মিশরে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে লাল মাংসের দাম নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার সাথে এর কোন সম্পর্ক থাকলে বা না থাকলেও, এটা পরিষ্কার যে মাংসের উচ্চ মূল্যের জন্য অনেক মিশরীয় নিরামিষভোজী হয়ে যাচ্ছে বাধ্য হয়ে। সম্প্রতি, নাগরিকরা মাংস বয়কটের আহ্বানও করেছেন মূল্য কমার আশায়।
গত ১৫ই এপ্রিল মাসর আল ইউম তার ব্লগে এই সংবাদ জানিয়েছেন:
উইকাইট তার পরে লিখেছেন যে গত কয়েক বছরে লাল মাংসের দাম কিভাবে কমেছে আর বেড়েছে।
যতক্ষণ না প্রতি কেজির মূল্য ৩০ তারপরে ৪০ পরে ৫০ ইজিপি হয়েছে। তারপরে আমরা ভাবছিলাম যে এটা আরো বাড়বে কিনা, আর এটা বাড়তেই থাকল ৬০ আর পরে ৭০ ইজিপি না হওয়া পর্যন্ত। এক কিলোর মূল্য ৭০ ইজিপি! এমন কেন হবে?!
এর পরে তিনি ঘোষণা করেছেন যে মূল্য না কমার পর্যন্ত তিনি মাংস বয়কট করবেন।
আপনার যদি বাচ্চা থাকে যাদের প্রতিদিনের খাদ্যে প্রোটিন লাগবে, তাহলে মুরগির কথা ভাবতে পারেন বিকল্প হিসাবে। আর মুরগির দাম বাড়লে মাছ আছে। আর মাছের মূল্যও বাড়লে, ব্রাজিল থেকে আমদানি করা মাংস ২০ ইজিপি প্রতি কিলোগ্রাম খুবই ভালো।
ইজিপ্ট টুডে মিশরে মাংস বয়কটের ইতিহাস নিয়ে লিখেছেন:
এই বয়কটের প্রচারণা সব থেকে কার্যকর ভাবা হচ্ছে আশির দশকে যখন দক্ষিণ কায়রোর এল মাদি জেলার কিছু ধনী নারী মাংস বয়কটের আহ্বান জানান যখন এর মূল্য ১০ ইজিপি হয়ে যায় প্রতি কিলোগ্রামে।
আগের বিক্ষোভে কেবলমাত্র নাগরিকরা জড়িত ছিলেন, কিন্তু এইবারে সরকার সহ সবাই রাজি হয়েছেন এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত এই বিক্ষোভে অংশগ্রহন করার। তবে কসাইদের সংঘ প্রস্তাব করেছে যে মানুষ একেবারে বয়কট না করে পরিমানে কমিয়ে দিতে পারেন।
এমনকি কৃষি মন্ত্রী আমিন আবাজা- মিশরীয়দের মাংস কেনা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন আর ব্যবসায়ী আর খামারের মালিকদের লোভের বিরুদ্ধে লড়বার জন্য অন্য উপায় খোঁজার কথা বলেছেন।
মনে হচ্ছে, মাংস বয়কট করার প্রচারণা আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ইজরায়েলে পৌঁছেছে, আর মিশরীয় ব্লগার কায়রো লাইফ রিভিউ এই সমস্যা সমাধানে ইজরায়েলের সাহায্যের প্রস্তাবের কথা লিখেছেন:
আমি আজকে যখন মিশরের মাংস বয়কটের সংবাদের জন্যে গুগলে খুঁজেছিলাম, অজ্ঞাত একজন ইহুদি ব্লগার ফিলিস্তিন টুডেতে প্রকাশিত একটা প্রতিবেদনের প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ফিলিস্তিন টুডে আর আল মাসরিউন সংবাদপত্র অনুসারে, ইজরায়েল দয়া করে আমাদের মাংসের কষ্টের সময়ে সাহায্য করতে চেয়েছে একটা ১৫০ টন মাংস আমদানি চুক্তি পাকাপোক্ত করে। মিশরের কৃষি মন্ত্রণালয় একে সহৃদয় প্রত্যাখান করেছেন! ইশ্বরকে ধন্যবাদ! তারা আরো নিশ্চিত করেছে যে মাংসের কোন কমতি নেই, আর গ্রাহকদের আহ্বান করেছেন তারা মাংস বয়কট করে মূল্যের সমতা আনার জন্য।
তিনি তার পর থেকে ভাবছেন এমন প্রস্তাবের পিছনে ইজরায়েলের কোন গোপন উদ্দেশ্য আছে কিনা:
সংবাদের শিরোনামে,ফিলিস্তিনি সংবাদপত্র লিখেছে যে ইজরায়েলি সরকার ‘মিশরীয়দের বিনামূল্যে মাংস দিতে চাচ্ছে’। কিন্তু বিনামূল্যে আর রপ্তানী এক জিনিষ না। আমার ধারণা ইজরায়েল এই চুক্তি থেকে বহু টাকা আয় করবে!!! আর ইজরায়েলি কর্তৃপক্ষ যদি এতো ভালো মনের আর মাংস দিয়ে সাহায্য করতে রাজি থাকে তো, তারা গাজার অভুক্ত মানুষকে তা দেয় না কেন।
আসলে কেউ একমত হতে পাচ্ছে না যে মাংসের এমন উচ্চমূল্যের পিছনে কারন কি। কিছু মানুষ সরকারকে দোষ দিচ্ছে, আর সরকার কসাই আর ব্যবসায়ীদের দোষ দিচ্ছে, আর কসাই ও ব্যবসায়ীরা অর্থনীতিকে দোষ দিচ্ছে গোটা ব্যাপারটির জন্য।