সরকারি বাধা সত্ত্বেও কম্বোডিয়ার হাজারো মানুষ ভুমি, বিচার এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে মিছিল করেছে

The group in Kampong Speu reached the provincial capital Chbar Morn. The issue of land rights is a major political demand in Cambodia. Photo from Licadho, a human rights group.

কামপং স্পিউয়ের একদল প্রতিবাদকারী প্রাদেশিক রাজধানী চবার মর্নে পৌঁছেছেন। কম্বোডিয়ার রাজনৈতিক দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ভুমি অধিকার প্রতিষ্ঠা। মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠান লিকাধো থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে কম্বোডিয়ার হাজার হাজার মানুষ মিছিল করে রাজধানী শহর নম পেনে জড়ো হয়েছেন। মিছিলকারীরা অবশ্য কিছু কিছু প্রদেশে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সরকার আগে থেকেই নম পেনে সব ধরনের মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তবে মিছিলটি সারাদেশের মানুষের মনোযোগের পাশাপাশি সমর্থনও কুড়িয়েছে।

৬ ডিসেম্বর থেকে দেশটির ১২টি প্রদেশে প্রতিবাদ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলের থিম ছিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে সবার জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। তবে মিছিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল পাঁচটি দাবি সম্বলিত একটি পিটিশন সরকারের কাছে পেশ করা:

- For resolutions to land conflicts;
– Reform of the judicial system and the release of human rights defenders and activists;
– A raise in the minimum wage and respect for labor rights;
– An end to state-sponsored violence; and
– Respect for freedom of expression, association and peaceful assembly.

-ভুমি দ্বন্দ্বের সমাধান
-বিচার ব্যবস্থার সংস্কার এবং সকল মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তি
-ন্যূনতম মজুরি এবং শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠা
-রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ
-শান্তিপূর্ণ মিছিল-সমাবেশ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভুমি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে হাজার হাজার কৃষক, আদিবাসী মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছেন। এদের বাস্তুচ্যুত হওয়ার পিছনের মূল কারণ হলো বিভিন্ন উন্নয়নমুখী প্রকল্পের জন্য ভুমি অধিগ্রহণ। সরকার বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ঘরবাড়ি থেকে তাদের উচ্ছেদ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। উচ্ছেদের শিকার হওয়ার মানুষের পাশাপাশি কৃষকরাও রাজধানীমুখী মিছিলে যোগ দিয়েছেন।

ইতোমধ্যে দেশটির শ্রমিকরাও শ্রম পরিবেশের উন্নয়ন এবং ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছে। গত বছর দেশটির গার্মেন্টস কর্মীরা মাসিক ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ধর্মঘট পালন করে। উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কম্বোডিয়াতেই সবচে কম মজুরি দেয়া হয়।

কম্বোডিয়ার বর্তমান ক্ষমতাসীন দল গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং সমালোচনাকারীদের নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে। তাই চলতি বছর প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে মানবাধিকার দিবস পালন রাজনৈতিকভাবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানীর ফ্রিডম পার্কে সমাবেশ নিষিদ্ধ করা এটাই নির্দেশ করে দেশটিতে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নানা ধরনের প্রতিকুলতা সত্ত্বেও ভুমি, বিচার এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে মিছিল শুরু হয়। দেশটির বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা তৃণমূল মানুষেরা তাদের অধিকার আদায়ের দাবি জানিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উদযাপন করেন। মিছিলের কিছু ছবি রইলো নিচে:

মিছিলকারীরা সামরং টং জেলার ট্রপিয়াংকুন প্যাগোডায় রাত্রিযাপন করেন। মিছিল করে রাজধানী নম পেনে পৌঁছানোই তাদের লক্ষ্য। মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠান লিকাধোর সৌজন্যে ছবিটি পাওয়া।

মিছিলকারী এই দলটি কহ কং রাজ্য সরকারের কাছে দুটি দাবি পেশ করে। একটি হলো মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানো এবং অন্যটি তিন পরিবেশ আন্দোলনকর্মীকে মুক্তি। ওই পরিবেশ আন্দোলনকর্মীরা আরেং ভ্যালিতে প্রস্তাবিত জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করেছিলেন। মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠান লিকাধোর সৌজন্যে ছবিটি পাওয়া।

কহ কং প্রদেশের তৃণমূল মানুষেরা মিছিল করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উদযাপন করছে। তাদের মিছিলের থিম ছিল ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা।

বানতেই মিনচেইর প্রায় ৬০০ জন মানুষ ট্রাক্টর এবং টুক টুক নিয়ে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। তারা মিছিল নিয়ে পইপেট থেকে বানতেই মিনচেইর প্রাদেশিক সরকারের অফিসে গিয়েছিলেন। মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠান লিকাধোর সৌজন্যে ছবিটি পাওয়া।

মিছিলকারীরা টুক টুকে করে বাটামবাংয়ের ড্রাগন স্কোয়ারে পৌঁছায়। মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে সেখানে একটি আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। রিদান সানের ফেসবুক পেইজ থেকে ছবিটি নেয়া হয়েছে।

মিছিলকারীদের দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ এবং তাদের প্রতি শুভকামনা জানাতে কামপং ছনাংয়ে প্রায় ৭০০ জন মানুষ পুতুল হাতে জড়ো হয়েছিলেন। মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠান লিকাধোর সৌজন্যে ছবিটি পাওয়া।

Exit mobile version