২০১৩ সালের ক্ষমতায়ন ল্যাবে মানবাধিকার কর্মীদের ডিজিটাল দক্ষতা শাণিতকরণ

এগারোজন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী নতুন ডিজিটাল দক্ষতায় দীক্ষা নিয়েছেন এবং ইতালির ফ্লোরেন্সে এ বছরের ক্ষমতায়ন ল্যাবে তাঁদের এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন।

রবার্ট এফ কেনেডি ট্রেইনিং ইন্সটিটিউট কর্তৃক আয়োজিত সপ্তাহ-ব্যাপী এই প্রশিক্ষণ আয়োজনের লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল সক্রিয় কর্মীদের ক্ষমতায়ন। বিশেষকরে যাদের বাক স্বাধীনতা ক্রমবর্ধমানভাবে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কা থেকে নির্বাসিত একজন সাংবাদিক নিলান্থা ইলাঙ্গামুওয়া। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠিত অনলাইন পত্রিকা “দ্যা শ্রীলংকা গার্ডিয়ান” এ তাঁর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লিখেছেন।

একটি কর্মশালায় মানবধিকার প্রতিরক্ষাকারীরা। ছবি কৃতজ্ঞতা আন্দ্রিয়ে আরজেবা। 

“আমাকে কুছু ডাকো” নামক প্রামাণ্য চিত্রের চিত্রায়ণে অংশ নেওয়ার সময় নিলকে তাঁর বন্ধুরা যে নামে ডাকত সে অনুভূতির কথা বর্ণনা করেছে। উগান্ডার লৈঙ্গিক সংখ্যালঘুরা প্রতিনিয়ত যেসব জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে, সেগুলো এখানে দেখানো হয়েছেঃ

উগান্ডার হোমোফোবিয়াদের নিয়ে তৈরী করা একটি প্রামাণ্য চিত্র এক ঘন্টা ধরে দেখার পর যখন ফিরছিলাম তখন মনে হচ্ছিল আমি যেন চিৎকার করে কেঁদে ফেলবো। উগান্ডা বিশ্বের সেসব দেশগুলোর একটি, যেগুলো পৃথিবীর ইতিহাসের পাতায় ধারাবাহিকভাবে মানুষের দুঃস্বপ্নের যোগান দিয়ে যাচ্ছে।

এলজিবিটি কর্মী ফ্রাঙ্ক মুগিশা ল্যাবের অংশগ্রহণকারীদের একজন, যাকে এই প্রামাণ্য চিত্রটিতে দেখা গিয়েছে।

নিলান্থা তাঁর সঙ্গী মানবাধিকার প্রতিরক্ষাকর্মীদের সাথে সামাজিক পরিবর্তন এবং উন্নয়নশীল দেশে বিবাচনের মতো ইস্যু নিয়ে বলা, ধরাবাঁধা কিছু কথোপকথন শেয়ারও করেছেনঃ

“উন্নয়নশীল জাতি” হিসেবে আখ্যায়িত করা দেশগুলোতে আমরা কী দেখতে পাচ্ছি ? দেখতে পাচ্ছি দূর্ভোগের সচরাচর বাস্তবতা! নিয়ম-নীতির অকৃতকার্যতা! “সামাজিক পরিবর্তন” অসম্ভব বলে মেনে নিয়ে জীবনের আশা হারিয়ে ফেলা! এটি সবচেয়ে সাধারণ শোকাবহ ব্যাপার যা আমরা আমাদের মাতৃভূমিতে দেখে থাকি। স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই করার ইচ্ছাকে আমাদের সমাজে নিশ্চুপ থাকার সংস্কৃতির মাধ্যমে বাধা দেওয়া হয়।

বিখ্যাত ইতালীয় সাংবাদিক লুকা ডি বায়াস মিডিয়ামের জন্য একটি ছোট পোস্ট লিখেছেন। সেখানে তিনি ব্যক্ত করেছেন যে পশ্চিমা বিশ্বের দ্বারা অনুমোদিত গণতন্ত্র না নেওয়াটা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্লরেন্সে আরকেএফ ট্রেইনিং ইন্সটিটিউটে সক্রিয় কর্মীরা আমাদের গন্তন্ত্রকে ভালোবাসতে শেখাচ্ছেন।

লুকা ডি বায়াস আরএফকে ট্রেইনিং ইন্সটিটিউটের সম্মেলন এবং আন্তর্জাতিক ডিজিটাল সক্রিয় কর্মীদের সাথে কথা বলে যা শিখেছেন তা তিনি প্রতিফলিতও করেছেনঃ

কিন্তু সক্রিয় কর্মীরা যা শিখলেন তা তাঁদের অহিংস যুদ্ধে সাহায্য করতে পারবে। “গণতান্ত্রিক পশ্চিমে” বাস করা জনগণ হিসেবে আমরা তাঁদের কাছ থেকে আরো বেশী কিছু শিখতে যাচ্ছি। গণতন্ত্র প্রদেয় কোন বস্তু নয়, এটি একটি প্রক্রিয়াঃ এবং আমাদের এটি ধরে রাখতে হবে। আমাদের এটিকে যত্ন করে লালন করতে হবে। সারা বিশ্ব থেকে আসা সক্রিয় কর্মীরা তাদের নিজ নিজ জনগণকে সাহায্য করে। কিন্তু তাঁরা আমাদেরকেও সাহায্য করে।

ফ্লরেন্সে মানবধিকার প্রতিরক্ষা কর্মীদের জন্য ডিজিটাল সক্রিয়তা কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি কৃতজ্ঞতা আন্দ্রিয়ে আরজেবা। 

নিলান্থা একটি উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁর ব্লগ পোস্ট শেষ করেছেন। কর্মশালাটি শেষ করে যাওয়ার সময়কার অনুভূতি তিনি এতে ব্যক্ত করেছেন।

খ্যাতিমান হলিউড অভিনেত্রী গ্লোরিয়া রিউবেন তুলে ধরেছেন, যাদের প্রতিবাদ করার কোন স্থান নেই, যাদের অধিকারগুলোকে স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা ও অবিচারের বসতিতে মাটি চাঁপা দেওয়া হয়,  সেসব মানুষের জন্য পৃথিবীটাকে তৈরী করতে চলুন আমরা একত্রিত হই। যে সমাজ এখন অত্যাচারীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, সেসব সম্প্রদায়ের মাঝে চলুন আমাদের অধিকারের গান গাই, যেখান থেকে লোকেরা সে সমাজ পরিবর্তনের নতুন চিন্তা নিয়ে এগিয়ে আসবে। অসহায় প্রাণে আশা জাগিয়ে এটি আমাদের দুঃখ এবং দুর্দশার কান্নাগুলোকে উপরে ফেলবে।

 

ল্যাবের দাপ্তরিক ব্লগ পোস্টগুলো আপনি পড়তে পারবেন এখান থেকেঃ http://traininginstitute.rfkcenter.org/

Exit mobile version