সিরিয়া: সমুদ্রে তীরের গল্প

ছোট্ট ভূমধ্যসাগরীয় শহর টার্তুসের এক ইংরেজী সাহিত্যের প্রফেসর আর মাতৃভূমিতে ভ্রমণরত একজন সিরিয়-কানাডিয় লেখক সি ব্রিজ নামে একটা ক্যাফেতে কিছু সময় দৃষ্টি বিনিময় করেছিলেন। এভাবেই মারিয়া আর আবু ফারেজ তাদের (অনলাইনে প্রকাশিত) উপন্যাসের রোমাঞ্চকর যাত্রা শুরু করেন, আর তা পাঠকদের জন্যে দেয় এক নতুন আসক্তি।

পেটের মধ্যে মুদৃ গর্জন আমার দিবাস্বপ্ন ভেঙ্গে দিল এবং চমকে উঠে দেখলাম মশলা মাখা সামুদ্রিক খাবারের গন্ধ আমার দিকে আকর্ষণীয়ভাবে তেড়ে আসছে। আমার মনে হয়েছিল যে আমি অনেক দিন খাই নি। জানালা দিয়ে দেখলাম পরিবেশিকাকে, মনে হয় রান্নাঘরের দরজার কাছে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে। সে একটা বই পড়তে মগ্ন ছিল কিন্তু আমার চোখ তার উপরে পড়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে যেন ষষ্ঠ কোন ইন্দ্রিয় দিয়ে টের পেয়ে সে আমার দিকে ফিরল। সবজান্তার মতো হেসে সে আমার টেবিলের কাছে আসল।

“ক্ষুধার্ত?”

“অবশ্যই, হ্যাঁ! তোমার কাছে কোন খাবার তালিকা (মেন্যু) আছে?”

“এখানে নেই। কিন্তু আমি তোমাকে বলতে পারবো আজকে টাটকা কি তৈরি হচ্ছে।“

“দারুন।“ আমি ভাবলাম নিজে নিজে আর হেসে তার দিকে তাকালাম, তার দেয়া খাবারের বর্ণনা শোনার জন্য।

গল্প এমন সহজভাবে শুরু হয়েছে। এই দুই লেখক, যারা প্রতি সপ্তাহের পালাক্রমে লিখছেন, এখান থেকে শুরু করেছেন। আমরা অধ্যাপক ইউসুফের ভূতপূর্ব ছাত্রী ইয়াসমিনার ব্যাপারে জানতে পারি যে সি ব্রিজ ক্যাফের পরিবেশিকা হিসেবে কাজ করছিল আর রাঁধুনি ইয়াজান সম্পর্কে। এরা সবাই টার্তুসের অপূর্ব সমুদ্র তীরের আবহাওয়াতে আর আবু ফারেস ও মারিয়ার অপূর্ব লেখায় উজ্জ্বলভাবে ধরা দিয়েছে।

ইয়াসমিনা যখন নিজের পরিচয় দিচ্ছিল আমার চোখ তখন চলে যায় আর এক মহিলার দিকে। নরম হাতে সে গরম একটা ছোট মাছ লেজের দিক থেকে ধরে, সেটাকে সসের মধ্যে ডুবিয়ে, ঠোঁটের কাছে এনে ফু দিয়ে ঠাণ্ডা করল, আর তার পরে পুরোটুকু গিলে ফেলল। মাথা, কাঁটা আর লেজসহ – আসল ভোজন রসিকের মতো। এর পর চোখ বন্ধ করে সে নিজের সুখের সাগরে ভেসে ছিল। তারপরে… তারপরে তার অন্য হাত দিয়ে, সে তার মুখের সামনে আলগা হওয়া এক গুচ্ছ চুল টেনে দিল আর কানের পিছনে সেটাকে গুঁজে দিল। সে যেভাবে তার চুল টানল তাতেই আমি কুপোকাত।

আমরা এখন ১৬তম পরিচ্ছদ পড়ছি। আপনারা কিন্তু প্রথম থেকে পড়তে ভুলবেন না

Exit mobile version