সার্বিয়া: সংস্কৃতি পরিক্রমা

এখানে ব্লগোস্ফিয়ার থেকে উল্লোখযোগ্য কিছু লেখা তুলে ধরা হচ্ছে সার্বিয়ান সাহিত্য, স্থাপত্য, চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, ভুজুয়াল আর্টস এবং রসনা সম্পর্কে। উপভোগ করুন!

সাহিত্য

সেমানারিও সার্বিও লিখছেন [স্প্যানিশ ভাষায়] দেজান মেদাকোভিচ নান্মী লেখক এবং ইতিহাসবিদের সাম্প্রতিক মৃত্যু সম্পর্কে। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত সার্বিয়ান একাডেমী অফ সায়েন্স এন্ড আর্টস এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। একটি প্রকাশনা সংস্থার পরিচালক জোরান কলুন্দিজাকে উদ্ধৃত করে এই ব্লগার সার্বিয়ান সংস্কৃতিতে মেদাকোভিচের অবদানের কথা স্মরণ করছেন:

আমরা তার লেখা পড়তে পারি আমাদের যে কোন সাধারণ সমস্যার সমাধান পাবার জন্যে। তার দীর্ঘ এবং সফল জীবনে মেদাকোভিচ আমাদের শিখিয়েছেন যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিষ হচ্ছে পাঠকদের নিকট এবং তাদের সংস্কৃতির নিকট বিশ্বস্ত থাকা এবং এটি পৃথিবীর সাথে যোগসূত্র স্থাপন করায়।

স্থাপত্য

ডিমিস্টিফাইং সার্বিয়ান ডিজাইন ব্লগের সান্দ্রা দ্রাস্কোভিচ “বোটহাউজ” নামক প্রতিযোগীতার ফলাফল সম্পর্কে সবাইকে জানাচ্ছে যা গত রোববার বেলগ্রেডের অনুষ্ষ্ঠিত স্থাপত্য সপ্তাহে ঘোষিত হয়।  এই প্রতিযোগিতা উন্মুক্ত ছিল স্থাপত্যবিদ এবং এই কলার ছাত্রদের মধ্যে যাদের বয়স ৩৫ এর নীচে এবং এর লক্ষ্য ছিল দানিউব এবং সাভা নদীর পাড়ের ভাসমান বাণিজ্যিক ভবনগুলোকে “একটি উন্নয়নশীল মডেল দেয়া, কার্যকরী প্রয়োগ এবং দৃশ্যমান পরিচয় দেয়া”। দ্রাস্কোভিচ এ ছাড়া বিজয়ী প্রকল্পগুলোর কিছু ছবিও পোষ্ট করেছে, যেমন নীচেরটি:


(ছবি: স্টুডিও পলিগন)

নাথিং এগেইনস্ট সার্বিয়া একটি লেখায় নতুন বেলগ্রেডের ব্লকভি অঞ্চলের এপার্টমেন্ট ব্লকের ছবি দিয়েছে যা ১৯৪৮ সালে তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক সরকার কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। এই বাসস্থানগুলো যা প্রায় এক লাখ “আর্থ-সামাজিক ভাবে মিশ্রিত লোকের আবাসস্থল”। ব্লকভির অনেক বাসিন্দা সরকারের সোশ্যাল ফান্ডের সেবার আওতায় এই বাসায় থাকতে পারছেন। এই বিল্ডিংগুলো বহুবার সার্বিয়ান চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে এবং ১৯৭৩-৭৪ সালে ব্লক ৪৫ এবং ৭০ এ অবস্থানরত বুদ্ধিজীবিদের উপর নির্মিত ডকুমেন্টারীতে বিশেষ ভাবে দেখানো হয়েছে।

এই ব্লগার শেষ করছেন এই বলে:

যদিও এই ব্লকগুলোর মধ্যে ধুসরতা এবং বিষাদের ছায়া আছে (যেমনটি বিভিন্ন ছবিতে দেখানো হয়েছে) আদতে এগুলো বেশ বন্ধুবৎসল ও অন্যরকম।

(ছবি তুলেছেন এলিয়া ভারেলা সেরা)

সঙ্গীত

পরের এক পোস্টে নাথিং এগেইনস্ট সার্বিয়া এই ব্লকগুলো দ্বারা অনুপ্রাণিত সঙ্গীত শিল্পীদের উদাহরণ দিচ্ছেন:

নব্বুইয়ের দশক থেকে আজ পর্যন্ত বেলগ্রেডের হিপহপ সঙ্গীত এই বিল্ডিংগুলো থেকে প্রেরণা পায় এবং এখানে এই সঙ্গীতের ভিডিওগুলো শুট করা যেন একটি নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। (যেমন দেখুন ‘স্টুকা ফিট দেমিয়ান -১০০১ প্লান‘)।

আরেকজন ড়্যাপ আর্টিস্ট তার নাম এই ব্লকগুলো থেকে নিয়েছেন (ব্লকোভস্কি) এবং তার রেকর্ড লেবেল (চার্সকি রেজ) সেখান থেকে প্রকাশ করেছেন। তার সম্পূর্ণ ইমেজ নিউ বেলগ্রেডের এই বিল্ডিং ব্লককে ঘিরে তৈরি।

১৯৯০ এর দশকের সার্বিয়ান সঙ্গীতের কথা বলতে গিয়ে বলকান ফাইল ব্লগ একটি মিউজিক ভিডিও তুলে ধরেছেন যাতে ১৯৯৫ সালে বীট স্ট্রীট নামে একটি বয় ব্যান্ডের গান আছে। তিনি বলেছেন ভাল লাগছে দেখে যে “নব্বুইয়ের দশকের ব্রিটিশ এবং সার্বিয়ান পপ তারকারা একই ধরনের বিরক্তিকর নাচের মূদ্রা দেখাত”।

চলচ্চিত্র

নতুন সম্মিলিত ব্লগ বলগান ক্রুর প্রথম পোস্টে স্রোদান গলুবভিচের ‘আপসলুটনি স্টো’ নামক চলচ্চিত্রটির রিভিউ প্রকাশ হয়েছে। এই রিভিউতে উপরে বর্ণিত ব্লকভি বিল্ডিংগুলো উঠে এসেছে যেখানে বেশ কিছু অংশ ধারণ করা হয়েছিল। এ ছাড়াও দানিউব নদীর পারের ডিস্কো রেস্টুরেন্টগুলোর কথাও এসেছে। 

তাদের সাম্প্রতিক আরেকটি পোস্টে জেদরাকো সোত্রার জোনা জামফিরোভা নামক সার্বিয়ান চলচ্চিত্রটির রিভিউ প্রকাশ হয়েছে। এর পটভূমি ঊনবিংশ শতাব্দীতে দক্ষিণের নীস শহরে রচিত। এই রিভিউতে পরিচালক চলচ্চিত্রটির সফলতার কথা বলছেন:

গত দশ বছর ধরে আমাদের চলচ্চিত্র সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর উপর আলোকপাত করেছে, আমাদের দু:খের দিনগুলোর কথা, যুদ্ধ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কথা। দর্শকরা ঐ ধরণের পর্যাপ্ত ছবি দেখেছেন। “জোনা” একটি প্রেমময় হাস্যরসের ছবি এবং এতে কোন খারাপ কথা নেই, কোন অপ্রীতিকর ছবি নেই, একটি প্রেমকাহিনী এবং কিছূ মেলোড্রামা। হয়ত লোকজন একটু স্বাভাবিকতা চেয়েছে এই সব বাজে ঘটনার পর যা গতানুগতিক সহিংসতাপূর্ণ চলচ্চিত্রে উঠে আসে।

ভিজুয়াল আর্টস

ডিয়ারিয়া দো উনা সার্বিয়া [স্প্যানিশ ভাষায়] তার পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে মিলেনা পাভলোভিচ বারিল্লি নাম্নী একজন সার্বিয়ান চিত্রশিল্পী এবং কবির সাথে যিনি ১৯০৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। তিনি বলছেন যে বারিল্লির চিত্রকলার স্টাইল অনুধাবণ করা কষ্টকর:

তার কাজে আমরা একই সাথে মডার্নিজম (আধুনিকতা) ও রিয়ালিজম (বাস্তবতা) এর সহাবস্থান দেখতে পাই এবং তার পোর্ট্রেট এবং ফুলের ছবিগুলোতে ইতিহাসের ছায়া দেখা যায়। তার পোর্ট্রেট এবং এবং স্যুট পরিহিত মহিলাদের কম্পোজিশনের কাজে জাদুবাস্তবতা কিংবা কাব্যিক বাস্তবতার ছোঁয়া দেখা যায়। এছাড়াও সাররিয়ালিজম (পরাবাস্তবতা) এর উপস্থিতিও দেখা যায় যা বিভিন্ন জিনিষের মধ্যে একটি সম্পর্ক তৈরি করে যা ভৌতিক একটি রহস্যময় কাব্য এবং উদ্বেগ বিকিরণ করে ছবিগুলোতে বিশেষ করে মুর্তি, লোহার চেয়ার, ফ্যান, হাতমোজা, রাতের পাখী, মেয়ে, চিঠিপত্র, গাউন পরিহিত অভিনেত্রী ইত্যাদি  ব্যবহার করার ফলে॥

রসনা বিলাস

এই পরিক্রমার শেষভাগে আমরা একটি মজার বিষয় উপস্থাপন করছি। আমরা আপনাদের অনুরোধ করতে পারি টুলুম্বার রেসিপিটি পরখ করে দেখতে, যা মারিয়া পেত্রোভিচ তার ব্লগ পালাশিন্কাতে দিয়েছে। তিনি একে বলকান অঞ্চলের সর্বাধিক লোকপ্রিয় একটি খাবার হিসেবে অভিহিত করছেন। অটোমান সাম্রাজ্য এটিকে এই অঞ্চলে  প্রথম নিয়ে আসে। নীচের ছবিটি দেখে বলুন আপনি চেখে দেখতে আগ্রহী কি না!

(ছবি মারিয়া পেত্রোভিচ)

Exit mobile version