কাতার: মেঘে ঢাকা এক বিশ্বকাপ

রিমোট কন্ট্রোলের নিয়ন্ত্রণে সৌর শক্তিতে পরিচালিত মেঘে তৈরি হবে ছায়া, যা কাতারের ফুটবল স্টেডিয়ামগুলোকে ঠান্ডা করার কাজে ব্যবহৃত হবে, এমনই এক সংবাদ বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। এই সংবাদটি তার নিজস্ব গতিশীলতা লাভ করেছে, আর এই সংবাদটি উপসাগরীয় এলাকার ছোট্ট কিন্তু ধনী রাষ্ট্র কাতারকে আবার সবার আলোচনার মাঝে নিয়ে এসেছে।

প্রায় এক সপ্তাহ আগে, দি পেনিনসুলা নামক সংবাদপত্র তিন অনুচ্ছেদের এক বিস্তারিত প্রবন্ধে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণার কথা লেখে, এটি ছিল কাতারের স্টেডিয়ামগুলোকে ঠান্ডা রাখার জন্য কৃত্রিম মেঘের সৃষ্টি করা বিষয়ক এক গবেষণা, এটিকে এক আরবী সংবাদপত্রের সংবাদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প “কৃত্রিম মেঘে” ঢাকা স্টেডিয়াম, ছবি কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের।

দুই দিন পরে, এই কাহিনীটি বিবিসির ক্রীড়া পাতায় ছাপা হয়, এইবার তা কাতার বিশ্ববিদ্যালযের রোবোটিক মেঘের অ্যানিমেশন সহ ছাপা হয়।
আর তার পরের দিন, সিএনএন-এ, এই বিষয়টি সংবাদ হয়ে আসে:

আর এখন এই সংবাদটি টাইম, এনবিসি স্পোর্টস, ফাস্ট কোম্পানি, ব্লাজ ব্লগ, দি ডেইলি মেইল, এনগ্যাজেটএবং আই০নাইন, এ রকম নামের আরো অনেক পত্রিকায় সংবাদ হয়ে এসেছে।

যদিও কাহিনীটি ইয়াহু স্পোর্টসের থেকে নেওয়া, তবে সম্ভবত সম্ভবত সবচেয়ে অদ্ভুত-এবং সবচেয়ে টুইট করা বিষয়টি ছিল, “কাতার তার কৃত্রিম মেঘের ধারণা দি সিম্পসন নামক টেলিভিশনে প্রচারিত এক কার্টুন থেকে চুরি করেছে” শিরোনামে।

১৯৯৫ সালে তার বিখ্যাত দুই পর্বের কাহিনী যার শিরোনাম ছিল, “কে, মি: বার্নসকে গুলি করেছে”?-তে, বিপজ্জনক বিদ্যুৎ শক্তির মালিক সি. মন্টগোমারি বার্নস একটি যন্ত্র বানানোর পরিকল্পনা করেন, যা এক বিশাল মেঘ দিয়ে সূর্যকে ঢেকে দিতে পারে এবং স্প্রীংফিল্ড নামক এলাকাকে সবসময় অন্ধকারে ঢেকে রাখে:

দি সিম্পসন নামক টেলিভিশন কার্টুন থেকে নেওয়া একটি দৃশ্যের ছবি।

এই কার্টুন ছবির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি ছিল যে, “কাতার যখন এই বিষয়ে তাদের নিজস্ব ভাবনা যোগ করেছে, তখন আসলে এর মূল ধারণাটি এসেছে ১৬ বছরের পুরোনো এক কার্টুন ছবি থেকে”, এমনকি সিম্পসন নামক কার্টুনটির এক প্রাক্তন লেখক এই বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া প্রদান করেছে:

@দ্যাটবিলওকলে: এই ভাবনার জন্য কাতারের উচিত আমাকে আবার অর্থ প্রদান করা, তাহলে বিষয়টি বেশ উত্তম হবে ।http://yhoo.it/g1EcMo

তার অনেক খবর এবং পুনরায় ছাপা সংবাদে, বিশ্বকাপে “মেঘের” গল্প হাজার টুইটের জন্ম দিয়েছে।

@এসজিম্যানসফিল্ড:২০২২ সালের বিশ্বকাপের জন্য কাতার মানুষ্য সৃষ্টি মেঘ তৈরি করতে যাচ্ছে… কেউ কি কখনো সূর্যকে ঢেকে দেবার কথা শুনেছে? http://bit.ly/ghd2Ur

@স্টাফঅরডিমাইজ: সুন্দর! কাতার বিশ্ববিদ্যালয় কৃত্রিম রোবটিক মেঘ তৈরি করবে: বিশ্বকাপ চলাকালীন সময় মাঠের তাপমাত্রা সুনির্দিষ্ট মাত্রায় কমিয়ে আনার জন্য তারা সম্ভবত তা করতে যাচ্ছে।http://t.co/RnleHP9

@মাবড্রাব্বো: কাতার-২০২২ বিশ্বকাপের জন্য রোবট ক্লাউড বা কৃত্রিম মেঘ? দারুণ! আর এর ফলে যে গর্জন সৃষ্টি হবে, সে ক্ষেত্রে কি করা হবে? http://bit.ly/dLRoKK#কাতার#ওয়ার্ল্ডকাপ#২০২২#ফুটবল

অনেকে রসিকতা করেছে:

@ডিজিটালক্যাস্ট্রো: কাতার স্টেডিয়ামের উপর মেঘের ঘনঘটা;) দারুন এক ভাবনা।http://twitpic.com/4dohml

@এইচমালসাবাহ: কাতারের মেঘ কি কুয়েতে ছেয়ে যাবে#কুয়েত? :p http://plixi.com/p/86752846

তবে অন্যরা, প্রায়-গুরুত্বহীন সূত্র থেকে আসা চলতে থাকা এই সংবাদের ব্যাপারে তাদের বিরক্তি প্রকাশ করেছে:

@ডেভিডকাতার: @জেমস_করবেট: এই মেঘের গল্প দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ছে, কাতার ২০২২ বিশ্বকাপের সাথে যার আদৌও কোন সম্পর্ক নেই, কাতারের এই নিজস্ব গভীর গবেষণার সাফল্যের বিষয়ে কোন একটাও প্রমাণ নেই।

@দোহানিউজ: কাতার বিশ্বকাপে কৃত্রিম মেঘের গল্প কি টুইটারের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং এটি সর্বত্র তার কাহিনী প্রকাশ করে চলছে??

৫০০,০০০ মার্কিন ডলার ব্যায়ে তৈরি হতে যাওয়া কৃত্রিম এই মেঘের এই সংবাদটি সত্যি কি না, তা দেখার জন্য আমাদের কাতারে অনুষ্ঠিত ২০২২ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

Exit mobile version