীতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। জুঞ্জি.ডাবলু টুইট করেছেন:

সিঙ্গাপুরের কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ। ছবিঃ ইউমিআরনেল, কপিরাইট @ডেমটিক্স {০৬/২০/২০১৩}

@বিবিইউটিফুলঃ মানুষ N95 মাস্ক খুঁজছে, দেখুন এই সপ্তাহে আমি কি পেয়েছি। নিজের বাড়ি সবচেয়ে নিরাপদ স্থান …

যখন ব্রায়ান, জনাব এসজিএজি ২২ জুন তারিখে পরিশেষে একটি মাস্ক হাতে পেয়ে যতক্ষণে উদযাপন করলেন ততক্ষণে বায়ুর গুণমান উন্নত হয়ে গেছে!

‏@এসজিএজি_এসজিঃ দুর্ভাগ্য ব্রায়ান। ৫ ঘন্টা ফার্মেসীর লাইনে দাঁড়ানোর পরে যখন N95 মাস্ক সে হাতে পায়, ততক্ষনে কুয়াশা পরিষ্কার হয়ে গেছে। #এসজিকুয়াশা

যদিও কিছু লোক বাড়িতে থাকার সরকারি উপদেশ মেনে চলেছেন। “আমি একটি উদর পেয়েছি” – সপ্তাহান্তে পানীয় দুধ এবং রুটি খেয়ে ভাল বোধ করছি এবং টিভি দেখে সময় অতিবাহিত করছিঃ 

সবচেয়ে খারাপ দিকটি হল, খারাপ আবহাওয়া আরও খারাপ হওয়া সত্ত্বেও আমরা এখনও কাজের জন্য রিপোর্ট করছি। আমি উদ্বিগ্ন, কারণ অফিসের কাজ কর্মচারীরা যদি বাড়িতে বসে করার অনুমতি পায়, তখনও কাজ করার জন্য আমাকে রিপোর্ট করতে হবে। আমার কাজ সাইট ভিত্তিক হওয়ার কারণে দিনটিতে যাই ঘটুক না কেন, হাস্যকর ভাবে কাজের জন্য আমাকে অফিসে যেতেই হবে।

কিন্ত যাইহোক, আমি কুয়াশার সঙ্গে ৩ দিন যুদ্ধের পর অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং আজও আমার নাক মাঝে মাঝেই ভিজে যাচ্ছে।

মালয়েশিয়ার মুইয়ারে বিয়ের সময় এক দম্পতি ঘন কুয়াশার কারণে মুখে মাস্ক পড়েছেন। ছবিঃ লেনা হিতাম, কপিরাইট @ডেমো টিক্স [৬/২২/২০১৩]

যদিও বি এল জু গভীরভাবে চিন্তা করেছেন, সিঙ্গাপুরিয়ানদের পরিবেশের জন্য কিভাবে কাজ করা উচিতঃ

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমাদের অধিকাংশ লোকের বিশুদ্ধ বায়ুর মর্ম উপলব্ধি করা উচিত, তাঁদের সৃষ্ট কুয়াশার অনুপস্থিতে নয়। অন্যদের প্রতি আঙ্গুলের ইশারার পরিবর্তে বরং এই সমস্যার মূল সমাধানের চেষ্টা করা উচিৎ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ব্যাপারটি সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারা এবং এই গল্পের নৈতিকতা অর্জন করা।

এদিকে, প্যাট্রিক নিন্ম একটি নীরব প্রতিবাদ সমর্থন করছেন:

মানুষ হিসাবে আমাদের উঠে দাঁড়ানো উচিৎ এবং ইন্দোনেশিয়াকে একটি সুস্পষ্ট সংকেত পাঠাতে হবে যে, আমাদের স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির উপর এই ক্ষতিকর আঘাত আমরা সহ্য করব না।

কুয়াশার অবস্থা আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠলে কালো পরিধান দ্বারা তুড়ি মারুন, দয়া করে মুখোশ পরুন এবং আপনি যেখানে আছেন সেখানে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য পানি এনে রাখুন।

রেস্প্রোমাস্ক – যাদের ​​এই ধরনের জিনিসে ঝুঁকি আছে – রিপোর্ট করেছে, মুরা এবং লিদাঙ্গে মালয়েশিয়া জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে, মালয়েশিয়া তাদের কিছু স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে।

কিন্তু দায়ী কে? এবং কারা এর মূল্য ​​দিবে? দায়ীকে খোঁজা শুরু হয়েছে। সিঙ্গাপুরের পরিবেশ মন্ত্রণালয় দায়ী নামগুলি চেয়েছে এবং তাঁদের খুঁজে বের করে শাস্তির জন্য ইন্দোনেশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এর উত্তরে, ইন্দোনেশিয়ার পিপলস কল্যাণ এর সমন্বয়ের মন্ত্রণালয় তিরস্কার করে বলেছে যে, সিঙ্গাপুর শিশুসুলভ আচরণ করছে। সিঙ্গাপুরের এমেরিটাস সিনিয়র মন্ত্রী প্রত্যাশা করেছেন, ইন্দোনেশিয়া প্রতিবেশীদের প্রতি আরো মিশুক হবে।

এদিকে, কিছু ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক কুয়াশার ব্যাপারে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের চেষ্টা করছেন।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বাম্বাং ইউধোনো ইতিমধ্যে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার কাছে ইন্দোনেশিয়ার কিছু অংশে দাবানল দ্বারা সৃষ্ট কুয়াশার জন্য আনুষ্ঠানিক ভাবে ক্ষমা চেয়েছেন

Exit mobile version