আরব বিশ্ব: “ফিলিস্তিনের আবেদ রাবো কাতারের ঘাড় চেপে ধরার চেষ্টা করছেন”

ফিলিস্তিনের আবেদ রাবো কাতারের উপর এক পুরোদস্তুর আক্রমণ পরিচালনা শুরু করেছেন

ফিলিস্তিনের আবেদ রাবো কাতারের উপর এক পুরোদস্তুর আক্রমণ পরিচালনা শুরু করেছেন।

কাতার ভিত্তিক আল জাজিরা প্যালেস্টাইনিপেপারস নামে পরিচিত প্রায় ১,৬০০-এর বেশি ফিলিস্তিন সরকারের গোপন দলিল ফাঁস করে দেয়। এই সব নথি মূলত এক দশক ধরে চলা ইজরায়েলের সাথে শান্তি আলোচনার দলিল। এই বিষয়টি অনলাইনে এক উত্তেজনার সৃষ্টি করে। এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়, যখন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই ফাঁসের ঘটনা ও প্রকাশিত এইসব নথির বিষয়বস্তু এবং উপাদান সমূহকে অস্বীকার করে এবং কাতারের উপর পুরোদস্তুর এক আক্রমণ শুরু করে।

এই সমস্ত দলিলের মধ্যে রয়েছে মেমো, ই-মেইল, ম্যাপ, গোপন মিটিং-এর এর লিখিত আলোচনা, উচ্চ পর্যায়ে বিভিন্ন তথ্য বিনিময়ের দলিল, কৌশলগত কাগজ এবং এমনকি পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করা তথ্য এবং এসব নথি ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে এই সব ঘটনা ঘটেছে এবং কয়েকটি ফাইল একসাথে করে প্রকাশ করা হয়েছে এবং এগুলো নতুন অনেক ঘটনা উন্মোচন করেছে ।

*পূর্ব জেরুজালেমে ইজরায়েলিদের অবৈধ বসতি স্থাপন করার ইচ্ছা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মেনে নেওয়া, এবং হারাম আল শরিফের/টেম্পেল মাউন্টের ব্যাপারে (বায়তুল মোকাদ্দাস) “সৃষ্টিশীল” হবার ইচ্ছা;
*শরণার্থী এবং তাদের ফিরে আসার অধিকারের বিষয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আপোষ করার প্রস্তুতি নিয়েছিল;
*ইজরায়েলের সাথে নিরাপত্তা বিষয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার বিস্তারিত বিবরণ;
*২০০৯ সালের শেষ দিকে ইজরায়েলি এবং আমেরিকান কর্তৃপক্ষের সাথে গোপন আলোচনা, সে সময় জাতি সংঘে গ্ল্যাডস্টোন রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা চলছিল।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাস এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইয়াসেন আবেদ রাবো এই নথি ফাঁসের ঘটনা নিয়ে রামাল্লায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এই অঞ্চলের বিভিন্ন নেট নাগরিকরা নিবিড়ভাবে এই সম্মেলনের উপর নজর রেখেছিল। বিশেষ করে টুইটারকারীরা আবেদ রাবোর এই আক্রমণের ঘটনায় তথ্য সংগ্রহ করে। আবেদ রাবো কাতারকে আক্রমণ করেছিল। তথ্য ফাঁস করা প্রতিষ্ঠান আল জাজিরার মূল অফিস এই কাতারেই।

সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে মিশাল আল গারগাওয়ি উল্লেখ করছে:

আবেদ রাবো কাতারের ঘাড় চেপে ধরছে:

সংযুক্ত আরব আমিরাতের লেখক সুলতান আল কাসেমি এই সংবাদ সম্মেলনের উপর নিবিড় ভাবে নজর রেখেছিলেন। তিনি রাবোর এক উদ্ধৃতির কথা উল্লেখ করেছেন। এই টুইটে উল্লেখ করা হয়েছে যে আবেদ রাবো কাতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, তারা “আরব বিশ্বকে বিভক্ত করে ফেলছে”।

আবেদ রাবো “ কিভাবে কাতারের আমির আলাদা আলাদা সম্প্রদায়ে আরব বিশ্বকে বিভক্ত করছে#প্যালেস্টাইনপেপারস।

আরেকটি টুইটে, আল কাসেমি যোগ করেছেন:

আবেদ রাবো উল্লেখ করেছে “যারা আল জাজিরার পেছনে রয়েছে এবং যারা তাদের অর্থ সাহায্য করছে”, এর মাধ্যমে পরোক্ষ ভাবে সে কাতার সরকারের প্রতি অভিযোগের আঙ্গুল তুলে ধরছে।

জর্ডানের নাগরিক আলি আবুনিমাহ উল্লেখ করেছে:

ফিলিস্তিনি আবেদ রাবো কাতার এবং তার আমিরের উপর এক পূর্ণোদ্যমে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন, যে আমিরের সাথে এই সব ফিলিস্তিনি নথিপত্র ফাঁসের কোন সম্পর্ক নেই#প্যালেস্টাইনিপেপারস।

ওমানের আব্বাস আল লাওয়াতি উপরের বক্তব্যের সাথে একমত:

আবেদ রাবো ব্যক্তিগত পর্যায়ে কাতারকে আক্রমণ করছে #প্যালেস্টাইনপেপারস।

প্যালেস্টাইনিয়ান@ফিলিস্তিনি বিস্মিত:

কি বিচিত্র এক বিষয়, আবেদ ইয়াসের বলছে যে, আলজাজিরা সকল কিছু বাইরে থেকে সংগ্রহ করেছে.. হুম. নির্বোধ, সকলে যাতে দেখতে পায় তার জন্য সকল নথি অনলাইনে সহজে পাওয়া যাচ্ছে।

মিশরীয় নাগরিক @৩আরবওয়ে মন্তব্য করেছে যে মিশরীয় গায়ক হোসনি তামার এর চেয়ে ভালো ভাবে কোন অনুষ্ঠান প্রদর্শন করতে সক্ষম:

তামার হোসনি নামক গায়ক আবেদ রাবোর চেয়ে অনেক ভালো ভাবে অনুষ্ঠান প্রদর্শন করতে সক্ষম। আমি বুঝাতে চাইছি আপনার এমন একজনের প্রয়োজন, যে লাফাতে এবং শরীর দোলাতে পারে #প্যালেস্টাইনপেপারস।

এবং @ড্রাডি এর সাথে যোগ করেছে:

পাসপক্স: আমরা দেখতে চাই, কাতারের আমির ইজরায়েল এবং ইরানের সাথে যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক তৈরি করেছে এবং আরব প্রতিবেশীদের উপর নজর রাখছে, সেই সব নথি প্রকাশ করে নিজের স্বচ্ছতা তুলে ধরুক।

প্যালেস্টাইনি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বাইরে থেকে এসব নথি গ্রহণ করা হয়েছে তার জবাবে মিশরীয় ফুসতাত ঠাট্টাচ্ছলে মন্তব্য করছে:

ইয়াসের আবেদ রাবোর মতে #প্যালেস্টাইনিয়ান পেপারস সঠিক নথি নয়, তাহলে একজন বিস্মিত হতে পারে রাবো, সায়েব এরকাত-এর মত ব্যক্তিদের মতে কোন জিনিসটি সঠিক।?

টুইটারে আরো আলোচনার জন্য, #প্যালেস্টাইনপেপারস হ্যাশট্যাগটি অনুসরণ করুন।

ছবির জন্যে কৃতজ্ঞতা: সুলতান আল কাসেমির

Exit mobile version