জ্যামাইকায় গভীর-সমুদ্রে খনিজ আহরণের আলোচনা শেষে ক্যারিবীয় শিল্প প্রদর্শনী সমুদ্রের বিপন্ন সৌন্দর্যকে দৃশ্যমান করেছে

গভীর [সমুদ্র]কে রক্ষা করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা [দেখার] একটি সুযোগ

টেকসই মহাসাগরীয় জোটের ক্যারিবীয় সদস্যবৃন্দ (বাম থেকে ডানে): রবিন ইয়াং (জ্যামাইকা), মনিক ক্যাল্ডেরন (সেন্ট লুসিয়া), কাইল ফস্টার (বার্বাডোস), কিরপা গ্রেওয়াল (গ্রেনাডা) এবং আলেকজান্ডার বার্কলে (ত্রিনিদাদ ও টোবাগো)। গভীর সমুদ্রে খনিজ আহরণের ঝুঁকি ব্যাখ্যা করে তাদের জীবন্ত ফুটিয়ে তুলতে সংগঠনটি আঞ্চলিক শিল্প প্রদর্শনীর মঞ্চে অন্য একটি শিল্প গোষ্ঠীর সাথে অংশীদারিত্ব করেছে। এমা লুইসের তোলা ছবি, অনুমতিসহ ব্যবহৃত।

পর্ষদ ও আন্তর্জাতিক সমুদ্রতল কর্তৃপক্ষের (আইএসএ) সংসদের মধ্যে জাতিসংঘের সংস্থাটির সদর দপ্তর কিংস্টনের শহরতলীর জ্যামাইকা সম্মেলন কেন্দ্রে মাঝে মাঝে উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠা আলোচনা চলাকালে একটি প্রাণবন্ত শিল্প প্রদর্শনী আলোচনার বিষয়বস্তু: গভীর-সমুদ্র খনন, গভীর সমুদ্রের বেশিরভাগ অনাবিষ্কৃত গভীরতা ও এটি যে হুমকির সম্মুখীন তাকে জীবন্ত ফুটিয়ে তুলেছে।

ত্রিনিদাদ ও টোবাগো-ভিত্তিক ইকোভিবজ পরিবেশগত সৃজনশীলতা আরেকটি যুব-নেতৃত্বাধীন সংস্থা মুক্ত সমাজ ফাউন্ডেশন অর্থায়িত ক্যারিবীয় টেকসই মহাসাগরীয় জোটের (এসওএ) অংশীদারিত্বে “সমুদ্রের গভীরতা উন্মোচন: অতল সংরক্ষণ” এর আয়োজন করে। প্রদর্শনীটি গ্রহের শেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ বনভূমি (এবং কার্বন বেসিন) অবশ্যই সুরক্ষিত ও সংরক্ষণ করা উচিত এমন একটি বার্তা পাঠিয়ে গভীর সমুদ্রের বিস্ময় উদযাপন করেছে।

প্রদর্শনীটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি আদিবাসী প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসীদের সাথে অংশীদারিত্বে জ্যামাইকার নিরলস তরুণদের জোটের কাজের পরিপূরক। এই “গভীর-সমুদ্র চিন্তাবিদরা” ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধের জন্যে প্রচারণার পাশাপাশি জ্যামাইকার প্রচলিত ও সামাজিক গণমাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। তারা সম্মেলন কেন্দ্রের বিপরীতে কিংস্টনের শহরতলীর গরম, বাতাসযুক্ত ওয়াটারফ্রন্টেও বিক্ষোভ করেছে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসীরাও সম্মেলন কেন্দ্রের দেয়ালের ভিতরে ও বাইরে বিতর্কে তাদের অনন্য অবদান রেখেছে।

আইএসএ-তে দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর আলোচনা ও প্রচারণাটি অবশেষে প্রচারকারীদের জন্যে একটি আংশিক বিজয়ের সাথে সাথে সমাপ্ত হয়: স্থগিতাদেশের আহ্বান জানানো ক্রমবর্ধমান সংখ্যক দেশ ও পরিবেশবাদী কর্মীদের একটি ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে আইএসএ গভীর সমুদ্রে খননের নিয়ম মানতে অথবা গ্রহণ করতে পারেনি। তবে ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় প্রতিনিধিরা ক্লান্ত হয়ে তাদের হোটেলে ফিরে গেলে গভীর সমুদ্রে খননের সম্ভাব্য থেমে যাওয়ার বিষয়টিকে আলোচ্যসুচিতে দৃঢ়ভাবে রাখার প্রচেষ্টা চীন ও নাউরুর জন্যে বাধাগ্রস্ত হয়

আমি নিউ কিংস্টনের একটি হোটেলে শিল্প আইএসএ প্রতিনিধি ও কর্মীদের একটি বিশাল দর্শকের সাথে প্রদর্শনীর উদ্বোধনে অংশ নিয়েছি। আমি কয়েকজন শিল্পী ও সন্ধ্যার কার্যক্রমের সাথে জড়িত অন্যান্যদের সাথে কথাবার্তা বলেছি।

জ্যামাইকার শিল্পী দানারি গ্রিভসের ‘মহাসাগরের রহস্য।’ তার কাজের মধ্যে রয়েছে পাটি বুনন, সুঁই-সুতার বুনন, কুণ্ডলিকরণ, কাপড়ের ব্যবহার, সিকে বানানো এবং প্লাস্টিকের কাজ। এমা লুইসের তোলা ছবি, অনুমতিসহ ব্যবহৃত।

জ্যামাইকার বয়ন ও তন্তু শিল্পী দানারি গ্রিভস তার কাজ ব্যাখ্যা করেছেন:

আমি সমুদ্র – বিশেষ করে প্রবাল ও সামুদ্রিক জীবন সম্পর্কিত শিল্পকর্মে বিশেষজ্ঞ। এটি একটি আশ্চর্যজনক জায়গা বলে আমি আমার মতো করে সৌন্দর্য দেখাতে পছন্দ করি। কিন্তু আমার কাজের মধ্যে লুকানো বার্তা রয়েছে, তাই আপনি প্রচুর প্লাস্টিক ও বিভিন্ন ধরনের পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণ দেখতে পাবেন। নীলগুলি সমুদ্রের প্রাণবন্ত জীবনের প্রতিনিধিত্ব করলেও সেখানে বাদামী ও সাদা রয়েছে – বর্ণহীন লো সাদা। আমার বার্তা হলো আমাদের মহাসাগরে প্লাস্টিকের পরিমাণ সম্পর্কে কিছু করা [আমাদের দরকার] এবং আমার কাছে সমুদ্রে তেল ছড়িয়ে পড়ার বার্তাও রয়েছে।

বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়ন নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক পরিবেশ ও জলবায়ু কর্মী জ্যামাইকার মারিও গালবার্ট পর্যবেক্ষণ করেছেন:

আমি মনে করি প্রদর্শনীটি তরুণদের জন্যে আমরা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কী নিয়ে কথা বলছি তা দেখার এবং সমুদ্রের নীচে কী আছে, গভীরতা রক্ষা করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষণিকের জন্যে তা বাস্তবে দেখানোর একটি সুযোগ। এখন মানুষের এটা দেখে এর সাথে যুক্ত হওয়া এবং আরো গবেষণা করা দরকার।

জ্যামাইকার শিল্পী অ্যামোয় স্মিথের ‘সমুদ্রজাত’ ও ‘খোলক’-এর খুঁটিনাটি। এমা লুইসের তোলা ছবি, অনুমতিসহ ব্যবহৃত।

প্রদর্শনীটিতে কাজ প্রদর্শন করা অ্যামোয় স্মিথ বলেছেন:

আমি মনে করি এই প্রদর্শনী জ্যামাইকাবাসীদের চোখ খুলে দেবে। আমি মনে করি না অনেক জ্যামাইকাবাসী গভীর সমুদ্রের খনন সম্পর্কে সচেতন বা সমুদ্রের জন্যে এর মানে কী তা পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারে। এই ক্রমবর্ধমান উদ্বেগকে তুলে ধরতে অন্য শিল্পীদের সাথে এখানে থাকতে পারাটা সত্যিই সম্মানের। এই প্রদর্শনীতে আমার দুটি কাজ রয়েছে। ‘সমুদ্রজাত’ বছরের পর বছর ধরে সমুদ্রের পরিবর্তন, বিশেষ করে দূষণকে তুলে ধরে। ‘খোলক’ প্রবাল প্রাচীর ও সমুদ্রের খোলকদের সমস্যা ও সময়ের সাথে সাথে এটি কীভাবে পরিবর্তিত হবে তা তুলে ধরে।

আলোচনাটিতে একজন প্রদর্শনী সংগঠক ও পর্যবেক্ষক ক্যারিবীয় টেকসই মহাসাগর জোটের খাদিজা স্মিথ তার চিন্তাভাবনা ভাগাভাগি করেছেন:

একেবারেই জাদুকরী একটি স্থান গভীর মহাসাগরে ধীর গতির, আলোকিত প্রজাতি, প্রাচীন প্রবাল, অনন্য জীব এবং এর অবিশ্বাস্য ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে এটি আমাদের বাস্তবতা ও দৈনন্দিন জীবন থেকে অনেক দূরের কিছু হওয়ায় শিল্পের মাধ্যমে এই প্রদর্শনীটির লক্ষ্য ছিল গভীর সমুদ্রকে প্রাণবন্ত করে প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, বেসরকারি সংস্থা, সরকার ও আরো অনেক কিছুকে যুক্ত করা যাতে তারা বুঝতে পারে মূল্যবান এই পৃথিবী রক্ষা করা দরকার এবং কেন আমাদের গভীরকে রক্ষা করতে গভীর সমুদ্রে খনন বন্ধ করতে হবে।

বামে: পেরুর শিল্পী জোসে পুমার একটি কাজ। ডানে: প্রদর্শনীতে ছবি আঁকতে অনুপ্রাণিত এগারো বছর বয়সী এমা কিং। এমা লুইসের তোলা ছবি, অনুমতিসহ ব্যবহৃত।

প্রদর্শনীটির উদ্বোধনে সবচেয়ে কম বয়সী শিল্পী ১১ বছর বয়সী এমা কিং নিজের ছবি আঁকা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। সে আমাকে সত্যিই ভার্চুয়াল বাস্তবতা কার্যকলাপ উপভোগের কথা জানিয়ে আরো বলেছে:

আমি শিল্প অনেক ভালোবাসি — এটা খুব হৃদয়গ্রাহী।

Exit mobile version